সাঁথিয়ায় আশ্রয়ণ প্রকল্পের দুর্নীতি ঢাকতে নতুন ‘ফন্দি’
পাবনার সাঁথিয়া উপজেলার মাঝগ্রামের অসহায় দুস্থদের জন্য নির্মিত ঘর আবার দুই ফিট উঁচু করা হচ্ছে। এ ধরনের কাজ পাবনাসহ বিভিন্ন উপজেলায় হওয়ায় গঠিত হয়েছে তদন্ত কমিটিও।
বিষয়টি নিয়ে এলাকার মানুষের মধ্যে আরও কৌতুহলের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকে এটিকে দুর্নীতি ঢাকতে নতুন ফন্দি বলে মনে করছেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব রহমানের জন্মশতবর্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আশ্রয়ণ-২ এর আওতায় পাবনার সাঁথিয়ায় হতদারিদ্র গৃহহীনদের প্রথম পর্যায়ে ৩৭১টি ঘর দেওয়া হয়েছে। এরই মধ্যে ঘরগুলোতে অধিকাংশই পরিবার বসবাস শুরু করেছে। পরবর্তী সময়ে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের ঘর নির্মাণে অনিয়মের অভিযোগ ওঠে।
সারা দেশে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের ঘরের দুর্নীতির তদন্তের কথা শুনে সাঁথিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও আশ্রয়ণ প্রকল্পের সভাপতির নির্দেশে ঘর ভেঙে দুই ফুট উঁচু করে আবার ঘর নির্মাণ শুরু করেছেন। গতকাল শুক্রবার সাঁথিয়া উপজেলা ক্ষেতুপাড়া ইউনিয়নের মাঝগ্রামের ১০টি ঘরের চাল খুলে ফেলা হয়। এর আগে ঘরগুলোর বাসিন্দাদের পাশে নতুন করে করা ১২টি ঘরে কিছু দিনের জন্য স্থানান্তর করা হয়।
গতকাল বিকেলে সরেজমিনে মাঝগ্রামে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচটি ঘর ছাড়া সব কয়টি ঘরের চালা খুলে ফেলা হয়েছে। বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়া হয়েছে। চালাগুলো পাশে রেখে দেওয়া হয়েছে।
আট নম্বর ঘরের বাসিন্দা নাজমা খাতুন জানান, ঘর দুই ফুট উঁচু কম হওয়ায় আবার চাল সরিয়ে উচ্চতা বৃদ্ধি করা হবে। ঘর নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। নির্মাণের পর থেকেই ছোঁয়া লাগলেই পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে। চাল খোলার সময় ঘরের বারান্দার পিলার ভেঙে পড়েছে। ঘরের উচ্চতা বৃদ্ধির জন্য পাশেই স্তুপ করে রাখা হয়েছে ইট। যা ব্যবহার হবে ঘরের দেওয়ালে।
বিনা খাতুন ও খুশি খাতুন নামের আরও দুই বাসিন্দা এনটিভি অনলাইনকে জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া ঘর পেয়ে তারা নতুন করে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখছে। এ স্বপ্ন ঘর পাবার আগে কখনও দেখেনি। তবে তারা নিম্নমানের কাজের জন্য বিপদের মধ্যে রয়েছেন বলে জানান। তাদের দাবি, সামান্য বৃষ্টি হলে চাল দিয়ে পানি পড়ে, ছাগলের দড়িতে টান লাগলে পলেস্তারা উঠে যাচ্ছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) এস এম জামাল আহমেদ এনটিভি অনলাইনকে জানান, জেলা প্রশাসকসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে ঘর ভেঙে সামান্য উঁচু করা হচ্ছে। এ ছাড়া ছোটখাটো কিছু ত্রুটি বিচ্যুতি থাকায় সেগুলো সংশোধনের জন্য মেরামত করা হচ্ছে।
ইউএনও আরও জানান, পাবনার জেলা প্রশাসক বিশ্বাস রাসেল হোসেন আজ শনিবার নতুন করে মেরামতের কাজও পরিদর্শনও করেছেন।