লক্ষ্মীপুরে যুবলীগের শোডাউনে হামলা, আহত ১২
লক্ষ্মীপুরে কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানাতে নেতাকর্মীদের শোডাউনে জেলা যুবলীগের সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপুর অনুসারীরা হামলা চালিয়েছে।
আজ মঙ্গলবার দুপুর ১২টার দিকে লক্ষ্মীপুর পৌর শহরের গণকবর ও শিশু পরিবার এলাকার সড়কে এ হামলার ঘটনা ঘটে। এতে দলীয় নেতাকর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।
হামলা চালিয়ে জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ নুরুল আজিম বাবর ও সদর উপজেলা যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক রুপম হাওলাদারসহ অন্তত ১২ নেতাকর্মীকে জিআই পাইপ দিয়ে পিটিয়ে আহত করা হয়েছে। বাবর ও রুপম জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক পদপ্রার্থী। এ ঘটনায় টিপু নিজেও আহত হয়ে সদর হাসপাতালে চিকিৎসা নিয়েছেন।
বর্ধিত সভাকে কেন্দ্র করে প্রার্থিতা ঘোষণা করে নেতাকর্মীরা প্রচার-প্রচারণা চালিয়েছেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে টিপু তার অনুসারীদের নিয়ে হামলা চালিয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। আহতদের সদর হাসপাতাল ও স্থানীয় ক্লিনিকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
আহত অন্যরা হলেন জামাল উদ্দিন, আবদুল মতিন, মো. খোকন, জামাল হোসেন ও মামুন হোসেন প্রমুখ।
দলীয় সূত্র ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানায়, আজ দুপুরে লক্ষ্মীপুর পৌর আধুনিক বিপণিবিতানের সোনার বাংলা চাইনিজ রেস্টেুরেন্টে জেলা যুবলীগের বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।
২০১৭ সালের ২৩ নভেম্বর টিপুকে সভাপতি ও আবদুল্লাহ আল নোমানকে সাধারণ সম্পাদক করে তিন বছরের জন্য কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর নানা বিতর্কে পূর্ণাঙ্গ কমিটি অনুমোদন দেওয়া হয়নি। যুবলীগের কমিটি এখন মেয়াদোত্তীর্ণ। কমিটি গঠনের প্রায় চার বছর পর এ প্রথম বর্ধিত সভার আয়োজন করা হয়।
বর্ধিত সভার সভাপতি কেন্দ্রীয় যুবলীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য হাবিবুর রহমান পবন। বিশেষ অতিথি কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নাঈম, উপপরিবেশ বিষয়ক সম্পাদক শামছুল ইসলাম পাটওয়ারী ও সহকারী সম্পাদক অ্যাডভোকেট জয়নাল আবেদিন রিগ্যান। এতে যুবলীগের জেলা, উপজেলার ও পৌর কমিটির নেতাকর্মীরাও অংশ নেন।
পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করতে কেন্দ্রীয় নেতারা ঢাকা থেকে আজ দুপুরে রামগঞ্জ হয়ে লক্ষ্মীপুরে এসেছেন। এতে অন্তত ১০ জন সাবেক যুবলীগ ও ছাত্রলীগনেতা প্রার্থিতা ঘোষণা করে কেন্দ্রীয় নেতাদের শুভেচ্ছা জানিয়ে শহরে বিলবোর্ড, ব্যানার-ফেস্টুন সাঁটিয়ে প্রচারণা চালিয়েছেন। বর্ধিত সভার অতিথিদের বরণ করতেই দলীয় নেতাকর্মীদের নিয়ে তারা রামগঞ্জ-লক্ষ্মীপুর সড়কের পাশে দাঁড়ায়। এসব দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে যুবলীগ সভাপতি টিপুর অনুসারীরা হামলা চালায়।
আহত যুবলীগ নেতা ইউনুছ হাওলাদার রুপম বলেন, টিপুর নেতৃত্বে নেশাগ্রস্ত একদল বখাটে মোটরসাইকেলে এসে আমাদের ওপর পরিকল্পিতভাবে হামলা করেছে। এতে আমি ও সৈয়দ বাবরসহ নেতাকর্মীরা আহত হয়। যুবলীগকে তারা বাবার সম্পত্তি মনে করছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় নেতাদের জানানো হয়েছে।
এ ব্যাপারে জেলা যুবলীগের সভাপতি এ কে এম সালাহ উদ্দিন টিপু গণমাধ্যমকে জানান, বাবরের সঙ্গে তার বাদানুবাধ হয়েছে। কাউকে মারধর করা হয়নি।
সদর মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) শিপন বড়ুয়া বলেন, অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে শহরজুড়ে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন রয়েছে। বিশৃঙ্খলার ঘটনায় কাউকে আটক করা সম্ভব হয়নি। বর্ধিত সভাস্থলেও পুলিশ মোতায়েন আছে।
যুবলীগ নেতা টিপু সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান। তিনি গত উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচন করে চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছেন।