সংসদকে বঙ্গবন্ধু গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার প্রাণকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলেছেন : আইনমন্ত্রী
আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়কমন্ত্রী অ্যাডভোকেট আনিসুল হক বলেছেন, ‘স্বাধীনতার পর বঙ্গবন্ধু আমাদের একটি সংবিধান দিয়েছেন। ওই সংবিধানে তিনি জাতীয় সংসদকে বাংলাদেশের গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা ও উন্নয়নের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন।’
আজ রোববার (৯ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের বিশেষ অধিবেশনে অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন আইনমন্ত্রী। এ সময় ডেপুটি স্পিকার শামসুল হক টুকু স্পিকারের আসনে ছিলেন।
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘আমার পিতা মরহুম সিরাজুল হকই প্রথম খুনি মোশতাক ও অন্যান্য খুনিদের সামনে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। আমার জানা মতে খুনিদের সামনে তিনিই বঙ্গবন্ধুর হত্যার একমাত্র প্রতিবাদকারী।’
মন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমার পিতা অ্যাডভোকেট সিরাজুল হকও স্বাধীন বাংলাদেশে সংসদের প্রথম অধিবেশনে বক্তব্য দিয়েছেন। আমি এ সংসদের ৫০ বছর পর এখানে দাঁড়িয়ে একজন সদস্য হিসেবে বক্তব্য দিতে পেরেছি। এটি আমার জন্য অত্যন্ত গৌরবের। এটা সম্ভব হয়েছে এ জন্য যে, জাতির পিতা (বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান) আওয়ামী লীগকে একটি রাজনৈতিক দল হিসেবেই গড়ে তুলেননি, তিনি দলটিকে একটি পরিবার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করেছেন। আমার পিতা ছিলেন বঙ্গবন্ধুর একজন একনিষ্ঠ বন্ধু, কর্মী ও আইনজীবী। তাদের এই বন্ধুত্ব জীবনের শেষদিন পর্যন্ত অটুট ছিল। তিনি ছিলেন সংবিধান প্রণয়ন কমিটির অন্যতম সদস্য।’
আইনমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের ১৫ অথবা ১৬ অক্টোবর বঙ্গবন্ধুর হত্যাকারী খন্দকার মোশতাক বঙ্গভবনে সব সংসদ সদস্যকে ডেকেছিলেন। আমার জানা মতে, আমার পিতা মরহুম সিরাজুল হকই প্রথম ও এখন পর্যন্ত একমাত্র তিনিই খন্দকার মোশতাকের সামনে বঙ্গবন্ধুর হত্যার প্রতিবাদ করেছিলেন। আমার বাবাকে যখন সেদিন বক্তৃতা করার জন্য আহ্বান করা হয়, তখন তিনি খন্দকার মোশতাকের উদ্দেশে বলেছিলেন—মি. মোশতাক! আমি আপনাকে প্রেসিডেন্ট হিসেবে সম্বোধন করতে পারি না। আমি আপনাকে আজকে মোশতাক ভাইও বলতে পারছি না। আমি আপনার কাছে জানতে চাই, আপনি কেনো বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে হত্যা করেছেন?’
আনিসুল হক আরও বলেন, “সেদিন আমার পিতা খন্দকার মোশতাকের সামনে আরও বলেছিলেন—‘গত ২৭ বছর আমরা একসঙ্গে চলেছি। একসঙ্গে রাজনীতি করেছি, অনেক সময় একপাতে ভাত খেয়েছি। আপনি কোনোদিন বঙ্গবন্ধুকে বলেননি, বঙ্গবন্ধু তুমি অন্যায় করছো। আজকে আপনি বলছেন, বঙ্গবন্ধু অন্যায় করেছে। আজ আপনি সাধু আর আমি হব সাক্ষী। আমি এটা হব না।’ আমার বাবার এ বক্তব্যের পরই সেদিন মোশতাকের সভা পণ্ড হয়ে যায়। সেদিন রাতে আমাদের মোহাম্মদপুরের বাসায় অনেক সংসদ সদস্য ও রাজনীতিবিদ এসেছিলেন। তারা আমার বাবাকে ওই বক্তব্যের জন্য বোকা বলেছিলেন।”