রোগীর পেটে কাঁচি, মেহেরপুরের চিকিৎসক রাজা জেল হাজতে
বাচেনা খাতুন নামের এক রোগির পেটে কাঁচি রাখার অভিযোগে মেহেরপুরের এক চিকিৎসককে জেল হাজতে পাঠিয়েছেন আদালত। ওই চিকিৎসকের নাম পারভিয়াস হোসেন রাজা। তিনি গাংনীর রাজা ক্লিনিকের স্বত্বাধিকারী। আজ রোববার দুপুরে মেহেরপুর সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক তারিক হাসান ডা. রাজার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠান।
জানা গেছে, ২০০২ সালে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার হাপানিয়া গ্রামের গৃহবধু বাচেনা খাতুন পিত্তথলির অপারেশন করেন চিকিৎসক মিজানুর রহমান। তাঁর সহকারী হিসেবে ছিলেন ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা ও অ্যানেস্থেশিয়া দেন ডা. তাপস কুমার।
অপারেশনের এক সপ্তাহ পর বাচেনা খাতুনকে প্রেসক্রিপশন দিয়ে ছাড়পত্র দেওয়া হয়। কিন্তু পেটে ব্যথা ভাল না হওয়া ২০ বছর যাবত ঘুরেছেন বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিকে।
অবশেষে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক্সরে করানোর সময় বাচেনা খাতুনের পেটে কাঁচির অস্তিস্ত পাওয়া যায়।
বিষয়টি জানাজানি হলে ডা. রাজা বাচেনাকে চুয়াডাঙ্গা সরকারি হাসপাতালে অপারেশন করান। বের করা হয় ২০ বছর আগের কাঁচি।
এ ঘটনায় সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তারিক হাসান স্বপ্রণোদিত হয়ে একটি মামলা করেন ও মেহেরপুরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) অপু সারোয়ারকে ঘটনা তদন্ত করার নির্দেশ দেন। একইসঙ্গে ঘটনা তদন্তে সিভিল সার্জন ডা. জওয়াহেরুল আনাম সিদ্দিকীকে সার্বিক সহযোগিতা করার জন্য বলা হয়।
অন্যদিকে, মেহেরপুর জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনা তদন্তে গত ৫ জানুয়ারি গাংনী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা মো. আশরাফুজ্জামান লিটনকে প্রধান ও মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালের জুনিয়র কনসালটেন্ট সার্জারি মো. ফজলুর রহমান, মেহেরপুর সিভিল সার্জন কার্যালয়ের চিকিৎসক ফয়সাল হারুনকে সদস্য করে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
ওই কমিটি চিকিৎসক মিজানুর রহমানকে প্রধান আসামি করে প্রতিবেদন জমা দেন। অন্যান্য আসামিরা হলেন—অ্যানেস্থেশিয়া ডা. তাপস কুমার ও ডা. পারভিয়াস হোসেন রাজা।
আজ রোববার দুপুরে অভিযুক্তরা আদালতে জামিন নিতে গেলে আদালত ডা. মিজানুর রহমান ও ডা. তাপস কুমারকে জামিন প্রদান করলেও ডা. রাজার জামিন না মঞ্জুর করে জেল হাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।