সব জারিজুরি ক্রমাগত ফাঁস হচ্ছে : রিজভী
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের উদ্দেশে বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, ‘হুঙ্কার দিয়ে লাভ নেই। আপনাদের সব জারিজুরি ক্রমাগত ফাঁস হচ্ছে।’ রহুল কবির রিজভী আজ শনিবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজভী বলেন, ‘নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবিতে ছয় মহানগরীর মহাসমাবেশ কর্মসূচিকে দেশের শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিনষ্টের ষড়যন্ত্র বলে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বিএনপির সমাবেশ শক্ত হাতে দমনের হুমকি দিয়েছেন। এই হুঙ্কার দিয়ে লাভ নেই। আপনাদের জারিজুরি সব ক্রমাগত ফাঁস হচ্ছে। জনগণের নিকট পরিষ্কার হয়ে গেছে—বর্তমান শাসন সম্পূর্ণরুপে গণতন্ত্রবিবর্জিত। রাইট টু অ্যাসেম্বলি সংবিধান স্বীকৃত। গণতান্ত্রিক অধিকার হচ্ছে সভা-সমাবেশ করা। আর সেই সভা-সমাবেশ বন্ধ করার হুমকি কোনো রাজনৈতিক নেতা দিতে পারেন না।’
তিনি বলেন, ‘গতকাল দেশের ছয় মহানগরে সমাবেশের জন্য কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন গত নির্বাচনে বিএনপি মনোনীত মেয়র প্রার্থীরা। এই সমাবেশের উদ্দেশ্য নির্বাচনি অনিয়মের প্রতিবাদ করা এবং নিরপেক্ষ নির্বাচনের দাবি জানানো। বিএনপির প্রতিটি সমাবেশ সুশৃঙ্খল ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয়। ওবায়দুল কাদের সাহেবের বক্তব্য প্রচণ্ড অবাক করেছে জনগণকে। সমাবেশের কথা শুনে তিনি বিচলিত হয়ে পড়েছেন। আসলে ওবায়দুল কাদের সাহেবরা এখন নিজেদের ছায়া দেখলেই ভয় পাচ্ছেন।’
রিজভী বলেন, ‘এক দশক ধরেই বাংলাদেশের অবস্থানের কোনো পরিবর্তন হয়নি। এক দশক ধরেই বাংলাদেশের নিজস্ব ভূমিতে গণতন্ত্রের শিকড় যাতে না গজাতে পারে এ জন্য আওয়ামী সরকার সকল শক্তি নিয়োগ করেছে। গুম, বিচার বহির্ভূত হত্যা ও লাখ লাখ মিথ্যা মামলার ছড়াছড়ি শুধু নয়, বিরোধী দলকে দমন ও গণমাধ্যমের কণ্ঠরোধ করার জন্য ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের মতো নানা কালাকানুন করে অমানবিক নিষ্ঠুরতার সীমাহীন আবর্তের মধ্যে দেশকে ঠেলে দিয়েছে। বর্তমানে শুধু বিরোধী দল ও মত নয়, সাংবাদিকদেরও কোনো নিরাপত্তা নেই, ডিজিটাল জগতে স্বাধীনভাবে প্রবেশের কোনো অধিকার নেই।’
রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘জাতীয়তাবাদী শক্তির অপরাজেয় জীবনীশক্তি, দেশপ্রেমিক মানুষকে যিনি উজ্জীবিত করে এসেছেন, শত নির্যাতনের মধ্যেও যিনি গণতন্ত্র অর্জনের প্রশ্নে স্বমহিমায় অটল-আপোষহীন অঙ্গীকার ব্যক্ত করেন, অন্যায়ের বিরুদ্ধে যাঁর অঙ্গীকারাবদ্ধ মুষ্টিবদ্ধ হাত আজও লাখো মানুষের হৃদয়ে সংগ্রামী চেতনা ছলকে ওঠে সেই নিপীড়িত-নির্যাতিত মজলুম নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে আজ প্রায় তিন বছর ধরে আটকে রাখা হয়েছে। গত ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারী তাঁকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়। গত মার্চে কারাগার থেকে বাড়িতে আনা হলেও তিনি মূলত গৃহবন্দি।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফৎ আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, সহ-দপ্তর সম্পাদক মো. মুনির হোসেন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।