লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলায় গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে চায়ের দোকানে আড্ডা দেওয়ার সময় হারুনুর রশিদ হারুন (৫২) নামের এক ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ নেতাকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে রক্তাক্ত করে দুর্বৃত্তরা। পরে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় নেওয়ার পথে কুমিল্লা বিশ্বরোড এলাকায় দিবাগত রাত ১টার দিকে মৃত্যু হয় তাঁর।

লক্ষ্মীপুর সদর উপজেলার বশিকপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আমির হোসেন মৃত্যুর তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, নিহত হারুন ৬ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক।

আমির হোসেন বলছেন, ‘হারুন এলাকায় সন্ত্রাস রোধে পুলিশকে তথ্য দিয়ে সব সময় সহযোগিতা করতেন। এর আগেও বিএনপির সন্ত্রাসী বাহিনী লাদেন মাসুম গ্রুপ তাঁর ওপর হামলা চালিয়েছিল। এবারও বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে ঘটনাটি ঘটিয়েছে। এখানে কোনো দলীয় কোন্দল নেই।’

পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, গতকাল বুধবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে বশিকপুর ইউনিয়নের আলমপুর গ্রামে বাড়ির পাশের একটি চায়ের দোকানে আড্ডা দিচ্ছিলেন আওয়ামী লীগ নেতা হারুন। হঠাৎ সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে চার থেকে পাঁচ জন দুর্বৃত্ত এসে তাঁর ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। একপর্যায়ে তাঁকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে দুই হাতের কবজি, পা ও মাথায় জখম করে। এ সময় আতঙ্ক ছড়াতে তারা কয়েক রাউন্ড ফাঁকা গুলি ছোড়ে এবং বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। পরে স্থানীয় লোকজন হারুনকে উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট জেলা সদর হাসপাতালে পাঠায়। সেখান থেকে তাঁকে উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে পাঠানো হয়। এদিকে, কেন এই হামলা চালানো হয়েছে, এর সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ জানাতে পারেনি কেউ।

এদিকে, ঘটনার পর খবর পেয়ে জেলা সদর হাসপাতালে হারুনকে দেখতে যান লক্ষ্মীপুর-২ (রায়পুর ও সদরের একাংশ) আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরউদ্দিন চৌধুরী নয়ন। তিনি দাবি করেন, হারুনের ওপর বিএনপি-জামায়াতের সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়েছে। তারা লক্ষ্মীপুরের শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে আবারও নষ্ট করতে চাইছে। জড়িতদের গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনতে ২৪ ঘণ্টার আলটিমেটাম দেন তিনি।

এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুরের পুলিশ সুপার (এসপি) ড. এ এইচ এম কামরুজ্জামান সংবাদকর্মীদের জানান, দৃর্বৃত্তরা হারুনের ওপর হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ কাজ করছে।