লক্ষ্মীপুরে দুর্বৃত্তদের আগুনে এতিমখানার খাবারঘর পুড়ে ছাই
লক্ষ্মীপুরে রাতের অন্ধকারে দুর্বৃত্তদের দেওয়া আগুনে একটি এতিমখানার খাবারঘরসহ আসবাবপত্র পুড়ে ছাই হয়ে গেছে। আজ শুক্রবার ভোরে সদর উপজেলার আলহাজ্ব মাওলানা আহম্মদ উল্লাহ ছাহেব মাদ্রাসা কমপ্লেক্স ও এতিমখানায় এ ঘটনা ঘটে। তবে পূর্বশত্রুতার জের ধরে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি ঘটতে পারে বলে দাবি করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ ও স্থানীয় জানায়, আজ ভোর ৩টা ৪৫ মিনিটে প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা ফজরের নামাজের জন্য ঘুম থেকে উঠে খাবারঘরে দাউ দাউ করে আগুন জ্বলতে দেখেন। এর আগে মাদ্রাসার বাইরে অজ্ঞাত মানুষের কথাবার্তাও শোনা যায়। পরে শিক্ষার্থীদের সহযোগিতায় শিক্ষকরা আগুন নেভাতে চেষ্টা করেন। মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ মনির হোসেন চন্দ্রগঞ্জ থানায় আগুনের বিষয়টি জানান। পুলিশের উপ-পরিদর্শক (এসআই) সাইফুল ইসলাম মাদ্রাসায় এসে ফায়ার সার্ভিসে খবর দেন। পরে লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরা এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এর আগেই চাল-তরকারি, ফ্রিজ ও আসবাবপত্রসহ খাবারঘরটি পুড়ে ছাই হয়ে যায়।
মাদ্রাসার নিরাপত্তা দেওয়ালের ওপর দিয়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয় বলে দাবি করেছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
জানা গেছে, প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেশী পাশ্ববর্তী সাইফ উদ্দিন, আবদুল মালেকদের সঙ্গে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের দীর্ঘদিনের বিরোধ রয়েছে। সাইফ উদ্দিনরা মাদ্রাসার জমির ওপর দিয়ে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করে। এতে বাধা দিলে মাদ্রাসা পরিচালক মনিরের ওপর একাধিকবার হামলা চালানো হয়। মাদ্রাসার দুটি গাছ রাস্তা নির্মাণের জন্য সাইফ উদ্দিনেরা জোরপূর্বক কেটে ফেলে। এসব ঘটনায় মাদ্রাসার পরিচালকের করা দুটি মামলা চলমান রয়েছে। এর মধ্যে একটি মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনকে (পিবিআই) তদন্তের দায়িত্ব দিয়েছেন আদালত।
মাদ্রাসার ব্যবস্থাপনা পরিচালক শাহ মোহাম্মদ মনির হোসেন বলেন, ‘কে বা কারা আগুন দিয়েছে আমরা দেখিনি। তবে রাস্তা নির্মাণ নিয়ে সাইফ উদ্দিন ও আবদুল মালেকদের সঙ্গে বিরোধ রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে শত্রুতার জের ধরে তারাই আগুন লাগিয়ে মাদ্রাসার খাবারঘরটি পুড়িয়ে দিয়েছে।’
অভিযোগ অস্বীকার করে সাইফ উদ্দিন বলেন, আমি ঢাকায় আছি। মাদ্রাসার অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি আমার জানা নেই। আমরা মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে টাকা পাওনা আছি। ওই টাকা চাওয়ায় আমাদের বিরুদ্ধে বিভিন্নভাবে মিথ্যা অভিযোগ আনছে মাদ্রাসা কর্তৃপক্ষ।
চন্দ্রগঞ্জ থানার এসআই সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘খবর পেয়ে তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। বিস্তারিত ফায়ার সার্ভিসের প্রতিবেদন পেলে জানা যাবে।’
লক্ষ্মীপুর ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন কর্মকর্তা মো. ওয়াসি আজাদ বলেন, ‘প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে বৈদ্যুতিক শর্টসার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত হতে পারে। আগুনে দুই লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি হতে পারে। তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়া হবে বলে জানিয়েছেন তিনি।