সংসদ ভবন এলাকায় কবর থাকবে না : স্থানীয় সরকার মন্ত্রী
লুই আই কানের নকশা অনুযায়ী সংসদ ভবন এলাকায় কোনো কবর থাকবে না বলে জানিয়েছেন স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম। আজ শুক্রবার রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউটে আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপকমিটির আয়োজনে ‘ঢাকার জলাবদ্ধতা সংকট নিরসন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় এ কথা বলেন তিনি। আর রাজধানীর জলাবদ্ধতা নিরসনে দখলকৃত খালগুলো উদ্ধারে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানান মন্ত্রী।
রাজধানীর জলাবদ্ধতার বড় কারণগুলোর একটি খাল দখল। অভিযান পরিচালনা করে উদ্ধারের পর আবারো দখল হয়ে গেছে খাল; এমন উদাহরণও আছে। সকালে এ বিষয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় তাই রাজধানীর খাল উদ্ধারে দুই সিটি করপোশনকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানান স্থানীয় সরকার মন্ত্রী। তাঁর বক্তব্যে উঠে আসে সাম্প্রতিক রাজনীতির প্রসঙ্গও।
মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এদেশের স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। বাংলার মানুষ মুক্তি পেয়েছে। তাঁর কবর থাকবে টুঙ্গিপাড়ায় আর পাকিস্তানিদের দোসর যারা বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করেছে, ৩০ লাখ মানুষকে নির্মমভাবে হত্যা ও দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রম নষ্ট করেছে। তাদের কবর জাতীয় সংসদসহ গৌরবোজ্জ্বল জায়গায় থাকতে পারে না। এগুলো আমাদের হৃদয়ে রক্তক্ষরণ করে।
মন্ত্রী বলেন, জিয়াউর রহমান জাতির পিতার খুনি একথা ধ্রুব সত্য। তাকে খুনি প্রমাণ করার জন্য সব ধরনের দলিলাদি রয়েছে। রাষ্ট্রপতিকে নিরাপত্তা প্রদানের দায়িত্ব নিশ্চিত করার কথা ছিল জিয়াউর রহমানের। কিন্তু তিনি তা না করে হত্যার সব ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করে পরিকল্পিতভাবে জাতির পিতাকে হত্যা করে।
জিয়াউর রহমানকে স্বাধীনতার ঘোষক বলা অবান্তর উল্লেখ করে তাজুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতার ঘোষণা দেওয়ার অধিকার বাঙালি জাতি একমাত্র বঙ্গবন্ধুকেই দিয়েছে। আর কেউ স্বাধীনতার ঘোষক হতে পারে না, সুযোগও নেই। মুখে ঘোষণা করলেই স্বাধীনতার ঘোষক হওয়া যায় না।
মন্ত্রী বলেন, ঢাকা শহরের প্রত্যেকটি খালের অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। খালের দুই পাড়ে বাঁধ দিয়ে ওয়াকওয়ে তৈরি করা হবে। একইসঙ্গে গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের আওতায় থাকা খালগুলো শিগগির সিটি করপোরেশনের কাছে হস্তান্তর করা হবে।
সেমিনারে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক উপ-কমিটির চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. মো. হোসেন মনসুরের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম। স্বাগত বক্তব্য দেন আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক এবং উপ-কমিটির সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর।
সেমিনারে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. মফিজুর রহমান। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন আইইবি ঢাকা কেন্দ্রের সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার কাজী খায়রুল বাশার। এ সময় উপ-কমিটির অন্য সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, জোন ভিত্তিক ইউটিলিটির দাম নির্ধারণ করতে হবে। কেননা, গুলশানে থাকা ব্যক্তি এবং যাত্রাবাড়ী থাকা ব্যক্তির জীবনযাপন এক রকম নয়। সে হিসেবে বিদ্যুৎ, গ্যাস ও পানির দাম নির্ধারণ করতে হবে।
ডিএনসিসি মেয়র মো. আতিকুল ইসলাম বলেন, কল্যাণপুরে ১৭৩ একর জমির মধ্যে ১৭০ একর জমি অবৈধ দখলে। শিগগির অবৈধ দখলদারদের উচ্ছেদ করা হবে। আর সেখানে ইকোপার্ক, ইয়ুথ ক্যাম্পসহ হাতিরঝিলের মতো লেক তৈরি হবে। আর বৃষ্টির পানি নামানোর জন্য এই লেক ব্যবহার করা হবে।
অবৈধ দখলদারদের হুঁশিয়ার করে আতিকুল ইসলাম বলেন, খাল দখল করে অবৈধভাবে ভবন তৈরি করেছেন। আপনারা নিজ ইচ্ছায় ভবন সরিয়ে নিন। না হয় আমরা সব ভেঙে ফেলব। শিগগির আমরা উচ্ছেদ কার্যক্রম শুরু করব।
আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ক সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুস সবুর বলেন, স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশের দায়িত্ব নেন। দেশকে উন্নত করতে নানান পরিকল্পনা গ্রহণ করেন। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর দেশকে অন্ধকারের দিকে ঠেলে দিয়েছিল প্রতিক্রিয়াশীল গোষ্ঠী। পরবর্তীতে বঙ্গবন্ধু কন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দায়িত্বভার গ্রহণের পর দেশকে একটি আধুনিক, সমৃদ্ধশালী দেশে রূপান্তরিত করতে কাজ করে যাচ্ছেন। বর্তমানে জলাবদ্ধতা ঢাকা শহরের অন্যতম প্রধান একটি সমস্যা। সেই সমস্যা সমাধানে কাজ করছে বর্তমান সরকার।