সরকার জনমতের বিপক্ষে কাজ করবে না, সিআরবি প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী
চট্টগ্রামের ফুসফুস খ্যাত কেন্দ্রীয় রেলওয়ে ভবনে (সিআরবি) ‘পরিবেশ ধ্বংস করে’ বেসরকারি সংস্থার হাসপাতাল নির্মাণ প্রসঙ্গে তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, সরকার জনগণের মতামতের বিরুদ্ধে কোনো কাজ করবে না।
আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে সাংবাদিক ইউনিয়নের সদস্যদের মধ্যে কল্যাণ ট্রাস্টের চেক বিতরণ অনুষ্ঠানে তথ্যমন্ত্রী এ কথা বলেন। এ সময় তিনি আশ্বস্ত করেন, বিষয়টি নিয়ে উপযুক্ত স্থানে উপস্থাপন করবেন।
তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমি জানি; চট্টগ্রাম সিআরবি নিয়ে সাধারণ মানুষের মধ্যে ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে। আপনারা জানেন, প্রধানমন্ত্রী পরিবেশ সংরক্ষণ, জলবায়ু ঝুঁকি মোকাবিলার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা রাখায় চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ পুরস্কার পেয়েছেন। সিআরবি একটি নান্দনিক ও ঐতিহাসিক জায়গা। সেখানে পরিবেশ নষ্ট হোক, গাছপালা কাটা হোক—সেটা আমিও ব্যক্তিগতভাবে চাই না। সেখানে পরিবেশ নষ্ট করে সরকার জনগণে মতের বিপক্ষে কোনো কাজ কখনোই করবে না। আমি বিষয়টি যথাযথ স্থানে উপস্থাপন করব।’
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুসারে, চট্টগ্রামের সেন্ট্রাল রেলওয়ে বিল্ডিং-সিআরবির ছয় একর জমিতে ৫০০ শয্যার বিশেষায়িত হাসপাতাল এবং ১০০ শয্যার মেডিকেল কলেজ নির্মাণে এক বেসরকারি কোম্পানির সঙ্গে গত ১৮ মার্চ একটি চুক্তি করে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। অথচ এই ভবনটি ঐতিহাসিক স্থাপনা ও পরিবেশগত সংরক্ষিত এলাকা হিসেবে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের তৈরি করা তালিকায় রয়েছে। ফলে সিআরবির ঐতিহাসিক গুরুত্ব রয়েছে। এ ছাড়া সিআরবি এলাকায় প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করলে শতবর্ষী অনেক পুরোনো গাছ কাটতে হবে। এতে পরিবেশগত মারাত্মক প্রভাব পড়বে। তাই সিআরবিকে সংরক্ষণ করা জরুরি বলে অভিমত পরিবেশবাদীদের।
সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণ না করে অন্য কোনো উপযুক্ত স্থানে নির্মাণের জন্যও বলেছেন বিক্ষুব্ধরা। বিষয়টি নিয়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও আলোচনা-সমালোচনা হচ্ছে। এ নিয়ে বুদ্ধিজীবীরা বিবৃতি দিয়েছেন। একটি প্রতিষ্ঠান আইনি নোটিশও পাঠিয়েছেন। এরকম একটি পরিপ্রেক্ষিতে সিআরবিতে হাসপাতাল নিয়ে কথা বললেন তথ্যমন্ত্রী।
অনুষ্ঠানে চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের (সিইউজে) সভাপতি মোহাম্মদ আলী, সাধারণ সম্পাদক ম শামসুল ইসলাম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সভাপতি আলী আব্বাস, সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠান শেষে সিইউজের ৪৪ জন সাংবাদিকের হাতে বাংলাদেশ সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টের চেক তুলে দেন তথ্যমন্ত্রী।