সরকার নিজের গর্ত নিজেই খুঁড়ছে : রিজভী
সরকার নিজের গর্ত নিজেই খুঁড়ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আজ শনিবার দুপুরে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন।
সংবাদ সম্মেলনে রুহুল কবির রিজভী বলেন, ‘দৃঢ়তার সঙ্গে বলতে চাই, জনগণের কাছে শাক দিয়ে মাছ ঢেকে লাভ নেই। সরকার নিজের গর্ত নিজেই খুঁড়ছে। এই সরকার বেশিদিন টিকে থাকবে না। পৃথিবীতে কোনো ফ্যাসিবাদ টিকে থাকেনি। এই নির্দয় ফ্যাসিবাদী সরকারও টিকবে না। জবরদস্তি করে জনগণের ঘাড়ে চেপে বসে থাকার দিন শেষ হবে অচিরেই।’
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের কথা শুনলে জনগণ টিভি চ্যানেল বদলে দেয় বলে মন্তব্য করেছেন রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের প্রতিদিন একটি করে সংবাদ সম্মেলন করেন। আর এই সংবাদ সম্মেলনের একটাই বিষয় বিএনপির বিরুদ্ধে আজগুবি, কল্পিত সব মিথ্যাচার ও কুৎসা উদগীরণ করা। মিথ্যা বলতে বলতে সত্য ভুলে গেছেন তিনি। জনগণ তাঁর কথা শুনলে টিভির চ্যানেল বদলে দেয়।’
রিজভী বলেন, “সব তাদের হওয়ার পরও প্রতিদিন তাদের কেন বিএনপির বিরুদ্ধে বলতে হচ্ছে? কেন বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা শহিদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাতে হচ্ছে? কেন ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে চলছে অব্যাহত ষড়যন্ত্র? কেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দেশনায়ক তারেক রহমানের বিরুদ্ধে চলছে প্রতিনিয়ত কুৎসা রটানো? কারণ, স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র অর্জনে বিএনপির যে অবদান আছে, সেটি আওয়ামী লীগের নেই।”
রুহুল কবির রিজভী আরো বলেন, ‘গুম, খুন, অপহরণ, ধর্ষণ, সন্ত্রাস ও জুয়া-জোচ্চুরি চালিয়ে রাষ্ট্রে এক ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে জনগণকে স্তব্ধ করার চেষ্টা চলছে। আইন-প্রশাসন ও আদালতকে নিজেদের মতো করে সাজিয়ে জনগণের নাগরিক স্বাধীনতাকে হরণ করছে। সুতরাং সরকার জবরদস্তিমূলকভাবে গণমাধ্যমকে নিয়ন্ত্রণ করে যতই নিজেদের সাফল্যগাঁথা প্রচার করুক, জনগণ এসব বিশ্বাস করে না। জনগণ অবশ্যই এই সরকারের পতন ঘটানোর জন্য ঘুরে দাঁড়ানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে।’
বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘এ দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় নেত্রী দেশনেত্রী খালেদা জিয়াকে সম্পূর্ণ বিনা দোষে মিথ্যা মামলা দিয়ে আটক করে রাখা হয়েছে বছরের পর বছর ধরে। তিনি এখন বাসায় থাকলেও প্রকৃতপক্ষে তিনি মুক্ত নন। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, উনার সাজা স্থগিত করা হয়েছে। সাজা স্থগিত হলে তো তাঁর ওপর কোনো বিধি-নিষেধ থাকার কথা না। পার্থক্যটা হচ্ছে, শুধু হাসপাতালের প্রিজন সেল থেকে তাঁকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। চারবারের সাবেক প্রধানমন্ত্রী, যিনি দীর্ঘদিন ধরে অসুস্থ, তাঁর ওপর জুলুমের যেন শেষ হচ্ছে না। সরকার দেশনেত্রীকে ভয় পায়। কারণ তিনি সম্পূর্ণ মুক্ত থাকলে সরকারের লাগামহীন লুটপাট-অপকর্মে বিপত্তি ঘটবে। দেশনেত্রীর মুক্তি না হলে গণতন্ত্রের মুক্তি ঘটবে না। দেশবাসীর মুক্তি মিলবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির যুগ্ম-মহাসচিব খায়রুল কবির খোকন, সাংগঠনিক সম্পাদক ফজলুল হক মিলন, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আযাদ, সেলিমুজ্জামান সেলিম, আব্দুল খালেক প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।