শাহজালাল বিমানবন্দরে আরো একটি বোমা উদ্ধার
ঢাকার হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে আজ সোমবার সকালে ২৫০ কেজি ওজনের আরো একটি বোমা পাওয়া গেছে। এটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূমিতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কনস্ট্রাকশন সাইটে চলমান পাইলিংয়ের সময় সোমবার সকাল ৮টা ৩৫ মিনিটে আনুমানিক ১০ ফুট মাটির নিচ থেকে আরো একটি ২৫০ কেজি ওজনের জেনারেল পারপাস (জিপি) বোমা পাওয়া যায়। বাংলাদেশ বিমান বাহিনী ঘাঁটি বঙ্গবন্ধুর প্রশিক্ষিত বোমা ডিসপোজাল দল আধুনিক যন্ত্রপাতি সহকারে দ্রুততার সঙ্গে ঘটনাস্থলে পৌঁছে বোমাটি নিষ্ক্রিয় করে। পরবর্তীতে নিরাপদ স্থানে বোমাটি ধ্বংস করার উদ্দেশ্যে প্রয়োজনীয় সর্তকতার সঙ্গে বিমান বাহিনী ঘাঁটি পাহাড় কাঞ্চনপুরের রসুলপুর ফায়ারিং রেঞ্জে নিয়ে যাওয়া হয়। উল্লেখ্য যে, বোমা বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে প্রাপ্ত পূর্বের বোমার ন্যায় এই বোমাটিও ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় ভূমিতে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
এর আগে গত ৯ ডিসেম্বর ওই কনস্ট্রাকশন সাইটে একই ধরনের আরো একটি বোমা পাওয়া যায়।
হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের পরিচালক গ্রুপ ক্যাপ্টেন এ এইচ এম তৌহিদ উল আহসান এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ‘যেহেতু দুটি বোমা পাওয়া গেছে, আরো বোমা এখানে আছে কিনা সেদিকে আমাদের সতর্ক দৃষ্টি আছে। আমাদের ধারণা, উদ্ধার হওয়া বোমা দুটি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময়কার।’
ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের দায়িত্বে রয়েছে জাপানের মিতসুবিশি করপোরেশন, ফুজিতা করপোরেশন ও স্যামসাং মিলে গঠিত এভিয়েশন ঢাকা কনসোর্টিয়াম (এডিসি)।
দেশের সব বিমানবন্দরের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার পাশাপাশি আধুনিকায়নের অংশ হিসেবে ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ প্রকল্প উদ্বোধন ও ফলক উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
বিমানবন্দরের মূল টার্মিনালের দক্ষিণ পাশে ২১ হাজার ৪০০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত হবে সুপরিসর এই তৃতীয় টার্মিনাল। এই অর্থ ব্যয়ের একটি অংশ প্রকল্প সহায়তা হিসেবে দেবে জাইকা। বাংলাদেশ সরকার বাকি অর্থের যোগান দেবে।
এই প্রকল্পের আওতায় একটি প্যাসেঞ্জার টার্মিনাল বিল্ডিং, রাস্তা, কার পার্কিং, কার্গো কমপ্লেক্স, পার্কিং অ্যাপ্রোনসহ আরো অন্যান্য স্থাপনা তৈরি করা হবে।
তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শেষ হতে সময় লাগবে চার বছর। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর দিয়ে বছরে প্রায় দুই কোটি যাত্রী চলাচলের সুযোগ পাবে।
এই প্রকল্পের একটি অংশে কাজ করবে কোরিয়াভিত্তিক স্যামসাং সিঅ্যান্ডটি করপোরেশন। তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ শেষ হলে ঢাকার শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এ অঞ্চলের সেরা বিমানবন্দরে পরিণত হবে বলে আশা করছে সরকার।
গত ৯ আগস্ট শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনাল নির্মাণ কাজের অগ্রগতি ও বিমানবন্দরের অভ্যন্তরীণ টার্মিনালের নবনির্মিত ভবন পরিদর্শনকালে বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী জানান, প্রকল্পের ৬.৪ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। ২০২৩ সালের জুনের মধ্যেই নির্মাণ কাজ শেষ করে তা যাত্রীদের ব্যবহারের জন্য উন্মুক্ত করা সম্ভব হবে।