সব দলের নয়, আগে নিজেদের ঐক্য প্রতিষ্ঠা করুন : তথ্যমন্ত্রী
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বিএনপি ও তাদের মিত্রদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘আপনারা সবসময় সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার কথা বলেন। কিন্তু নিজের দলের মধ্যে কোনো ঐক্য নাই। বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, সব দলের ঐক্য নয়, আগে নিজের দলের ঐক্য প্রতিষ্ঠিত করুন।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আরও বলেন, ‘বিএনপির নেতারা নাকি বলেছেন, অগণতান্ত্রিক সরকারের বিরুদ্ধে সব দলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যে বিএনপির জন্মটাই হচ্ছে অগণতান্ত্রিকভাবে, অবৈধভাবে। সেটা হাইকোর্টের রায়েও বলা হয়েছে। সেই দলটিই আবার অপরের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, এটি সত্যিই হাস্যকর।’
আজ শনিবার বিকেলে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বিশেষ সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে সহসভাপতি আবদুল মোনাফ সিকদারের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক ইঞ্জিনিয়ার শামসুল আলম তালুকদারের সঞ্চালনায় সভায় উপস্থিত ছিলেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ নেতা ও উপজেলা চেয়ারম্যান স্বজন কুমার তালুকদার, পৌরসভার মেয়র মো. শাহজাহান সিকদার, জামাল উদ্দিন, আবুল কাশেম চিশতি, কামরুল ইসলাম চৌধুরী, ইদ্রিছ আজগর, নজরুল ইসলাম তালুকদার, আকতার হোসেন খাঁন, উত্তর জেলা কৃষকলীগের সাধারণ সম্পাদক শফিকুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা আবু জাফর চেয়ারম্যান, লোকমানুল হক তালুকদার, ইকবাল হোসেন, মাস্টার আসলাম খাঁন, ইকবাল হোসেন চৌধুরী মিল্টন, নিজাম উদ্দিন বাদশা, এমরুল করিম রাশেদ, জসিম উদ্দিন তালুকদার, আবু তাহের, কামাল উদ্দিন চৌধুরী, আবদুল জব্বার, জাহেদুল আলম চৌধুরী আইয়ুব, আরিফুল ইসলাম চৌধুরী, কাউছার নূর লিটন প্রমুখ।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘রাঙ্গুনিয়ায়ও দেখুন, বিএনপি তিনভাগে বিভক্ত। কেন্দ্রীয়ভাবেও বিএনপির এই নেতা একটি কথা বলে, কিছুক্ষণ পর আরেক নেতা আরেকটি কথা বলেন। এভাবে তাদের নিজেদের মধ্যেও ঐক্য নাই। আবার তাঁরা সব দলের ঐক্যের কথা বলেন।’
“তাদের জোটভুক্ত একটি দল আছে ‘ঐক্য প্রক্রিয়া’। অর্থাৎ ঐক্য নাই বলে ঐক্য প্রক্রিয়া চালাতে চাচ্ছেন তাঁরা। সুতরাং বিএনপি ও তার মিত্রদের এসব বক্তব্য হাস্যকর। বিএনপিকে অনুরোধ জানাব, আগে নিজের দলের ঐক্য প্রতিষ্ঠা করুন, আমরাও চাই আপনারা ঐক্যবদ্ধ থাকুন এবং আমাদের বস্তুনিষ্ট সমালোচনাও করুন।”
তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী বলেন, ‘জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজকে বাংলাদেশ বদলে গেছে, স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মধ্যমআয়ের দেশে উন্নীত হয়েছে। খাদ্য ঘাটতির দেশ থেকে খাদ্য উদ্বৃত্তের দেশে রূপান্তরিত হয়েছে। একই সঙ্গে এই করোনাকালেও বাংলাদেশের মানুষের মাথাপিছু আয় বেড়েছে। পাকিস্তানকে আমরা অনেক আগেই ছাড়িয়েছি, বর্তমানে আমাদের মাথাপিছু আয় ভারতকেও ছাড়িয়ে গেছে। বর্তমানে বাংলাদেশের মানুষের এখন মাথাপিছু আয় দুই হাজার ২২৭ মার্কিন ডলার।’
আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘এই করোনাকালে যেখানে পৃথিবীর সবকটি দেশে মাথাপিছু আয় কমেছে, অর্থনীতি সংকুচিত হয়েছে, সেখানে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অর্থনীতির আকার বৃদ্ধি পেয়েছে। একই সঙ্গে মাথাপিছু আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। এটির জন্য বিএনপিসহ তার মিত্ররা একটু ধন্যবাদ জানাতে পারে নাই। সরকারকে ধন্যবাদ জানাতে লজ্জা লাগলেও দেশটাকে তো তারা ধন্যবাদ জানাতে পারতেন। দেশের জনগণকে তো ধন্যবাদ জানাতে পারতেন তারা, সেটিও করেনি।’
হাছান মাহমুদ আরও বলেন, ‘গ্রামীণ জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন। তাঁর বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে আজকে বাংলাদেশের প্রতিটি গ্রাম বদলে গেছে। আজ থেকে ১২ বছর আগে যে গ্রাম ছিল এখন আর সেই গ্রাম নেই। গ্রামের মেঠোপথ হারিয়ে গেছে। মেঠোপথ এখন ইট বিছানো কিংবা পিচঢালা পথে রূপান্তরিত হয়েছে। গ্রামে কুঁড়েঘর এখন আর সহজে খুঁজে পাওয়া যায় না। কুঁড়েঘরের জায়গায় হয়েছে টিনের চালা কিংবা পাকাঘর।’
মন্ত্রী বলেন, ‘১২ বছর আগের বাংলাদেশ আর বর্তমান বাংলাদেশের মধ্যে অনেক পার্থক্য। ১২ বছর আগের শহর আর আজকের শহরের মধ্যেও অনেক পার্থক্য। এই বদলে যাওয়া কোনো যাদুর কারণে হয়নি, জননেত্রী শেখ হাসিনার যাদুকরী নেতৃত্বের কারণে হয়েছে। নানাবিধ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ জনপদের উন্নয়নে তিনি কাজ করে যাচ্ছেন।’