সাংবাদিক রোজিনার রিমান্ড আবেদন নাকচ
অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্টের মামলায় প্রথম আলোর জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক রোজিনা ইসলামকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পুলিশের রিমান্ডের আবেদন নাকচ করে দিয়েছেন আদালত। তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দিয়েছেন আদালত। তবে তাঁর জামিনের ব্যাপারে পরে শুনানি অনুষ্ঠিত হবে।
আজ মঙ্গলবার রোজিনাকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) আদালতে হাজির করে পুলিশ পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়ার আবেদন করে। অপরদিকে রোজিনার আইনজীবী রিমান্ড বাতিল করে জামিনের আবেদন করেন। শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ জসিম রিমান্ড আবেদন নাকচ করে দিয়ে তাঁকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এদিকে এই মামলার শুনানি উপলক্ষে আজ সকাল থেকেই পুলিশ সিএমএম আদালতের বাইরে কঠোর অবস্থানে নেয়। আদালত চত্বরে সাধারণ লোকদের সরিয়ে দেয় পুলিশ। সাধারণ আইনজীবীরা অভিযোগ করেছেন, তাদের আদালত কক্ষে যেতে দিচ্ছে না পুলিশ।
এর আগে সরকারি নথিপত্র চুরির অভিযোগে গতকাল সোমবার রাতে শাহবাগ থানায় রোজিনা ইসলামের বিরুদ্ধে মামলা করে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগ।
মামলার এজাহারে অভিযোগ করা হয়েছে, সোমবার দুপুরে সচিবালয়ে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্যসেবা বিভাগে যান রোজিনা ইসলাম। এ সময় তিনি মন্ত্রণালয়ের সচিবের একান্ত সচিবের কক্ষে গিয়ে গুরুত্বপূর্ণ নথিপত্র নেন এবং মোবাইল ফোনে ছবি তোলেন। পরে মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা তাঁর শরীর তল্লাশি করে সেইসব নথিপত্র উদ্ধার করেন।
এই অভিযোগে রোজিনা ইসলামকে কয়েক ঘণ্টা সচিবালয়ে আটক রেখে সন্ধ্যার পর শাহবাগ থানায় হস্তান্তর করা হয়। খবর পেয়ে বিভিন্ন গণমাধ্যমের সংবাদকর্মী, তাঁর কর্মস্থলের সহকর্মী আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন সাংবাদিক সংগঠনের নেতাকর্মীরা জড়ো হয়ে রোজিনার মুক্তি দাবি করেন।
আটকের দীর্ঘ সময় পরে রোজিনার কয়েকজন স্বজন তাঁর সঙ্গে দেখা করার সুযোগ পান। বেরিয়ে এসে রোজিনার বড় ভাই সেলিম জানান, তাঁর বোনকে শারীরিকভাবে হেনস্তা করা হয়েছে।
সোমবার রাত পৌনে ১২টার দিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) রমনা জোনের অতিরিক্ত উপকমিশনার (এডিসি) হারুন অর রশীদ থানায় উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘বাদীর লিখিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা হয়েছে। দণ্ডবিধির ৩৭৯ এবং ৪১১ ধারা, অফিসিয়াল সিক্রেসি অ্যাক্ট-১৯২৩-এর ৩ এবং ৫ ধারা অনুযায়ী রোজিনা ইসলামের নামে মামলা করেছেন উপসচিব শিব্বির আহমেদ ওসমানী। এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।’
মামলায় এজাহারে সরকারি গোপনীয় অফিসিয়াল ডকুমেন্ট চুরির মাধ্যমে সংগ্রহ ও উক্ত নথি চুরির ডকুমেন্ট দ্বারা বহির্বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় সম্পর্ক নষ্ট করার অপচেষ্টার অপরাধের কথা বলা হয়েছে। রোজিনা ইসলামের কাছে ওই ডকুমেন্টের ৬২ পাতা উদ্ধার করা হয়েছে বলেও বলা হয়েছে মামলায়।