রায়হান হত্যা : স্বীকারোক্তি দেননি এসআই আকবর
সিলেটের আলোচিত রায়হান হত্যামামলায় প্রধান আসামি বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) আকবর হোসেন ভুঁইয়াকে রিমান্ড শেষে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মামলার তদন্তকারী সংস্থা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) আজ মঙ্গলবার দুপুরে আকবরকে সিলেট চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে হাজির করে। পরে বিচারক আবুল কাশেম তাঁকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন।
পরে পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার (এসপি) মুহাম্মদ খালেদ-উজ-জামান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আকবর হোসেন ভুঁইয়াকে সাত দিনের রিমান্ড শেষে আদালতে হাজির করলে আদালত তাঁকে জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন। তিনি ১৬৪ ধারায় হত্যার ব্যাপারে কোনো স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেননি। আকবর হোসেন ভুঁইয়ার জন্য নতুন করে রিমান্ডের আবেদন করা হয়নি।’
গত ৯ নভেম্বর সিলেটের কানাইঘাট সীমান্ত এলাকা থেকে আকবরকে গ্রেপ্তার করা হয়। পরের দিন তাঁর সাত দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
সিলেট নগরীর আখালিয়া এলাকার নেহারীপাড়ার মৃত রফিকুল ইসলামের ছেলে রায়হান উদ্দিন আহমদকে (৩৩) গত ১০ অক্টোবর রাতে বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়িতে নির্যাতন করে হত্যা করা হয় বলে পুলিশের তদন্তেই বেরিয়ে এসেছে। পরের দিন ১১ অক্টোবর সকালে তাঁর লাশ পায় পরিবার। পরে ওই দিন রাতে নিহত রায়হানের স্ত্রী বাদী হয়ে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। স্বজনদের অভিযোগ, ১০ হাজার টাকা না পেয়ে রায়হানকে পুলিশ হেফাজতে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে।
এ ঘটনার পর ১২ অক্টোবর বন্দর বাজার পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত কর্মকর্তা এসআই আকবর হোসেন ভূঁইয়া, এসআই টিটু চন্দ্র দাস, কনস্টেবল হারুনুর রশিদ ও তৌহিদ মিয়াকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। এ ছাড়া প্রত্যাহার করা হয় সহকারী উপপরিদর্শক (এএসআই) আশেক এলাহী, এএসআই কুতুব আলী ও কনস্টেবল সজিব হোসেনকে। পরে ২১ অক্টোবর মামলার আলামত নষ্টের অভিযোগে এসআই হাসানকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।
গত ১২ অক্টোবর পর্যন্ত আকবর পুলিশের নজরদারিতে ছিলেন। এরপর থেকে তাঁর কোনো খোঁজ পায়নি আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তিনি যাতে পালিয়ে ভারতে চলে যেতে না পারেন- এজন্য সিলেট জেলার সীমান্তবর্তী সব থানা এলাকায় সতর্কতা জারি করা হয় বলে গণমাধ্যমকে জানিয়েছিলেন সিলেট জেলার পুলিশ সুপার ফরিদ উদ্দিন।
এদিকে গ্রেপ্তার হওয়ার পর আকবর দাবি করেছিলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার পরামর্শ পাওয়ার পর সিলেটের ভোলাগঞ্জ সীমান্ত ও মেঘালয়ের মাঝেরগাঁও এলাকা দিয়ে ভারতে পালিয়ে যান তিনি। প্রথমে শিলং হয়ে আসামের শিলচরে অবস্থান করেন। ৯ নভেম্বর কানাইঘাট উপজেলার ডোনা সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে আসার পথে সীমান্ত এলাকায় লকডাউন থাকায় ভারতের খাসিয়ারা আটক করে। এরপর তারা তাঁকে বাংলাদেশের খাসিয়াদের কাছে হস্তান্তর করে।