সরকারের লুটপাটের জন্য সাধারণ মানুষ অসহায় : রিজভী
বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী বলেছেন, আজকে যার হাতে শাসনভার থাকার কথা, যিনি প্রধানমন্ত্রী থাকার কথা, তাকেই নিশিরাতের সরকার নিপীড়ন করছে। বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া দেশের নির্বাচিত সাবেক প্রধানমন্ত্রী। তিনি জনগণের নেত্রী। আজকে তিনি প্রধানমন্ত্রী থাকার কথা। কিন্তু তাকে মিথ্যা ও বানানো মামলায় কারাবন্দি করা হয়েছে। সরকারের লুটপাটের জন্য সাধারণ মানুষ আজ অসহায়।
আজ মঙ্গলবার বিকেলে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় জিয়া পরিষদ আয়োজিত অসুস্থ বেগম খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
সংগঠনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. আবদুল কুদ্দুসের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে অংশ নেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, জিয়া পরিষদের অধ্যাপক লুৎফর রহমান, ড. এমতাজ হোসেন, আবদুল্লাহিল মাসুদ, আবুল কালাম আজাদ, প্রকৌশলী রুহুল আলম, ড. মোহাম্মদ আবু জাফর, মো. শহীদুল ইসলাম, প্রকৌশলী শরীফুজ্জামান, অধ্যাপক ড. মো. নূরুল ইসলাম প্রমুখ।
সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে রুহুল কবির রিজভী বলেন, শীর্ষ সন্ত্রাসীরা যেভাবে মুক্তিপণ আদায় করে। সেভাবে শেখ হাসিনা খালেদা জিয়াকে বন্দি করে গোটা দেশের মানুষের কাছ থেকে মুক্তিপণ আদায় করছেন। আজকে পদ্মা সেতু নির্মাণ করে গর্ব করছেন। কই বিএনপির শাসনামলে তো লালন শাহ সেতু হয়েছে। আমরা তো ঢাকঢোল পেটাইনি। আজকে সরকার বাজেট দিয়েছে। কিন্তু দেশের মানুষ যে এক বেলা না খেয়ে থাকে, আধাবেলা না খেয়ে থাকে, তা কি শেখ হাসিনা জানে? তাদের মেগালুটের কারণে এই অবস্থা তৈরি হয়েছে। শিক্ষিত বেকারের সংখ্যা বাড়ছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বেড়েছে কয়েকগুণ। এসব কি শেখ হাসিনা জানেন? জানবে কি করে ? তাঁর লোকেরা তো বছরে কোটি কোটি টাকা বিদেশে পাচার করছেন। এখন তারা পাচারকৃত অর্থ ফিরিয়ে আনার নামে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিয়েছেন। এটা অনৈতিক ঘোষণা দিয়েছেন।
তিনি বলেন, আজকে সাধারণ মানুষের মনে পদ্মা সেতু নিয়ে কোনো আগ্রহ নেই। তাদের মাথাব্যথা দুই বেলা খাবার যোগাড় করা নিয়ে। তারা পদ্মা সেতুর হাজার পাওয়ারের বাল্ব জ্বালানো নিয়ে উৎসাহী না। এই সরকারের আমলে কোনোদিন সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। এটা সবাই জানে। এই নির্বাচন কমিশনও শেখ হাসিনার রান্না ঘরের নির্বাচন কমিশন। অর্থাৎ আওয়ামী লীগ ভোট চুরি করবে, ব্যালট ছিনতাই করবে আর সেই অপকর্ম পাহারা দিবে নির্বাচন কমিশন। সে জন্যই সাধারণ মানুষ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছে। সুতরাং এই সরকারের অধীনে কখনোই সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকার ছাড়া দেশে কোনো নির্বাচন হবে না।
রিজভী বলেন, বেগম খালেদা জিয়া অত্যন্ত অসুস্থ। আমরা তার আশু রোগমুক্তি কামনা করছি। সেইসাথে আল্লাহর কাছে দোয়া করি তিনি যেন সুস্থ হয়ে ওঠেন। কেননা খালেদা জিয়া কখনো অন্যায়ের কাছে এবং ওয়ান ইলেভেনের সময় তিনি কোনো চাপে মাথা নত করেননি। দেশত্যাগে কঠোর চাপ প্রয়োগ করা হলেও তিনি তা করেননি।
শ্রমিক দলের দোয়া মাহফিল
এদিকে আজ মঙ্গলবার সকালে নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচতলায় খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল। এসময় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসাইন, বিএনপির কেন্দ্রীয় নেতা হুমায়ুন কবির খান, কাজী রওনাকুল ইসলাম টিপু, শ্রমিক দলের আবুল খায়ের খাজা, মোস্তাফিজুল করিম মজুমদার, মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, ওলামা দলের শাহ মো. নেছারুল হকসহ শতাধিক নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
জাগপার দোয়া মাহফিল
এছাড়া বিশদলীয় জোটের প্রধান ও বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল করেছে ঢাকা মহানগর জাগপা। বাদ আসর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে দোয়া মাহফিলপূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে জাগপার সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর রহমান বলেন, বেগম খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ। অবিলম্বে বিদেশে তার উন্নত চিকিৎসা প্রয়োজন। কিন্তু সরকার তাঁকে বিদেশে যাওয়ার অনুমতি দিচ্ছে না। অথচ দেশের গণতন্ত্র রক্ষার জন্য সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য নাম বেগম খালেদা জিয়া। চলমান আন্দোলনে আজকে তাঁকে আমাদের খুব দরকার। দোয়া মাহফিলে উপস্থিত ছিলেন- জাগপার ডা. আওলাদ হোসেন শিল্পী, মোহাম্মদ শাহাজাদা, মোহাম্মদ হুসাইন মোবারক, যুব জাগপার মীর আমির হোসেন আমু, এজাজ আহমেদ প্রমুখ।