সাধারণের মধ্যে অসাধারণ ছিলেন বঙ্গবন্ধু : আমিনুল ইসলাম আমিন
আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন বলেছেন, ‘ইতিহাসে কোনো কোনো শাসক ছিলেন, যারা নিজের জনগণের জন্য কাতর-উদ্বিগ্ন এবং তাদের দুর্দশা লাঘবের জন্য সব ছেড়ে-ছুড়ে সংগ্রাম করেছেন। তেমন রাজার আগমন বাঙালির জীবনেও ঘটেছে একবার। তবে, সেদিনের রাজা কোনো প্রাসাদের অধিকারী ছিলেন না, তিনি ছিলেন সাধারণ। কিন্তু নেতৃত্ব, মানবিক গুণাবলী, দেশপ্রেম, একনিষ্ঠতা ও সততা তাঁকে করে তুলেছিল অসাধারণ। তিনি বাঙালির জীবনে মুক্তিদাতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।’
আজ শুক্রবার (১৭ মার্চ) দুপুরে রাজধানীর সুবজবাগ ধর্মরাজিক বৌদ্ধ মহাবিহারের অনাথলয়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ১০৩তম জন্মদিন উপলক্ষে আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তৃতায় আমিনুল ইসলাম এসব কথা বলেন।
জাতির পিতার জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির উদ্যোগে আলোচনা সভা ও সুষম খাদ্য বিতরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। উপকমিটির সদস্য আখলাকুর রহমান মাইনুর পরিচালনায় বক্তব্য দেন। বুদ্ধিস্ট ফেডারেশনের সভাপতি প্রকৌশলী দিব্যেন্দু বিকাশ চৌধুরী বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘের সাধারণ সম্পাদক ড. বিকিরণ প্রসাদ বড়ুয়া, স্বেচ্ছাসেবক লীগের পানি সম্পদ সম্পাদক রাহুলা বড়ুয়া প্রমুখ এসময় উপস্থিত ছিলেন। পরে আজিমপুর এতিম খানাসহ আরও একটি স্থানে খাদ্য বিতরণ করা হয়।
আমিনুল ইসলাম আমিন বলেন, ‘পরাধীনতার নিকষ অন্ধকারে নিমজ্জিত বাঙালি জাতির ভাগ্যাকাশে মুক্তির প্রভাকর রূপে জন্ম নেওয়া খোকা নামের সেই শিশুটি শিক্ষাদীক্ষা মানবিক দৃষ্টিভঙ্গী, মহত্তম জীবনবোধ সততা, সাহস, দক্ষতা ও দূরদর্শী নেতৃত্বে হয়ে ওঠেন বাংলাদেশ নামক স্বাধীন-সার্বভৌম জাতি-রাষ্ট্রের মহান স্থপতি, সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি।’
আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, ‘শেখ মুজিবুর রহমান টুঙ্গিপাড়ার চিরায়ত গ্রামীণ সমাজের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্না আবেগ-অনুভূতি শিশুকাল থেকে গভীরভাবে প্রত্যক্ষ করেছেন। গ্রামের মাটি আর মানুষ তাঁকে প্রবলভাবে আকর্ষণ করত। শৈশব থেকে তৎকালীন সমাজ জীবনে তিনি জমিদার, তালুকদার ও মহাজনদের অত্যাচার, শোষণ ও প্রজাপীড়ন দেখে চরমভাবে ব্যথিত হতেন।’
আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘তিনি (বঙ্গবন্ধু) সারা জীবন এদেশের মাটি ও মানুষের অধিকার আদায় ও কল্যাণের জন্য সংগ্রাম করেছেন। বাঙালি জাতির মুক্তির জন্য জীবনের ১৪টি বছর পাকিস্তানি কারাগারের অন্ধপ্রকোষ্ঠে বন্দি থেকেছেন, দুই বার ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুর মুখোমুখি হয়েছেন।’ নতুন প্রজন্মের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নতুন প্রজন্মকে বঙ্গবন্ধুর সত্তা ও আদর্শের শিক্ষা দিতে হবে। তাদের জানাতে হবে বঙ্গবন্ধুর মানসিকতা কী ছিল, তাঁর দেশপ্রেম কেমন ছিল, তার অসাম্প্রদায়িকতা কেমন ছিল। বঙ্গবন্ধুকে ধারণ করে আমাদের অস্তিত্বের শেকড়ে ফিরে যেতে হবে। বঙ্গবন্ধুর জন্মতিথিতে তাই মানুষের কল্যাণে আত্মোৎসর্গের জন্য প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে হবে। এ প্রতিজ্ঞায় সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে, স্বাধীনতাবিরোধীদের রুখে দিতে হবে, বহির্বিশ্বে বাঙালির স্বতন্ত্র সত্তার পরিচয় তুলে ধরতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মধ্যে বঙ্গবন্ধুর প্রতিচ্ছবি রয়েছে জানিয়ে আওয়ামাী লীগের ত্রাণ সম্পাদক বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ উত্তরসূরি শেখ হাসিনার মাঝে তার রাজনৈতিক দর্শন যথাযথভাবে প্রতিফলিত হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর রেখে যাওয়া পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ দিয়ে যাচ্ছেন। এখন স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার ঘোষণা দিয়েছেন। আজকের শিশু ও তরুণরাই স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।’