শিমুলিয়াঘাটে ঢাকামুখী যাত্রীর চাপ, গণপরিবহণে অতিরিক্ত ভাড়া
মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় যানবাহনের চাপ গত কয়েক দিনের তুলনায় স্বাভাবিক রয়েছে। আজ শনিবার সকালে যানবাহনের চাপ থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে শুরু করেছে। তবে, লঞ্চঘাট এলাকায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের ঢাকামুখী যাত্রীদের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ।
এর মধ্যে শিমুলিয়া ফেরিঘাট এলাকায় পারাপারের অপেক্ষায় রয়েছে প্রায় অর্ধশতাধিক যানবাহন। বাংলাবাজার থেকে লঞ্চে করে আসা যাত্রীদের গণপরিবহণের জন্য অপেক্ষা করতে হচ্ছে। আর বাসে করে ঢাকায় পাড়ি দিতে গুনতে হচ্ছে অতিরিক্ত ভাড়া।
এদিকে, শিমুলিয়া-বাংলাবাজার-মাঝিকান্দি নৌরুটে ১০টি ফেরি দিয়ে ২৪ ঘণ্টা যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে বলে নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ করপোরেশন (বিআইডব্লিউটিসি) শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ। অপরদিকে, ১৫৫টি স্পিডবোট ও ৮৫টি লঞ্চ দিয়ে যাত্রী পারাপার করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহণ কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) শিমুলিয়া ঘাটের বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন।
হনুফা বেগম নামের ইলিশ পরিবহণের এক যাত্রী বলেন, ‘বাংলাবাজার হয়ে শিমুলিয়া ঘাটে এসেছি। লঞ্চে ৪৫ টাকা ভাড়া নিয়েছে, বেশি নেয়নি। তবে, বাসে যেখানে ৮৫ টাকা ভাড়া, সেখানে আমাকে ১০০ টাকা দিতে হয়েছে। তারা অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে।’
ঢাকাগামী যাত্রী আশিক চৌধুরী বলেন, ‘গ্রেট বিক্রমপুর পরিবহণে করে ঢাকা যাব। আমি কলেজছাত্র, তাই আগেভাগে ঢাকা যাচ্ছি। দেড়শ টাকা ভাড়া বলে বাসে উঠেছি।’
ঢাকার বেসরকারি এক প্রতিষ্ঠানের আইটি কর্মকর্তা আফজাল হোসেন বলেন, ‘লঞ্চে নির্ধারিত ভাড়া রেখেছে। তবে, অতিরিক্ত যাত্রী ছিল। গুলিস্তান যাব, ভাড়া রেখেছে ১২০ টাকা।’
ইলিশ পরিবহণের বাসচালক জয়নাল মিয়া বলেন, ‘৮৫ টাকার ভাড়া ১০০ টাকা রাখতেছি। এর বেশি দেয় না। ঢাকা থেকে খালি গাড়ি নিয়ে আসতে হইতাছে, তেলের খরচ লাগে না? যদি খালি গাড়ি নিয়া না আহি, ঢাকায় পইড়া থাকি, তাইলে এখানে যাত্রীর ভিড় লাগব। পরিবহণ সংকট হইব।’
মাওয়া বাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ রোমান মিয়া বলেন, ‘প্রচেষ্টা পরিবহণ বেশি ভাড়া নেয় না। আর, অন্য কোনো পরিবহণ এখানে বেশি ভাড়া নেওয়ার কথা না। এখন চালকেরা নিলে আমরা দেখছি। তবে, ঘাট থেকে গুলিস্তান মিরপুরসহ বিভিন্ন দূরত্বে বাস যায়। এখানে ভাড়া কম-বেশি হতে পারে।’
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়া ঘাটের ব্যবস্থাপক (বাণিজ্য) ফয়সাল আহমেদ বলেন, ‘শিমুলিয়া ঘাটে যাত্রী এবং যানবাহনের চাপ কম। ঘাট এলাকায় অর্ধশতাধিকের মতো গাড়ি রয়েছে পারাপারের অপেক্ষায়, যার বেশিরভাগই পিকআপ। বাংলাবাজার থেকে যেসব ফেরি আসছে, প্রতিটি ফেরিতে যানবাহনের সঙ্গে যাত্রীদের বহন করতে হচ্ছে। আগামীকাল অফিস-আদালত চালু থাকায় শিমুলিয়া ঘাট এলাকায় ঢাকামুখী বাড়তি যাত্রী ও যানবাহনের চাপ সৃষ্টি হয়েছে।’
বিআইডব্লিউটিএ শিমুলিয়া বন্দর কর্মকর্তা শাহাদাত হোসেন বলেন, ‘লঞ্চঘাট এলাকায় যাত্রীদের বাড়তি চাপ রয়েছে। বাংলাবাজার থেকে যেসব লঞ্চ আসছে, প্রতিটি লঞ্চে যাত্রীতে কানায় কানায় পরিপূর্ণ। আগামীকাল অফিস খোলা। তারা পদ্মা লঞ্চে পাড়ি দিয়ে বাসে করে ঢাকায় যাচ্ছে। গতকাল ২৯২টি লঞ্চ ট্রিপে ৮০ হাজারের বেশি যাত্রী পারাপার করেছে। আজ সকাল থেকে যে যাত্রীর চাপ পড়েছে, মনে হচ্ছে আরও বেশি যাত্রী পারাপার হবে।’
জেলা পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইয়াসিনা ফেরদৌস রিথি বলেন, ‘আমরা এরই মধ্যে খেয়াল করেছি দু-একটি বাস অতিরিক্ত ভাড়া নিচ্ছে। এ ব্যাপারে এরই মধ্যে কঠোরভাবে বলা হয়েছে, যাতে যাত্রীদের জিম্মি করে অতিরিক্ত ভাড়া না নেওয়া হয়।’