সরকার কিছু সংস্থাকে দলীয়করণ করেছে : নজরুল
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, ‘সরকার কিছু সংস্থাকে দলীয়করণ ও আত্মীয়করণ করে এমন করে ফেলেছে যে, তারা সংবিধান অনুযায়ী আচরণ করে না। তারা দলীয় নেতাকর্মীর মতো আচরণ করে। এই অবস্থার পরিবর্তন করতে হবে।’
আজ বৃহস্পতিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের নিচে জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল আয়োজিত খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলে অংশ নিয়ে নজরুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
বিএনপিনেতা বলেন, ‘সংবিধানে লেখা আছে- রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম। কিন্তু আমরা কী অদ্ভূত এক রাষ্ট্রে বসবাস করছি যেই রাষ্ট্রের একজন মন্ত্রী বলেন, আমি মানি না। মন্ত্রী, এমপিরা শপথ গ্রহণ করে সংবিধান সুরক্ষার জন্য। তারা যদি সংবিধান অমান্য করেন তাৎক্ষণিক তার বিচার হওয়া দরকার। কিন্তু এখন পর্যন্ত সেই বিচার না করার ফলে শুধু মন্ত্রী না সংবিধান অমান্যের অভিযোগে এই সরকার অভিযুক্ত হয়েছে। কিন্তু সেজন্য তারা লজ্জিতও হবে না ও সংবিধান অনুযায়ী যেটা করা দরকার পদত্যাগ সেটাও করবেন না।
নজরুল ইসলাম বলেন, ‘একটি দল এ দেশের গণতন্ত্রকে হত্যা করে একদলীয় শাসন ব্যবস্থা কায়েম করেছিল। সেখান থেকে আমাদের নেতা বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বহুদলীয় গণতন্ত্র ফিরিয়ে দিয়েছিল। আবার আমাদের দেশে এক সামরিক স্বৈরশাসক গণতন্ত্র হত্যা করেছিল। দীর্ঘ নয় বছর আপোষহীন লড়াই করে আমাদের নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়া পুনরায় গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠা করেছে। আমরা সেই দল যেই দল সংবাদপত্রের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছি, বিচার বিভাগের স্বাধীনতা ফিরিয়ে দিয়েছি এবং সব শ্রেণি-পেশার মানুষের কল্যাণের ব্যাবস্থা করেছি।’
বিএনপির এই নীতি-নির্ধারক বলেন, ‘আজকে গণতন্ত্রহীন বাংলাদেশ এমন একটি দল শাসন করছে যারা এক নির্বাচনে ৩০০ এর মধ্যে ১৫৩টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নিজেদেরকে নির্বাচিত করেছে। আরেক নির্বাচনে ভোটের দিনের আগের রাত্রেই তারা ভোটের বাক্স ভর্তি করে ফেলেছে। এরা যত দিন ক্ষমতায় থাকবে তত দিন পর্যন্ত এদেশের মানুষের ভোটের যে গণতান্ত্রিক অধিকার সেই অধিকার ফিরে আসবে না। তত দিন পর্যন্ত জনগণ তার পছন্দের সরকার নির্বাচিত করতে পারবে না।’
বিএনপিনেতা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক একটি রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা কোনো ষড়যন্ত্রে বিশ্বাস করি না। কোনো সন্ত্রাসে বিশ্বাস করি না। আমরা গণআন্দোলনের মাধ্যমে যেমন স্বৈরশাসক এরশাদের পতন ঘটিয়েছি, ’৬৯-এ যেভাবে আইয়ুব খানকে হটাতে পেরেছি ঠিক একইভাবে ইনশাআল্লাহ এই সরকারকেও হটাতে পারব।’
অনুষ্ঠানে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির আহ্বায়ক আব্দুস সালাম বলেন, ‘খালেদা জিয়াকে যদি মুক্ত করতে হয়, তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনতে হয় এবং দেশকে যদি রক্ষা করতে হয় তবে এই সরকারের পতন ঘটানোর কোনো বিকল্প নাই। তাই আজ গণতন্ত্রকে মুক্ত করতে হবে আর গণতন্ত্র মুক্ত হবে খালেদা জিয়া মুক্ত হলে।’
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মজিবর রহমান সারোয়ার বলেন, ‘দেশনেত্রী খালেদা জিয়া মুক্ত হলে দেশের সব সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে। তাকে মুক্ত করে গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। তাই দেশের সুশাসন ও আইনের শাসনের জন্য গণতান্ত্রিক সরকার দরকার।’
শ্রমিকদলের কেন্দ্রীয় সভাপতি আনোয়ার হোসাইনের সভাপতিত্বে এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির সহশ্রমবিষয়ক সম্পাদক হুমায়ুন কবির খান, শ্রমিকদলের সহসভাপতি মেহেদী হাসান খান, যুগ্ম সম্পাদক মুস্তাফিজুল করিম মজুমদার, প্রচার সম্পাদক মঞ্জুরুল ইসলাম মঞ্জু, ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সভাপতি কাজী আমীর খসরু, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব আলম বাদল, সিনিয়র সহসভাপতি সুমন ভুঁইয়া প্রমুখ।