রোববার থেকে খুলছে না কালিয়াকৈরের ২০ প্রাথমিক বিদ্যালয়
করোনা পরিস্থিতির কারণে প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর আগামীকাল রোববার থেকে খোলা হচ্ছে দেশের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। তবে করোনার পর এবার বন্যা পরিস্থিতির কারণে গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার ২০টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হওয়া অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। এসব বিদ্যালয়ে বন্যার পানি ওঠায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার বিষয়ে সরকারের ঘোষণায় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মধ্যে ফিরে এসেছে প্রাণচাঞ্চল্য। দীর্ঘ প্রায় ১৮ মাস বন্ধ থাকার পর অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খোলার প্রস্তুতি ইতোমধ্যে নিয়েছে। শ্রেণিকক্ষ, বেঞ্চ ও চেয়ার-টেবিলসহ আসবাবপত্র পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের জন্য প্রস্তুত করে তোলা হয়েছে। শিক্ষার্থীরাও সশরীরে স্কুলে উপস্থিত হয়ে পাঠদানে অংশ নিতে প্রস্তুতি নিয়েছে। ফলে বিদ্যালয় খোলাকে কেন্দ্র করে অধিকাংশ শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে আনন্দের বন্যা বইতে শুরু করেছে। শিক্ষার্থীদের পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত সময় কাটাচ্ছে জেলার টেইলার্সগুলোর কর্মীরা। কিন্তু বন্যাদুর্গত এলাকার শিক্ষার্থীদের মধ্যে চাঞ্চল্যতা তেমনটা নেই।
তবে গত কিছুদিন ধরে বন্যার পানি হঠাৎ বৃদ্ধি পেয়েছে। এর ফলে গাজীপুরের বিভিন্ন নদী ও বিলের পানি বেড়ে নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। বিভিন্ন এলাকার রাস্তাঘাট, ঘরবাড়িসহ অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পানি উঠেছে। কিছু শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বন্যার পানি প্রবেশ না করলেও সেগুলোতে যাতায়াতের রাস্তাগুলোসহ বিদ্যালয়ের মাঠ কয়েক ফুট পানিতে তলিয়ে গেছে। ফলে পাঠদান শুরু হলে সেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীদের ঝুঁকি নিয়ে বিকল্প উপায়ে আসাযাওয়া করতে হবে। ফলে বন্যার পানি যেসব বিদ্যালয়ে প্রবেশ করেছে সেসব বিদ্যালয়ে পাঠদান শুরু হওয়ার বিষয়টি অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। ওই বিদ্যালয়গুলো নির্ধারিত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে পাঠদান শুরু করতে পারছে না।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোফাজ্জল হেসেন জানান, গাজীপুর জেলার মোট ৭৮১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে কালিয়াকৈর উপজেলায় ১২২ প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। প্রাথমিক বিদ্যালয় ছাড়াও এ উপজেলায় ৫২টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, আটটি স্কুল অ্যান্ড কলেজ, পাঁচটি কলেজ এবং আটটি মাদ্রাসা রয়েছে। কালিয়াকৈরের বিভিন্ন এলাকা অপেক্ষাকৃত নিম্নাঞ্চল হওয়ায় এ উপজেলার শেওড়াতলী, সাদুল্যাপুর, চাপাইর, টেকিবাড়ি, উত্তর রাজাবাড়ি, চৌধুরীটেক, মুদিপাড়া, বাহাদুরপুর, কাঞ্চনপুর, বাঁশতলী, টালাবহ, কাঁঠালতলী, বাসুরা, ঢালজোড় বাসুরি, বাবাড়িয়া, দেওয়াইর ও কুন্দাকাটাসহ ২০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ইতোমধ্যে বন্যার পানি প্রবেশ করেছে। ফলে এসব বিদ্যালয়ে আপাতত আগামীকাল রোববার থেকে পাঠদান কার্যক্রম চালু করা সম্ভব হচ্ছে না। সেগুলো কবে খোলা যাবে তাও এ মুহূর্তে বলা সম্ভব হচ্ছে না। তবে বন্যার পানি কমে গেলে রক্ষণাবেক্ষণ কাজ শেষে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করেই সেসব বিদ্যালয়গুলো খুলে দিয়ে পাঠদান কার্যক্রম শুরু করা হবে। জেলার অন্য উপজেলা, সিটি করপোরেশন ও পৌরসভা এলাকাগুলোর প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোতে এ সমস্যা না থাকায় সেসবগুলো যথাসময়ে খোলা হবে।