সম্রাটের জামিন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করবে দুদক
ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগের বহিষ্কৃত সভাপতি ইসমাইল হোসেন চৌধুরী সম্রাটের জামিন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)। আজ বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন দুদকের আইনজীবী খুরশিদ আলম খান।
খুরশিদ আলম বলেন, আমরা সম্রাটের জামিন স্থগিত চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আশা করছি, আগামী সোমবার আদালতে এ আবেদন দাখিল করতে পারব।
অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) করা মামলাসহ মোট ৪টি মামলায় ৩২ মাস কারাভোগ করে গতকাল (১১ মে) বিকেল সাড়ে ৪টায় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিজন সেল থেকে জামিনে মুক্ত হয়েছেন সম্রাট।
সম্রাটের বিরুদ্ধে চারটি মামলার মধ্যে তিনটিতে আগেই তার জামিন হয়েছিল। সর্বশেষ গতকাল (বুধবার) অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে মামলায় ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৬ শুনানি শেষে তার জামিন মঞ্জুর করেন।
২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগে সম্রাটের বিরুদ্ধে ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার অভিযোগে বলা হয়, সম্রাট বিভিন্ন অবৈধ ব্যবসা ও অবৈধ কার্যক্রমের মাধ্যমে ২ কোটি ৯৪ লাখ ৮০ হাজার ৮৭ টাকা জ্ঞাত আয়বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করেছেন। অভিযোগ আছে, তিনি মতিঝিল ও ফকিরাপুল এলাকায় ১৭টি ক্লাব নিয়ন্ত্রণ করতেন এবং সেগুলোতে লোক বসিয়ে মোটা অঙ্কের কমিশন নিতেন। অনেক সময় ক্লাবগুলোতে ক্যাসিনো ব্যবসা পরিচালনা করতেন। তিনি অবৈধভাবে উপার্জিত অর্থ দিয়ে ঢাকার গুলশান, ধানমন্ডি ও উত্তরাসহ বিভিন্ন স্থানে একাধিক ফ্ল্যাট, প্লট কিনেছেন ও বাড়ি নির্মাণ করেছেন। এ ছাড়া তার সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, দুবাই ও যুক্তরাষ্ট্রে নামে-বেনামে এক হাজার কোটি টাকার সম্পদ রয়েছে।
মামলাটি তদন্ত করে ২০২০ সালের ২৬ নভেম্বর সম্রাটের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র (চার্জশিট) দাখিল করেন দুদকের উপ-পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম। গত ২২ মার্চ অভিযোগপত্রটি গ্রহণ করেন ঢাকা মহানগর সিনিয়র স্পেশাল জজ কেএম ইমরুল কায়েশ। অভিযোগ গঠন শুনানির তারিখ ঠিক করে মামলাটি বিশেষ জজ আদালত-৬ এ পাঠানো হয়।
উল্লেখ্য, ২০১৯ সালের ৬ অক্টোবর ভোরে কুমিল্লার চৌদ্দগ্রামের আলকরা ইউনিয়নের কুঞ্জুশ্রীপুর গ্রামে আত্মগোপনে থাকা সম্রাটকে গ্রেপ্তার করা হয়। তার সঙ্গে আরমানকেও গ্রেপ্তার করা হয়। পরে ঢাকায় এনে তাদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদও করে র্যাব।
ওই দিন দুপুর ১টা ৪০ মিনিটে র্যাবের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলমের নেতৃত্ব একটি দল কাকরাইলে ভূঁইয়া ট্রেড সেন্টারে সম্রাটের কার্যালয়ে অভিযান শুরু করে। এদিন নিজ কার্যালয়ে পশুর চামড়া রাখার দায়ে তার ছয় মাসের জেল দিয়ে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট সারওয়ার আলম। এরপর সম্রাটকে কারাগারে পাঠানো হয়।