সরকারের আয়ু কমে গেছে : মির্জা আব্বাস
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ‘আজকে দানবীয় সরকার আমাদের ওপর জোর করে চেপে বসেছে। এ থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আমরা সকলে একযোগে রাস্তায় নেমেছি। আমরা মনে করি, আমাদের সম্মিলিত আন্দোলনের মাধ্যমে এদেশে বাকস্বাধীনতা এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনতে পারব। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনসহ সকল কালাকানুন দেখে মনে হচ্ছে সরকারের আয়ু কমে গেছে।’
আজ রোববার (১৬ এপ্রিল) রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে রাজনীতিক, কূটনীতিক ও পেশাদারদের সম্মানে গণঅধিকার পরিষদ আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিলের আলোচনায় মির্জা আব্বাস এসব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘যেকোনো কিছুর বিনিময়ে সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার চেষ্টা করবে। আমরাও যেকোনো কিছুর বিনিময়ে এই দানব সরকারকে ক্ষমতা থেকে হটাব। আমাদের দাবি, এই সরকার হটাও, দেশ বাঁচাও।’
আলোচনায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেন, ‘আর কতদিন আমাদের মাথা নিচু করে চলতে হবে। লাল পতাকা শক্ত করে আঁকড়ে ধরতে হবে। দেশের স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্ব এবং ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে লড়াই করতে হবে।’
অনুষ্ঠানে জেএসডির সভাপতি আ স ম আব্দুর রব বলেন, ‘মানুষের আহাজারি বাড়ছে, কিন্তু সরকার দর্শকের ভূমিকায়। সরকার কূটনৈতিক রীতিনীতি ভঙ্গ করে বহির্বিশ্ব নিয়ে যে বক্তব্য দিচ্ছে তা নীতি বিবর্জিত। রাজনীতির স্বার্থে নয়, দেশের স্বার্থে, জনগণের স্বার্থে রাজপথে নামতে হবে, স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করতে হবে।’
আলোচনায় নাগরিক ঐক্যের সভাপতি মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘দেশ এখন গভীর সংকটে। পর পর ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ড ঘটছে, ক্ষমতাসীন দলের ঘরের ভেতরেও আগুন লেগেছে। সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী বলেছেন—তার বিরুদ্ধে নাকি ষড়যন্ত্র হচ্ছে, ষড়যন্ত্র করে নাকি অদল-বদল করে দিতে পারে। পাপ চাপা থাকে না, খুন ও গুমের কথা শুধু দেশবাসী নয়, সারা বিশ্ব অবগত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোজার মধ্যে নাকি আমরা জনগণকে স্বস্তি দেই না। আমরা বলছি—আপনি নিজেই স্বস্তিতে নেই।’
গণধিকার পরিষদের সদস্য সচিব নুরুল হক নুর বলেন, ‘যে অধিকার ও বৈষম্যের প্রতিবাদে স্বাধীনতার যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরেও আজ সেই মানবাধিকার ও গণতন্ত্রের জন্য লড়াই-সংগ্রাম করতে হচ্ছে। গত ১৪ বছরে প্রমাণিত হয়েছে দলীয় সরকারের অধীনে সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়।’
গণঅধিকার পরিষদের আহ্বায়ক ড. রেজা কিবরিয়ার সভাপতিত্বে আয়োজক সংগঠনের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ খানের সঞ্চালনায় এসময় আরও বক্তব্য দেন জাপার একাংশের চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মে. জে. অব. সৈয়দ মুহম্মদ ইবরাহীম প্রমুখ।
এ সময় ব্রিটিশ হাই কমিশনের রাজনৈতিক সচিব টমবার্গ, মার্কিন দূতাবাসের পলিটিক্যাল অফিসার ম্যাথিউ বে, ভারতীয় দূতাবাসের প্রেস মিনিস্টার রাজেশ অগ্নিহোত্রী উপস্থিত ছিলেন।
এ ছাড়া আলোচনাসভায় উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায়, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, বরকত উল্লাহ বুলু, যুগ্ম মহাসচিব ব্যারিস্টার মাহবুব উদ্দিন খোকন, কেন্দ্রীয় নেতা ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন, জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক হেলাল উদ্দিন, গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি, এনপিপি চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বাংলাদেশ ন্যাপ চেয়ারম্যান জেবেল গণি চৌধুরী, মহাসচিব গোলাম মোস্তফা ভূইয়া, জাতীয় দলের চেয়ারম্যান সৈয়দ এহসানুল হুদা, লেবার পার্টি চেয়ারম্যান মুস্তাফিজুর রহমান ইরান প্রমুখ।