সরকার ১০ ডিসেম্বরের আগে ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় : মির্জা আব্বাস
মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তারের মধ্য দিয়ে ভীতিকর পরিস্থিতি তৈরি করে ১০ ডিসেম্বর গণসমাবেশ দমানো যাবে না বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেছেন, ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশের আগে মামলা, হামলা ও গ্রেপ্তার করে একটি ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি করতে চায় সরকার। কিন্তু বিএনপির নেতাকর্মীরা ভীত নয়। যেকোনো ধরনের সন্ত্রাসের মোকাবিলা করে আমরা সমাবেশ সফল করবো ইনশাআল্লাহ।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে আজ সোমবার দুপুরে মির্জা আব্বাস এ সব কথা বলেন।
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘সাম্প্রতিক নয়াপল্টন পার্টি অফিসের সামনে ককটেল ফাটিয়েছিল এবং এই ধরনের কাজগুলো সরকার নিজে থেকে ঘোষণা দিয়েছিল যে, সন্ত্রাস হবে সন্ত্রাস হবে। দেশবাসীকে অবগত করতে চাই, আমরা একটি শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব। এই সমাবেশে আমাদের পরবর্তী কার্যক্রম হয়তো ঘোষণা আসতে পারে।’
বিএনপির স্থায়ী কমিটির এই সদস্য বলেন, ‘সমাবেশ সফল করার জন্য যে কাজগুলো করা দরকার তা করতে পারবো না— এরকম কোনো নিষেধাজ্ঞা তো সরকার দেয়নি। তারপরও আমাদের নেতারা রাতে বাসায় থাকতে পারছে না। গণসমাবেশ সফল করার জন্য প্রচারণায় হামলা করা হচ্ছে। সরকার সন্ত্রাসমূলক আচরণ করছে আমাদের সাথে। আর তারা বারবার বলছে বিএনপির সন্ত্রাস করে। আমরা শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করব সেখানে আমরা সন্ত্রাস করতে যাব কেন।’
সরকারের কাছে প্রশ্ন রেখে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমরা কেন সন্ত্রাস করতে যাব সেটা আমাদের মাথায় আসছে না। সন্ত্রাসী কার্যক্রমের মাধ্যমে সারা দেশে যেটা করেছে, কিন্তু গতকাল ইঞ্জিনিয়ার ইশরাকের ওপর হামলা চালিয়ে তারা প্রমাণ করেছে যে, সন্ত্রাসী কার্যক্রম তারাই করছে।’
মির্জা আব্বাস বলেন, ‘আমার বাসায় সকালে একটি কর্মিসভা করার কথা ছিল। যেখানে আমি কথা বলি একটি দিকনির্দেশনা দেব শান্তিপূর্ণ সমাবেশের বিষয়। সেটা আমাদের করতে দেওয়া হয়নি। বাড়ির চারদিকে সিভিল ও পোশাকধারী পুলিশ ঘিরে ফেলল। আমাদের সিদ্ধান্ত রয়েছে পল্টনেই সমাবেশ করব। তারপর আমরা সরকারের বিবেচনা ছেড়েছি, আশা করব তারা বিবেচনা করবেন এবং আমাদের শান্তিপূর্ণ সমাবেশে কোনো বাধার চেষ্টা করবে না।’
ঢাকার কোনো সমাবেশে বিভিন্ন জেলা এবং বিভাগ থেকে যেসব নেতাকর্মী আসবেন বলে সরকার ধারণা করছেন সেই সব এলাকায় হামলা করা হচ্ছে। ঢাকা জেলা বিএনপির সভাপতি আবু আশফাকের বাসায় হামলা করা হয়েছে দাবি করেন মির্জা আব্বাস।
এক প্রশ্নের জবাবে আব্বাস বলেন, ‘সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তুরাগ নদের তীর ব্যতীত রাজধানীর মধ্যে সন্তোষজনক আমরা যেটা নিরাপত্তা মনে করবো সেরকম স্থান যদি তারা আমাদের বলে তাহলে আমরা চিন্তা করে দেখব। যদি না পারে তাহলে আমাদের বললে আমরা স্থানের কথা জানিয়ে দেব।’
সারা দেশে সমাবেশগুলোতে বাধা ছাড়া দেওয়া হয়েছে কিন্তু ঢাকায় সন্ত্রাসী কার্যক্রম করলে বিএনপিকে ছাড় দেওয়া হবে না ওবায়দুল কাদেরের এমন বক্তব্যের জবাবে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ কাউকে ইজারা দেওয়া হয়নি। সভা করা, সমাবেশ করা আমার সাংবিধানিক অধিকার। এখানে উনি ছাড় দেওয়ার কে?’
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমান উল্লাহ আমান, আব্দুস সালাম, প্রচার সম্পাদক শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম আজাদ, চেয়ারপারসনের বিশেষ সরকারি শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, ঢাকা দক্ষিণ বিএনপির সদস্য সচিব রফিকুল আলম মজনু, স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু ও ঢাকা দক্ষিণের ইঞ্জিনিয়ার ইশরাক হোসেন প্রমুখ।