সচেতন না হলে শয্যা বাড়িয়েও সামাল দেওয়া যাবে না : স্বাস্থ্যমন্ত্রী
করোনাভাইরাস নিয়ন্ত্রণে সচেতনতার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রী জাহিদ মালেক। তিনি বলেন, করোনা পরিস্থিতি দিন দিন খারাপ হচ্ছে। মানুষ সচেতন না হলে হাসপাতালের শয্যা বাড়িয়েও পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাবে না। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের চিকিৎসায় সারা দেশে হাসপাতালগুলোতে ১৬ হাজার শয্যা রয়েছে। ইতোমধ্যে ৯০ ভাগ শয্যায় রোগী আছেন।
চলমান করোনা পরিস্থিতি নিয়ে আজ সোমবার সন্ধ্যায় মানিকগঞ্জের সরকারি কর্মকর্তা, জনপ্রতিনিধি, রাজনৈতিক ব্যক্তি ও গণ্যমাধ্যমকর্মীদের সঙ্গে ভার্চুয়ালি এক মতবিনিময় সভায় স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
জাহিদ মালেক বলেন, করোনার সংক্রমণ ঠেকানো স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ নয়। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে সঠিক চিকিৎসা দেওয়া। সংক্রমণ ঠেকাতে অন্য সব মন্ত্রণালয় কাজ করছে। দেড় বছর যাবত অদৃশ্য শক্তির সঙ্গে আমরা যুদ্ধ করছি। এখন আমাদের আরও সচেতন হতে হবে। স্বাস্থ্যবিধি ও সরকারের ঘোষিত লকডাউন মানতে হবে। গ্রামের হাট-বাজারে চায়ের দোকানে মানুষজনের আড্ডা বন্ধ করতে হবে।
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, স্বাস্থ্যবিধি নিয়ে গ্রামের মানুষের অনীহা রয়েছে। গ্রামের মানুষের ধারণা ছিল, তাদের করোনা হবে না। কিন্তু এখন গ্রামের মানুষের করোনা সংক্রমণের হার সবচেয়ে বেশি। সারা দেশে ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ে করোনা প্রতিরোধ কমিটিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে। করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির বাড়িতে লাল-পতাকা উত্তোলনের পাশাপাশি সচেতনতার জন্য নিয়মিত মাইকিং করতে হবে। সচেতনতার অভাবে করোনার সংক্রমণ বাড়ছে। করোনার নমুনা পরীক্ষা নিয়ে অনেকের মধ্যে অনীহা রয়েছে। করোনার উপসর্গ দেখা দিলে অবহেলা করা যাবে না। করোনার পরীক্ষা আরও বাড়াতে হবে।
জাহিদ মালেক বলেন, সারা দেশে চিকিৎসক, নার্স ও টেকনিশিয়ানসহ স্বাস্থ্য বিভাগে ৫০ হাজার লোকবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া আরও চিকিৎসক ও নার্স নিয়োগ দেওয়ার জন্য সব প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। করোনার কারণে নন-কোভিড রোগীদের যথাযথ চিকিৎসা দেওয়া যাচ্ছে না।
ভ্যাকসিন আনার জন্য বিভিন্ন দেশের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে বলে জানিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, চলতি মাসেই এক কোটি ভ্যাকসিন চলে আসবে। এ ছাড়া আগামী মাসে আরও এক কোটি ভ্যাকসিন আসার সম্ভাবনা রয়েছে। ভ্যাকসিন দেওয়ার পাশাপাশি আমাদের মাস্ক ব্যবহার ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হবে। অন্যথায় হাসপাতালে রোগীর জায়গা হবে না।
মানিকগঞ্জ জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ১০০ শয্যার কোভিড ডেডিকেটেড হাসপাতাল করা হয়েছে। সভায় জেলা সদর হাসপাতালের পুরোটাই কোভিড ডেডিকেটেট হাসপাতাল ঘোষণা দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। জেলার কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা দেওয়া হবে। এ ছাড়া সারা দেশে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সগুলোতে নন-কোভিড রোগীদের চিকিৎসা ব্যবস্থা জোরদার করা হবে বলে জানান স্বাস্থ্যমন্ত্রী।
ভার্চুয়ালি এ সভায় জেলা প্রশাসক মুহাম্মদ আবদুল লতিফের সভাপতিত্বে অংশ নিয়ে বক্তব্য দেন মানিকগঞ্জ-১ আসনের সাংসদ এ এম নাঈমুর রহমান দুর্জয়, মানিকগঞ্জ-২ আসনের সাংসদ মমতাজ বেগম, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান গোলাম মহীউদ্দীন, পুলিশ সুপার রিফাত রহমান, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সালাম, মানিকগঞ্জ পৌর মেয়র রমজান আলী, সিভিল সার্জন আনোয়ারুল আমিন আখন্দ, সাটুরিয়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মজিদ, সিঙ্গাইর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুশফিকুর রহমান, কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজের পরিচালক গৌতম রায়, মানিকগঞ্জ প্রেসক্লাবের সভাপতি গোলাম ছারোয়ার ছানু এবং মানিকগঞ্জ ডায়াবেটিক হাসপাতালের সাধারণ সম্পাদক সুলতানুল আজম খান আপেলসহ অনেকেই।