শেখ হাসিনা আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার কারিগর : পানি সম্পদ উপমন্ত্রী
পানি সম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম বলেছেন, বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি এবং গণতন্ত্র বিকাশে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার অবদান অপরিসীম ও অতুলনীয়। তাঁর দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নেতৃত্ব এবং জনকল্যাণমুখী কার্যক্রমে দেশ আজ এগিয়ে যাচ্ছে। ক্রমাগত প্রবৃদ্ধি অর্জনসহ মাথাপিছু আয় বাড়ছে, কমছে দারিদ্র্যের হার। তাঁর সাহসিকতায় নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু বাস্তবায়ন হয়েছে। জননেত্রী শেখ হাসিনা আলোকিত বাংলাদেশ গড়ার কারিগর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা'র জন্মদিন উপলক্ষে কেক কাটা ও দোয়া অনুষ্ঠান উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্র সময় মঙ্গলবার রাতে ও বাংলাদেশ সময় বুধবার সকালে লস এঞ্জেলেসে প্রবাসী বাংলাদেশি ও বৃহত্তর ফরিদপুরবাসীর উদ্যোগে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
উপমন্ত্রী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশের সবচেয়ে সফল রাষ্ট্রনায়ক, বিশ্বে প্রভাবশালী নারী প্রধানমন্ত্রী, অনুকরণীয়-অনুসরণীয় ব্যক্তিত্ব। শেখ হাসিনা ক্ষমতায় আছেন বলেই দেশে রেকর্ড পরিমাণ উন্নয়ন হয়েছে। খাদ্য, বস্ত্র, শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, তথ্যপ্রযুক্তি, মূল্যবোধ, কৃষি, অর্থনীতি, রেমিট্যান্স, বিদ্যুৎ, বৈদেশিক সম্পর্কের উন্নয়নসহ প্রতিটি ক্ষেত্রেই দেশবাসীকে যুগান্তকারী সাফল্য এনে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার। শুধু আর্থিক বা অবকাঠামোগত উন্নয়ন নয়, দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল হয়েছে, বাল্যবিবাহসহ বিভিন্ন রকমের সামাজিক সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে চলে এসেছে।’
আওয়ামী লীগের সাবেক এই সাংগঠনিক সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু সপরিবারের দেশবিরোধীদের হাতে শহীদ হওয়ার পর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশে আসেন। তিনি এদেশের মানুষের ভোট ও ভাতের অধিকার বাস্তবায়নে লড়াই ও সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। স্বৈরাচারী এরশাদকে হঠিয়েছেন। সামরিক স্বৈরশাসনামলেও বেশ কয়েকবার তাকে কারা-নির্যাতন ভোগ ও গৃহবন্দি থাকতে হয়েছে। অন্তত ২১ বার জননেত্রী শেখ হাসিনাকে হত্যার অপচেষ্টা করা হয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়েও তিনি অসীম সাহসে তাঁর লক্ষ্য অর্জনে অবিচল থেকেছেন।’
এনামুল হক শামীম বলেন, ‘একজন সফল রাষ্ট্রনায়ক হিসেবে শেখ হাসিনার অবদান আজ আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। ১০ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থীকে বাংলাদেশে আশ্রয় দিয়ে তাদের অন্ন, বস্ত্র, শিক্ষা ও চিকিৎসা নিশ্চিত করে ‘মাদার অফ হিউম্যানিটি’ হিসেবে প্রশংসিত হয়েছেন তিনি। মুজিববর্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ঘোষণা- একটি মানুষও গৃহহীন ও ভূমিহীন থাকবে না। এই লক্ষে তিনি গৃহহীনদের হাতে ঘর তুলে দিচ্ছেন। শেখ হাসিনার তুলনা শুধুই শেখ হাসিনা। তিনি অনুকরণীয় ও অনুস্মরণীয়।’
ছাত্রলীগের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘মানববতার মা শেখ হাসিনার পেছনে ফেলে আসা ৭৫ বছরের অর্ধেকেরও বেশি সময় তিনি প্রতিকূল স্রোতে নৌকা বেয়ে চলেছেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা 'গণতন্ত্রের আলোকবর্তিকা', বলিষ্ঠ একজন সমাজ সংস্কারক। গত বছর ইউনেস্কোর সাবেক প্রধান ইরিনা বোকোভা বলছিলেন, 'সাহসী নারী' হাসিনা সবাইকে পথ দেখাচ্ছেন। আসলেই তিনি সবাইকে পথ দেখাচ্ছে। বিশ্বে চারবারের নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী তিনি। সততা, মেধা, যোগ্যতা, অভিজ্ঞতায় তিনি বিশ্বসেরা প্রধানমন্ত্রী। সকল ষড়যন্ত্র চক্রান্তের জাল ছিন্ন করে, জনগণের রায়ে আগামী নিবার্চনে পঞ্চমবারের মতো তিনি ক্ষমতায় আসবেন।’
উপমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশের প্রায় এক কোটি বাংলাদেশি প্রবাসে কর্মরত রয়েছে। দেশের অগ্রগতিতে প্রবাসীদের অবদান অনস্বীকার্য। তাদের অবদান খাটো করে দেখার কোনো সুযোগ নেই। প্রবাসীরা হচ্ছেন বিদেশে দেশের দূত। করোনাকালীন সময় দেশের অর্থনীতি চাঙ্গা রাখতে অনন্য ভূমিকা রেখেছেন। আর জননেত্রী শেখ হাসিনা হচ্ছেন প্রবাসীবান্ধব সরকার প্রধান।’
এনামুল হক শামীম বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর বীরকন্যার জন্মদিন, বাঙালির আশার বাতিঘরের শুভ জন্মদিন। শুভ জন্মদিন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনি শতায়ু হোন। দেশের জন্য আপনাকে প্রয়োজন। '৭৫-এ বঙ্গবন্ধুকে আমরা হারিয়েছি। সেই হারানোর অপূর্ণতা এই দেশ এই জাতি কখনও পূরণ করতে পারবে না। কিন্তু তাঁর যোগ্য উত্তরসূরী হিসেবে ১৭ কোটি বাঙালির অভিভাবক হিসেবে আপনাকে সামনে রেখেই সফলতার সঙ্গে আমরা পথ চলছি। আপনার দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করছি।’
অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া যুবলীগের সভাপতি সুবর্ন নন্দী তাপস, সাধারণ সম্পাদক আলমগীর হোসেন, সিনিয়র-সহ-সভাপতি নুরে আলম সিদ্দীকি সাদী, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মনিরুজ্জামান জীবন, কমিউনিটি নেতা মমিনুল হক বাচ্চু, সায়েদুল হক সেন্টু, হুমায়ুন কবির, ইলিয়াস সিকদার, প্রেসক্লাবের সভাপতি কাজী মশহুরুল হুদা, সাধারণ সম্পাদক লস্কর আল মামুন, সাজিয়া হক মিমি, আনন্দ মেলার সভাপতি মোহাম্মদ আলী খান প্রমূখ। এসময় প্রবাসীরা বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে যুক্তরাষ্ট্রের লস এঞ্জেলসে আসার আহবান জানান। এছাড়াও লস এঞ্জেলসে স্থায়ীভাবে কনস্যুলার অফিস স্থাপন ও প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধে করনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্যও প্রধানমন্ত্রীর কাছে দাবি জানান।