সাফজয়ী আঁখির বাবাকে থানায় নেওয়ার হুমকিদাতা ২ পুলিশ ক্লোজড
সাফজয়ী নারী ফুটবল দলের সদস্য আঁখি খাতুনের বাবাকে থানায় ধরে নেওয়ার হুমকি ও শাসানোর অভিযোগে দুই পুলিশ সদস্যকে ক্লোজড করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে সিরাজগঞ্জের পুলিশ সুপার মো. আরিফুর রহমান মণ্ডল এ নির্দেশ দেন। শাহজাদপুর থানার ওই দুই পুলিশ সদস্য হলেন সহকারী উপপরিদশক (এএসআই) মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা।
পুলিশ সুপার আরিফুর রহমান মণ্ডল আজ বিকেলে এ তথ্য নিশ্চিত করে জানান, নারী ফুটবলার আঁখির বাবার সঙ্গে অসৌজন্যমূলক আচরণ করায় একজন এএসআই ও কনস্টেবলকে ক্লোজড করে পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্তে সহকারী পুলিশ সুপারকে (শাহজাদপুর সার্কেল) নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
সম্প্রতি আঁখি খাতুনকে বরাদ্দ দেওয়া খাস খতিয়ানভুক্ত ৮ শতাংশ জমির দখল নিয়ে আদালতে মামলা করেন হাজি মকরম প্রামানিক নামে এক ব্যক্তি। ওই মামলায় আঁখিসহ পাঁচজনকে বিবাদী করা হয়। গতকাল বুধবার রাতে মামলার নোটিশ নিয়ে এএসআই মামুনুর রশিদ ও কনস্টেবল আবু মুসা তার গ্রামের বাড়ি শাহজাদপুরের পারকোলায় যান। এ সময় আঁখির বাবা আক্তার হোসেনকে নোটিশে স্বাক্ষর করতে বললে তিনি তা করতে অস্বীকৃতি জানান। এ নিয়ে উভয়ের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। একপর্যায়ে আঁখির বাবাকে পুলিশ শাসায় এবং থানায় নিয়ে যাওয়ার হুমকি দেয়।
বিষয়টি জানাজানি হলে গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে সমালোচনার ঝড় ওঠে। আজ সকালে সহকারী পুলিশ সুপার (শাহজাদপুর সার্কেল) আঁখিদের বাড়ি গিয়ে বিষয়টি নিয়ে কথা বলেন।
শাহজাদপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম বলেন, ফুটবলার আঁখির জন্য ১নং খাস খতিয়ানের একটি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সম্প্রতি হাজি মকরম প্রামানিক নামে এক ব্যক্তি ওই জমির তার দখলে রয়েছে দাবি করে মামলার করেছেন। তবে মামলায় তিনি ওই জমির মালিকানা দাবি করেননি। মামলার তফসিলে খতিয়ানও উল্লেখ করেননি। প্রকৃতপক্ষে আঁখিকে দেওয়া জমিটি ১নং খাস খতিয়ানভুক্ত। আঁখির পরিবার যাতে ওই জমি না পায়, সে জন্য একটি চক্র এই মামলা করিয়েছে।
ইউএনও বলেন, যেকোনো জমি নিয়ে মামলা হতেই পারে। মামলার পর প্রসিডিওর অনুযায়ী আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় পক্ষদ্বয়কে নোটিশ দিতে সংশ্লিষ্ট থানাকে নির্দেশ দেওয়া হয়। এখানে তেমনটাই ঘটেছে।
এর আগে দরিদ্র পরিবারে সন্তান আঁখি খাতুনকে সরকারিভাবে একটি জমি বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। সেই জমির মালিকানা দাবি করে শাহজাদপুরের একজন ব্যবসায়ী মামলা করেন। পরবর্তীতে বিবদমান এই জমির বরাদ্দ বাতিল করা হয়। পরে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে জেলা প্রশাসক ড. ফারুক আহাম্মদ শাহজাদপুর পৌর এলাকার দ্বাবারিয়া মৌজায় খাস খতিয়ানভুক্ত আট শতক জমি বরাদ্দ দেন। সম্প্রতি আনুষ্ঠানিকভাবে আঁখির মা-বাবার হাতে ওই জমির দলিল হস্তান্তর করা হয়।