রোহিঙ্গাদের দ্রুত প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক ভূমিকা চায় বাংলাদেশ
বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. জোয়াও গোমেস ক্রাভিনহোর সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেছেন। বৈঠকে জোরপূর্বক বাস্তুচ্যুত হয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের মিয়ানমারে দ্রুত প্রত্যাবাসনে আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে পর্তুগাল ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের কার্যকর ভূমিকার অনুরোধ জানান ড. মোমেন। পর্তুগালের রাজধানী লিসবনে এ বৈঠক হয়।
আজ শনিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। এ সময় দুদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী দুদেশের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, মানবসম্পদ, সুনীল অর্থনীতি, নবায়নযোগ্য জ্বালানি ও জনগণের মধ্যে যোগাযোগের ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর জোর দেন।
বৈঠকে ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, পারস্পরিক সুবিধার জন্য বর্তমান সময়ে শক্তিশালী সহযোগিতার জন্য দুই বন্ধুপ্রতীম দেশের উচিত ইতিহাসের এ ইতিবাচক উত্তরাধিকার গড়ে তোলা।
বাংলাদেশ ১০ বছর ধরে লিসবনে একটি আবাসিক বাংলাদেশ দূতাবাস রক্ষণাবেক্ষণ করেছে এবং সম্প্রতি দূতাবাসের স্থায়ী অবস্থানের জন্য লিসবনে সম্পত্তি ক্রয় করেছে উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্তুগিজ সরকারকে ঢাকায় একটি আবাসিক পর্তুগিজ মিশন বা অন্ততপক্ষে স্থাপন করার বিষয়টি বিবেচনা করার আহ্বান জানান। ঢাকায় সব ধরনের ভিসার আবেদন গ্রহণের জন্য কিছু ব্যবস্থা এবং ঢাকায় পর্যায়ক্রমিক কনস্যুলার সেবা নিশ্চিত করার জন্য বাংলাদেশের পক্ষ থেকে সব ধরনের সহায়তার প্রস্তাব দেন ড. মোমেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, পর্তুগালে শিক্ষার্থীদের বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের সুবিধার্থে এবং বাংলাদেশি অভিবাসীদের পরিবারের সদস্যদের পর্তুগালে তাদের প্রিয়জনদের সঙ্গে পুনর্মিলনের জন্য এটি গুরুত্বপূর্ণ।
এ ছাড়া পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সদ্য উদ্বোধন হওয়া বহু বিলিয়ন ডলারের পদ্মা সেতু নতুন বাংলাদেশের প্রতীক, যা সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে সাফল্য অর্জনে সক্ষম।
অন্যদিকে, পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নে তাঁর সরকারের ইচ্ছা প্রকাশ করেন। পর্তুগিজ সমাজে একীভূত হওয়া এবং পর্তুগিজ অর্থনীতিতে অবদানের জন্য পর্তুগালে বসবাসরত বাংলাদেশি অভিবাসী সম্প্রদায়ের প্রশংসা করার পাশাপাশি তিনি পরামর্শগুলো নোট করে সেগুলো নিয়ে কাজ করার আশ্বাস দেন।
বৈঠকে দুই মন্ত্রী দ্বিপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় স্তরে জলবায়ু উদ্বাস্তু পুনর্বাসনের মতো জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় একসঙ্গে কাজ করার বিষয়ে সম্মত হন। তাঁরা ২০২৪ সালে বাংলাদেশ-পর্তুগাল কূটনৈতিক সম্পর্কের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের সফরসহ ভবিষ্যৎ সহযোগিতার এজেন্ডা নিয়েও আলোচনা করেন। বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্তুগিজ পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে বাংলাদেশ সফরের আমন্ত্রণ জানান।
বৈঠকে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন লিসবনে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত তারিক আহসান, এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মেরিটাইম অ্যাফেয়ার্স ইউনিটের সচিব রিয়ার অ্যাডমিরাল (অব.) মো.খুরশেদ আলম।