সাভারের বিনোদন কেন্দ্রগুলো স্থবির, অনিশ্চয়তায় কর্মচারীরা
জ্বলে ওঠার আগেই নিভে গেছে সাভারে বিনোদন কেন্দ্রগুলোর বাতি। লকডাউন মাত্র আট দিনের জন্য শিথিল করার সরকারি ঘোষণায় নড়েচড়ে বসেছিলেন বিনোদন কেন্দ্রগুলোর উদ্যোক্তরা। পার্ক খোলা থাকবে বলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঘোষণাও দিয়েছিলেন তারা। সেই ঘোষণার পরিপ্রেক্ষিতে দীর্ঘদিন বন্ধ থাকা বিনোদন কেন্দ্রগুলো ঘিরে কর্মচারীদের চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছিল।
রাইডসগুলোকে সংস্কার করে গোটা পার্ক আবারও দর্শনার্থীদের বিনোদন উপযোগী করতে পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি নানা ধরনের পদক্ষেপও নেওয়া হয়।
মহামারি করোনাভাইরাসের লাগাম টানতে গত ১ জুলাই থেকে পুনরায় কঠোর বিধিনিষেধ জারি করে সরকার। প্রথমে সাত দিনের বিধিনিষেধ দিলেও সংক্রমণ বাড়তে থাকায় লকডাউনের মেয়াদ বাড়িয়ে আরও সাত দিন বাড়িয়ে ১৪ জুলাই পর্যন্ত করা হয়।
তার আগেই গত ১৩ জুলাই প্রজ্ঞাপন জারি করে ঈদুল আজহা উদযাপন উপলক্ষে ১৪ জুলাই মধ্যরাত থেকে ২৩ জুলাই পর্যন্ত সব ধরনের বিধিনিষেধ শিথিল করার ঘোষণা দেয় সরকার।
সেই ঘোষণাতেই নড়েচড়ে বসে সাভারের বিনোদন কেন্দ্রগুলোর মালিকরা। ঈদের আগে প্রাণচাঞ্চল্য ফিরবে, এমন আশায় বিনোদন কেন্দ্রগুলোর কর্মচারীরাও ফিরে আসে নিজ নিজ কর্মস্থলে।
সাভারের অন্যতম বৃহৎ বিনোদনকেন্দ্র ফ্যান্টাসি কিংডম। এই কেন্দ্রটির পরিচালনাকারী কর্তৃপক্ষ কনকর্ড কমিউনিকেশন কোম্পানি লিমিডেট সহকারী ব্যবস্থাপক (মিডিয়া অ্যান্ড পিআই) জামাল উদ্দিন ভুইয়া শামীম জানান, করোনা মহামারি শুরুর পর মাস চারেকের মতো পার্ক খোলা ছিল। অবশিষ্ট সময় পার্ক বন্ধই রয়েছে।
জামাল উদ্দিন ভুইয়া শামীম বলেন, ‘পার্কগুলো বন্ধ থাকলেও মেইনটেনেন্সের জন্য কর্মচারীদের রাখতে হয়। এভাবে দিনের পর দিন আয় বন্ধ থাকায় উদ্যোক্তারার রয়েছেন অনিশ্চয়তায়।’
এমন পরিস্থিতিতে চলতি বছরের জানুয়ারি মাসে স্বাস্থ্যবিধি মেনে দেশের সব পর্যটনকেন্দ্র খুলে দেওয়াসহ ক্ষতিগ্রস্ত ট্যুর অপারেটরদের প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানায় ট্যুর অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (টোয়াব)।
তবে করোনা সংক্রমণ বৃদ্ধিতে এখন সব কিছুতেই বিরাজ করছে স্থবিরতা। ফ্যান্টাসি কিংডম কর্তৃপক্ষের ঊর্ধ্বতন একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, এই পার্কে সাড়ে চারশ স্টাফ রয়েছে। বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় কোনো আয় নেই। উল্টো কর্মকর্তা কর্মচারীদের বসিয়ে বসিয়ে বেতন দেওয়া হচ্ছে।
মূলত ঈদ সামনে রেখে ব্যবসা চাঙ্গা হয় বিনোদন কেন্দ্রগুলোর। নেওয়া হয় বিভিন্ন ধরনের প্যাকেজ। তবে মহামারিতে বিনোদন কেন্দ্রগুলো বন্ধ থাকায় বেশ কিছু কেন্দ্রের কর্মচারী ছাটাই করা হয়েছে। অন্যরা যাদের বসিয়ে বেতন দেওয়া হচ্ছে, তারাও ভবিষ্যৎ নিয়ে রয়েছেন অনিশ্চয়তায়।