শুরুতে সুশীল সমাজের প্রতিনিধিদের করোনার টিকা দেওয়া হবে
দেশে যেদিন টিকাদান কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হবে সেদিন ২০ থেকে ২৫ জনকে টিকা দেওয়া হবে। যাঁদের টিকা দেওয়া হবে তাঁরা সবাই বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার সুশীল সমাজের প্রতিনিধি বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল মান্নান।
আজ বুধবার বিকেলে এনটিভি অনলাইনকে স্বাস্থ্য সচিব এ তথ্য জানান। তিনি বলেন, ‘রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে এ টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করা হতে পারে। সে সময় প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উপস্থিত থাকতে পারেন।’
আবদুল মান্নান বলেন, ‘তবে কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালেই যে টিকাদান কর্মসূচির শুরু করা হবে, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এখনো পর্যন্ত যে কথা হয়েছে, তার ভিত্তিতে বলা যায় এখানেই শুরু করা হতে পারে। তবে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন হতে পারে। দেখা গেল, প্রধানমন্ত্রী স্থান পরিবর্তন করে দিলেন। সেজন্য এখনো এটা নির্ধারিত নয়। এরপর যে চার হাসপাতালে টিকা দেওয়া হবে তাও এখনো নির্ধারণ করা হয়নি, কবে নাগাদ দেওয়া হবে। এটা হয়তো আগামীকাল নির্ধারণ করা হবে।’
স্বাস্থ্যসেবা বিভাগের সচিব আবদুল মান্নান জানান, ভারত থেকে ‘উপহার’ হিসেবে পাওয়া করোনার টিকার ২০ লাখ ডোজ আগামীকাল দুপুরে বাংলাদেশে আসবে। ২৭ অথবা ২৮ জানুয়ারি এসব টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শেষ হবে।
এদিকে কোভিড নিয়ে জাতীয় পর্যায় থেকে গঠিত বিশেষজ্ঞ কমিটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এখন পর্যন্ত ভারতে এই টিকার যেসব পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে তা সামান্য এবং স্বাভাবিক।
করোনার টিকার ব্যবস্থাপনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে আজ বুধবার এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্য সচিব আবদুল মান্নান বলেন, ‘স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. জাহিদ মালেক আগামীকাল বৃহস্পতিবার বিমানবন্দরে ভারতের পক্ষ থেকে উপহার স্বরূপ দেওয়া ২০ লাখ ডোজ টিকা গ্রহণ করবেন। এ সময় ভারতীয় হাইকমিশনার বিক্রম দোরাইস্বামীসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও সংশ্লিষ্ট দপ্তরের কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন।’
আবদুল মান্নান বলেন, ‘টিকাগুলো তেজগাঁওয়ের ইপিআই স্টোরে মজুদ রাখা হবে। আমরা স্টোর পরিদর্শন করেছি। সার্বিক নিরাপত্তা সন্তোষজনক বলে প্রতীয়মান হয়েছে। এর মানে, এটি রাখতে আমাদের কোনো সমস্যা হবে না। উপহারের টিকা ও প্রথম দফার ৫০ লাখ টিকা পাওয়ার পর সেখান থেকে ৬০ লাখ টিকা প্রথম মাসেই দেওয়া হবে।’
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব জানান, ২৭ অথবা ২৮ জানুয়ারি এসব টিকার পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শেষ হবে। ঢাকা মেডিকেল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, মুগদা জেনারেল হাসপাতাল ও কুয়েত মৈত্রী হাসপাতালের ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে টিকা দেওয়া হবে। এরপর বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রটোকল অনুযায়ী এক সপ্তাহ অপেক্ষা করা হবে। এরপর টিকা দেওয়া হবে সারা দেশে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারা দেশে টিকাদান কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন।
এদিকে, ভারতে একই টিকার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নিয়ে ইতিমধ্যে জনমনে যে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে সে ব্যাপারে কোভিড- ১৯ জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটির পক্ষ থেকে তাদের অবস্থান তুলে ধরা হয়।
কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ডা. মো. সহিদুল্লা বলেন, ‘এরই মধ্যে আমরা লক্ষ করেছি, কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। কিন্তু এর সংখ্যাটা হচ্ছে চারশর বেশি। যত লাখ টিকা দেওয়া হয়েছে তার তুলনায় এই সংখ্যাটা খুব বেশি না। আমাদের কাছে তথ্য আছে, এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কিছুটা ব্যথা, কিছুটা মাথা ব্যথা ও কিছুটা জ্বর। তাহলে এর থেকে যা বোঝা গেল এই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াটা খুব বড় কিছু না।