সাতক্ষীরায় করোনা হাসপাতালে ১৪ জনের মৃত্যু, অক্সিজেন সংকটের অভিযোগ
সাতক্ষীরা মেডিকেল কলেজের করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে আরও ১৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল পর্যন্ত গত ২৪ ঘণ্টায় চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁদের মৃত্যু হয়। সেখানে ২৪ ঘণ্টায় এখন পর্যন্ত এটিই সর্বোচ্চ মৃত্যুর রেকর্ড।
এদিকে, গত ২৪ ঘণ্টায় মৃত ১৪ জনের মধ্যে অক্সিজেন সংকটে আট জনের মৃত্যু হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ছাড়া তাদের মধ্যে মোট চার জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। অন্যরা মারা গেছেন উপসর্গ নিয়ে।
অভিযোগ উঠেছে, গতকাল বুধবার বিকেলে সাতক্ষীরা মেডিকেলে সেন্ট্রাল অক্সিজেনের প্রেশার কমে আসতে থাকে। সেই সংকট শুরুর পরপরই নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) দুজন, করোনারি কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) দুজন এবং সাধারণ ওয়ার্ডে আরও চার জনসহ আট জনের মৃত্যু হয়।
রোগীদের স্বজনেরা অভিযোগ করেন, অক্সিজেন সংকট দেখা দিলেও তা পূরণ করতে কর্তৃপক্ষের গাফিলতির কারণে এসব রোগী মারা গেছেন। পরে রাত ৮টার দিকে সেন্ট্রাল অক্সিজেন সরবরাহ স্বাভাবিক হয়।
এর আগে ওই হাসপাতালে গতকাল বুধবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত করোনার উপসর্গ নিয়ে আরও ছয় জনের মৃত্যু হয়।
সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. হুসাইন শাফায়েত দাবি করছেন, সেন্ট্রাল অক্সিজেনে প্রেশার কমে গেলেও অক্সিজেন সংকটে কেউ মারা যায়নি। এ সময় চার জন করোনা পজিটিভ রোগীর অবস্থা খুবই আশঙ্কাজনক ছিল। তাঁরা ছিলেন সিসিইউ ও আইসিউতে।
ডা. শাফায়েত আরও বলেন, সাতক্ষীরা মেডিকেলে ৭৬টি বড় আকারের অক্সিজেন সিলিন্ডার রয়েছে। সংকট দেখা দিলেই তা স্বয়ংক্রিয়ভাবে অক্সিজেন সরবরাহ করে থাকে।
এদিকে, এই করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে এখন পর্যন্ত ২৭৫ জন রোগী চিকিৎসাধীন। তাদের মধ্যে করোনা পজিটিভ ২৬ জন। অন্যরা করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছে।
এদিকে, আজ বৃহস্পতিবার সকালে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে করোনাবিষয়ক কিছু ভুল তথ্য দেওয়া হয়। তবে, সর্বশেষ সকাল ১০টার দিকে সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালের মেডিকেল অফিসার ডা. জয়ন্ত কুমার সরকার বলেন, মৃত ১৪ জনের মধ্যে চার জন ছিলেন করোনা পজিটিভ। অন্যরা উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন। এ ছাড়া গত ২৪ ঘণ্টায় ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৫২ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। শনাক্তের হার ৪৯ দশমিক শূন্য ৬ শতাংশ। এর আগের ছয় দিন শনাক্তের হার ছিল যথাক্রমে ৩০ দশমিক ৮৬ শতাংশ, ২৭ দশমিক ৫০ শতাংশ, ২৮ দশমিক ২ শতাংশ, ৩২ দশমিক ৭২ শতাংশ, ২৭ দশমিক শূন্য ৪ শতাংশ ও ৩০ দশমিক ৩৭ শতাংশ।
এদিকে, বিশেষ লকডাউনের প্রথম দিন আজ বৃহস্পতিবার শহরে সেনা সদস্য, বিজিবি ও পুলিশ টহলে রয়েছে। জেলা প্রশাসক মো. হুমায়ুন কবির এবং পুলিশ সুপার মোস্তাফিজুর রহমান তাদের সঙ্গে থেকে বিভিন্ন নির্দেশনা দিচ্ছেন। রেস্তোরাঁ ও শপিংমল বন্ধ রয়েছে, লোকজনের উপস্থিতিও কম। শহরজুড়ে রয়েছে পুলিশের ব্যারিকেড। বিনা প্রয়োজনে কেউ ঘরের বাইরে আসছে না।