রোজিনাকে মুক্তি দিয়ে দোষীদের বিচার করুন
প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে অবিলম্বে মুক্তি দিয়ে তাঁকে সচিবালয়ে যারা হেনস্থা করেছে তাদের বিচার দাবি করেছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন-বিএফইউজে ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়ন-ডিইউজের নেতারা।
আজ বুধবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে বিএফইউজে ও ডিইউজে আয়োজিত মানববন্ধনে নেতারা এই দাবি করেন।
ডিইউজের সভাপতি কাদের গনি চৌধুরীর সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন বিএফইউজে ও জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি শওকত মাহমুদ, বিএফইউজের মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন, সাবেক মহাসচিব এম এ আজিজ, সাবেক সভাপতি কবি আবদুল হাই শিকদার, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ইলিয়াস খান, ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম, সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাকের হোসাইন, জাহাঙ্গীর আলম প্রধান, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আবদাল আহমেদ, ইআরএফ সভাপতি শারমিন রিনভী, বিএফইউজের সহসভাপতি মোদাব্বের হোসেন, ডিইউজের সহসভাপতি শাহীন হাসনাত ও রাশেদুল হক, সাংবাদিক নেতা আমীরুল ইসলাম কাগজী, ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির সাবেক সভাপতি রফিকুল ইসলাম আজাদ, বাংলাদেশ ফটো জার্নালিস্ট অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি গোলাম মোস্তফা, সাব-এডিটর কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক আবুল হাসান হৃদয়, কারানির্যাতিত ফটোসাংবদিক শফিকুল ইসলাম কাজল, ডিইউজের দপ্তর সম্পাদক ডি এম আমিরুল ইসলাম অমর, সাংবাদিক নেতা সাখাওয়াত হোসেন ইবনে মঈন চৌধুরী। মানববন্ধনে সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য দেন প্রকৌশলী ইশরাক হোসেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন এনটিভির পরিচালক আলহাজ নূরুদ্দীন আহমেদ, বিএফইউজের কোষাধ্যক্ষ খায়রুল বাশার, সাংগঠনিক সম্পাদক খুরশীদ আলম, দপ্তর সম্পাদক তোফায়েল হোসেন, নির্বাহী সদস্য আব্দুস সেলিম, এ কে এম মহসীন, জাকির হোসেন, ডিইউজের সাবেক সহসভাপতি সৈয়দ আলী আসফার, ডিইউজের নির্বাহী সদস্য জেসমিন জুঁই প্রমুখ। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন ডিইউজের কোষাধ্যক্ষ গাজী আনোযারুল হক।
সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে আটকে রেখে হেনস্তা ও নির্যাতনের ঘটনা সরকারের সর্বোচ্চ পর্যায়ে অবহিত ছিল অভিযোগ করে শওকত মাহমুদ বলেন, এ সরকার মুক্তসাংবাদিকতার বিরুদ্ধে। এ সরকার দুর্নীতিবাজদের পক্ষে। সুস্থ সাংবাদিকতা পুনরুদ্ধার এবং গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, এর আগে সাগর-রুনি হত্যা মামলা বিচারের দাবিতে সাংবাদিকদের আন্দোলন কারো কারো বেইমানির কারণে নস্যাৎ হয়ে গিয়েছিল।
রোজিনা ইসলাম দুর্নীতিরবিরোধী অনুসন্ধানী সাংবাদিকতার বংশীবাদক এমন মন্তব্য করে শওকত মাহমুদ বলেন, রোজিনা ইসলাম সরকারের অনেক দুর্নীতি উন্মোচন করেছেন। এজন্য তাঁর ওপর সরকারের ক্ষোভ ছিল। তাঁর কণ্ঠরোধ করার জন্যই তাঁকে আটকে রেখে নির্যাতন করা হয়েছে এবং জামিন না দিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তিনি অবিলম্বে রোজিনা ইসলামকে মুক্তি দিয়ে তাঁকে হেনস্থাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়ার দাবি জানান।
সভাপতির বক্তব্যে কাদের গনি চৌধুরী বলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে রোজিনা ইসলাম ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীসহ কারাবন্দি সব সাংবাদিকের মুক্তি দিন। তিনি বলেন, সাংবাদিকরা তথ্য চুরি করে না। তথ্য উদ্ধার করে। তথ্য লুকিয়ে রাখে দুর্নীতিবাজ ও লুটেরারা। মুক্তসাংবাদিকতা এখন জেলের খাঁচায় বন্দি। সাংবাদিকতায় এমন খারাপ সময় আর দেখিনি উল্লেখ করে সাংবাদিকদের এ নেতা বলেন, মিডনাইট সরকারকে বিদায় না জানালে সাংবাদিক নির্যাতন বন্ধ হবে না।
সমাবেশে সংহতি জানিয়ে বিএনপিনেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন বলেন, এ সরকার বিচার ব্যবস্থা, প্রশাসন ও সংসদ ধ্বংস করেছে। গণমাধ্যম ভরসা ছিল। এখন সেটিও ধ্বংসের পাঁয়তারা করছে। এ সময় তিনি সাংবাদিক রোজিনা ইসলামকে হেনস্থা ও গ্রেপ্তারের পর নারীবাদীদের নিশ্চুপ থাকা নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। এ সময় তিনি রোজিনা ইসলামসহ সব কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তির দাবি জানান।
বিএফইউজে মহাসচিব নুরুল আমিন রোকন বলেন, রোজিনা ইসলামকে যেভাবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে আটকে রেখে নির্যাতন চালিয়ে কারাবন্দি করা হয়েছে তা অতীতের সব নির্যাতনকে ম্লান করে দিয়েছে। এটা গোটা জাতির জন্য লজ্জার। তিনি আরও বলেন, অবিলম্বে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিল করে সাংবাদিকদের স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ দিন। বন্ধ গণমাধ্যমগুলো খুলে দিন। সাংবাদিক রোজিনা ইসলামসহ সব কারাবন্দি সাংবাদিকের অবিলম্বে মুক্তি দিন।
ডিইউজের সাধারণ সম্পাদক মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, রোজিনা ইসলামকে পাঁচ ঘণ্টা আটকে রেখে নির্যাতন করার ঘটনায় প্রমাণ হয়েছে, এ সরকার স্বাধীন সাংবাদিকতাকে হত্যা করতে চায়। যা সাংবাদিক সমাজ কখনই মেনে নিবে না। এ সময় তিনি অবিলম্বে সাংবাদিক রোজিনা ইসলাম ও সাংবাদিক নেতা রুহুল আমিন গাজীসহ সব কারাবন্দি সাংবাদিকের মুক্তির দাবি জানান।