শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার দাবি ইউনিসেফ-ইউনেসকোর
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে ক্লাস কার্যক্রম শুরু করতে আর অপেক্ষা না করে দ্রুত সময়ের মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলার দাবি জানিয়েছেন ইউনিসেফের নির্বাহী পরিচালক হেনরিয়েটা ফোর ও ইউনেসকোর মহাপরিচালক অড্রে অ্যাজুল। আজ সোমবার এক যৌথ বিবৃতিতে তাঁরা এ কথা জানান।
বিবৃতিতে তাঁরা বলেন, ‘কোভিড-১৯ এর প্রাদুর্ভাব শুরু হওয়ার পর ১৮ মাস পেরিয়ে গেছে এবং লাখ লাখ শিশুর পড়াশোনা এখনো ব্যাহত হচ্ছে। ১৯টি দেশে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে, যা ১৫ কোটি ৬০ লাখেরও বেশি শিক্ষার্থীকে ক্ষতিগ্রস্ত করছে। এটা চলতে পারে না। বন্ধের ক্ষেত্রে স্কুলগুলো সবার শেষে এবং পুনরায় খোলার ক্ষেত্রে সর্বাগ্রে থাকা উচিত।’
যৌথ বিবৃতিতে হেনরিয়েটা ফোর ও অড্রে অ্যাজুল বলেন ‘সংক্রমণ সীমিত পর্যায়ে রাখার প্রচেষ্টায় সরকার অনেক সময়ই স্কুল বন্ধ করে দিয়েছে এবং দীর্ঘকাল ধরে সেগুলো বন্ধ রেখেছে। এমনকি মহামারিজনিত পরিস্থিতি, যখন এটা দাবি করে না তখনো। প্রায়শই এই ব্যবস্থাগুলো শেষ পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়ার বদলে প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে নেওয়া হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে, স্কুলগুলো বন্ধ রাখা হলেও বার ও রেস্তোরাঁগুলো খোলা ছিল।’
তারা বলেন, ‘স্কুলে যেতে না পারার কারণে শিশু এবং তরুণ জনগোষ্ঠী যে ক্ষতির সম্মুখীন হবে তা হয়তো কখনোই পুষিয়ে নেওয়া যাবে না। শেখার ক্ষতি, মানসিক সংকট, সহিংসতা ও নির্যাতনের সম্মুখীন হওয়া থেকে শুরু করে স্কুলভিত্তিক খাবার ও টিকা না পাওয়া বা সামাজিক দক্ষতার বিকাশ কমে যাওয়া– শিশুদের ক্ষেত্রে তাদের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পাশাপাশি তাদের শিক্ষাগত অর্জন এবং সামাজিক সম্পৃক্ততায় এর প্রভাব পরিলক্ষিত হবে।’
বিবৃতিতে বলা হয়, ‘এটি সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত যে, সংক্রমণের প্রধান চালিকাশক্তিগুলোর মধ্যে প্রাথমিক ও মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলো নেই। এদিকে, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপযুক্ত প্রশমন কৌশল অবলম্বনের মাধ্যমে স্কুলগুলোতে কোভিড-১৯ সংক্রমণের ঝুঁকি সামাল দেওয়া সম্ভব। স্কুল খুলে দেওয়া বা বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত ঝুঁকি বিশ্লেষণের ভিত্তিতে এবং যে কমিউনিটিতে স্কুল অবস্থিত সেখানকার মহামারি পরিস্থিতি বিবেচনা করে নেওয়া উচিত।’
টিকা দিয়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান খুলে দেওয়ার কথা উল্লেখ করে বলা হয়, ‘স্কুলগুলো পুনরায় চালুর ক্ষেত্রে সব শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর টিকা দেওয়ার জন্য অপেক্ষা করা যায় না। বৈশ্বিক পর্যায়ে টিকা ঘাটতি নিম্ন ও মধ্যম আয়ের দেশগুলোকে বিপর্যয়ের মুখে ফেলেছে। এ অবস্থায় টিকাদানের ক্ষেত্রে সম্মুখ সারির কর্মী ও মারাত্মক অসুস্থতা ও মৃত্যুর ঝুঁকিতে থাকা জনগোষ্ঠীকে অগ্রাধিকার প্রদান অব্যাহত থাকবে। স্কুলে প্রবেশের আগে টিকাদান বাধ্যতামূলক না করাসহ সব স্কুলের উচিত যত দ্রুত সম্ভব ব্যক্তিগতভাবে স্কুলে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীরা যাতে কোনো ধরনের বাধা ছাড়াই শিক্ষা গ্রহণ করতে পারে সে ব্যবস্থা করা।’
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ‘বর্তমানের অস্পষ্ট সুবিধার জন্য, আমাদের ভবিষ্যৎকে স্কুল বন্ধ রাখার মাধ্যমে জিম্মি রাখা হচ্ছে। অগ্রাধিকার দেওয়ার ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই আরও বিবেচক হতে হবে। আমরা নিরাপদে যাতে স্কুলগুলো পুনরায় চালু করতে পারি সে বিবেচনা গ্রহণ করতে হবে।’