সাভারের সেই ‘ধর্ষক’ গ্রেপ্তার
বন্ধুর বোনকে ধর্ষণ এবং পরে ধর্ষণের ভিডিও ইন্টারনেটে ছাড়িয়ে দেওয়ার হুমকি ও টাকা আত্মসাতের অভিযোগে অভিযুক্ত সেই ‘ধর্ষক’-কে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার রাতে সাভারের আশুলিয়ার এনায়েতপুর গ্রামে অভিযান চালিয়ে তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পুলিশ বলছে, আশুলিয়ার নিরিবিলি এলাকায় একটি ভাড়া বাড়িতে মা ও ভাইয়ের সঙ্গে থেকে পড়াশোনা করতেন দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রী। তাঁদের বাড়িতে তিন বেলা চুক্তিতে খেতেন ওই ছাত্রীর বড় ভাইয়ের বন্ধু (গ্রেপ্তার হওয়া যুবক)। এক সময় ওই যুবক গোপনে ওই স্কুলছাত্রীর পোশাক পরিবর্তনের ভিডিও ধারণ করেন। পরে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে একাধিক বার ধর্ষণ করেন।
এরপর ধর্ষণের ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে দেওয়ার ভয়ভীতি দেখিয়ে ওই ছাত্রীর কাছ থেকে বিকাশের মাধ্যমে কয়েক দফায় কয়েক হাজার টাকাও হাতিয়ে নেন।
সর্বশেষ চলতি বছরের ২৯ জানুয়ারি আবারও ১০ হাজার টাকা চেয়ে নিরিবিলি এলাকার বিকাশ এজেন্ট মুদি দোকানদার শামসুর রহমানের নম্বর দেন গ্রেপ্তার যুবক।
পারিবারিক কাজে টাকা প্রয়োজন হলে গার্মেন্টসকর্মী মা ভুক্তভোগীর কাছে টাকা চাইলে সে দিতে অপারগতা প্রকাশ করে। তাঁর মা রাগান্বিত হলে ভুক্তভোগী আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে ভুক্তভোগী তাঁর মাকে ঘটনা খুলে বলে।
এরপর কৌশলে ওই বিকাশের দোকান থেকে যুবককে হাতেনাতে ধরে ভুক্তভোগীর পরিবার। বিষয়টি এলাকায় জানাজানি হলে অভিযুক্তের বাবা স্থানীয় মাতব্বরদের শরণাপন্ন হন এবং বিষয়টি টাকার বিনিময়ে রফাদফার চেষ্টা করেন।
মামলার বিবরণী থেকে জানা যায়, ভুক্তভোগীর মা থানার শরণাপন্ন হলে স্থানীয় মাতব্বর আশুলিয়ার এনায়েতপুর এলাকার আব্দুল বারেকের ছেলে সাদ্দাম মিয়া, ফাল্গুনী এলাকার আব্দুল খালেকের ছেলে কালাম ওরফে তোতলা কালাম এবং ফাল্গুনী একটেল টাওয়ার এলাকার জসিম ভুক্তভোগী ওই স্কুলছাত্রীর খালুকে বিষয়টি মীমাংসার জন্য চাপ দেন। পরে এক লাখ ১০ হাজার টাকার একটি সমঝোতা স্মারকে ভুক্তভোগীর পরিবারের কাছ থেকে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন তাঁরা।
পুলিশ জানায়, ধর্ষণের শিকার ওই স্কুলছাত্রী গত বৃহস্পতিবার রাতে অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আশুলিয়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। পুলিশ রাতেই এনায়েতপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে ধর্ষণকারীকে আটক করে।
ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীকে স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য ঢাকা মেডিকেল কলেজ অ্যান্ড হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে ভর্তি করেছে পুলিশ। অভিযুক্ত ওই ধর্ষণকারীর কঠোর শাস্তি দাবি করেছেন এলাকাবাসী।
এ ব্যাপারে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান বলেন, ‘ধর্ষণকারীকে সকালে আদালতে পাঠানো হয়েছে।’