রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে আচরণ হয়েছে তা লজ্জাজনক : জি এম কাদের
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান ও বিরোধী দলীয় উপনেতা গোলাম মোহাম্মদ (জি এম) কাদের বলেছেন, ‘করোনার টিকা নিয়ে তিনপক্ষের চুক্তি অনুযায়ী এ পর্যন্ত দেশের প্রায় ৫০ কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। কিন্তু টিকার নিশ্চয়তা মেলেনি।’
আজ মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
জি এম আরও বলেন, দেশের ১৪ লাখ মানুষের দ্বিতীয় ডোজ করোনা টিকা নিয়ে উদ্বেগ কমছে না। ৮ থেকে ১২ সপ্তাহের মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ডোজ টিকা আবশ্যক। কিন্তু এ ব্যাপারে স্বাস্থ্য বিভাগ আশ্বস্ত করতে পারছ না। করোনা টিকা নিয়ে অনিশ্চয়তা দুর্ভাগ্যজনক।
বিবৃতিতে সাংবাদিক রোজিনা ইসলামের মুক্তি দাবি করে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান তাঁকে গ্রেপ্তার ও হেনস্তার তীব্র নিন্দাও জানান। তিনি এ ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত দাবি করেন। তিনি বলেন, ‘রোজিনা ইসলামের সঙ্গে যে আচরণ করা হয়েছে তা লজ্জাজনক।’
সরকারি নথিপত্র চুরির অভিযোগে গতকাল সোমবার রাতে শাহবাগ থানায় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে যান রোজিনা ইসলাম। এ সময় তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নেন এবং মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন। পরে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁর শরীর তল্লাশি করে সেইসব নথিপত্র উদ্ধার করেন।
এই অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে কয়েক ঘণ্টা সচিবালয়ে আটক রেখে সন্ধ্যার পর শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী, তাঁর কর্মস্থলের সহকর্মী আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে রোজিনার মুক্তি দাবি করেন।
আটকের দীর্ঘ সময় পরে রোজিনার কয়েকজন স্বজন তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। বেরিয়ে এসে রোজিনার বড় ভাই সেলিম জানান, তাঁর বোনকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।
এদিকে, অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের মামলায় রোজিনা ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। তবে তাঁর জামিনের ব্যাপারে পরে শুনানি আগামী বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত হবে।
আজ মঙ্গলবার রোজিনাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। অপরদিকে রোজিনার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।