সাভারে সড়ক দুর্ঘটনা : পরমাণু শক্তি কমিশনের আরও এক কর্মকর্তার মৃত্যু
সাভারে সড়ক দুর্ঘটনায় আহত ফারহানা ইসলাম নিপা (৩৪) নামের পরমাণু শক্তি কমিশনের আরও এক বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মারা গেছেন। রাজধানীর সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার দিবাগত রাত ১২টার পর মৃত্যু হয় তাঁর।
ফারহানা ইসলাম নিপা পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের পরমাণু বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের ভূতত্ত্ববিদ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তিনি জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৫তম আবর্তনের শিক্ষার্থী ছিলেন। ২০১৭ সালের ২৬ ডিসেম্বর পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যোগ দেন ফারহানা। তাঁর স্বামীর নাম আরাফাত বিন ইউসুফ। তাঁদের দুই বছরের এক সন্তান রয়েছে।
ওই দুর্ঘটনায় এ নিয়ে চার কর্মকর্তাসহ ছয় জনের মৃত্যু হলো। নিহত অন্যরা হলেন—ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা ড. আরিফুজ্জামান, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা পূজা সরকার, প্রকৌশলী কাউসার আহমেদ রাব্বী, পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের স্টাফ বাসচালক রাজীব হোসেন ও ঘাতক সেফলাইন পরিবহণের বাসচালক মারুফ হোসেন মুন্না।
এদিকে, এ ঘটনায় পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানের অন্যান্য কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যে গভীর শোক বিরাজ করছে।
গত রোববার সকালে রাজধানী থেকে সাভারের আশুলিয়ার পরমাণু শক্তি গবেষণা প্রতিষ্ঠানে যাওয়ার পথে সড়ক দুর্ঘটনায় এর আগে চালকসহ চার জন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তাকে হারায় প্রতিষ্ঠানটি।
ঝিনাইদহের শৈলকুপা থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া সেফলাইন পরিবহণের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি গরুবোঝাই ট্রাককে ধাক্কা দেয়। ওই সময় বেপরোয়া গতির বাসটি সড়কের আইল্যান্ড অতিক্রম করে বিপরীত দিক থেকে আসা পরমাণু শক্তি কমিশনের চলন্ত বাসটির মাঝামাঝি সজোরে আঘাত করে। এ দুর্ঘটনায় পরমাণু শক্তি কমিশনের বাসের চালকসহ এখন পর্যন্ত ছয় জনের মৃত্যু হলো।
সাভার হাইওয়ে থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাকবলিত বাসের পেছনে ‘সেফলাইন’ লেখা থাকলেও মূলত বাসটি চলত ‘নিউ গ্রীন এক্সপ্রেস’-এর ব্যানারে। বাসটির ফিটনেস সনদ ছিল না।
এদিকে, চিকিৎসাধীন ঘাতক বাসের হেলপার তানভীর আহমেদ সুলতান বলছেন, চালক তন্দ্রাচ্ছন্ন হয়ে বাসটি চালাচ্ছিলেন। তাঁকে বারবার সতর্ক করা হলেও তিনি শোনেননি। উলটো ধমক দিয়েছেন।
তবে, দুর্ঘটনার পরদিন রাজধানীর শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় বাসটির চালক মারুফ হোসেন মুন্নার মৃত্যু হয়।
বাংলাদেশ পরমাণু শক্তি কমিশনের চেয়ারম্যান ড. মো. আজিজুল হক বলেছেন, ‘এত কর্মকর্তাকে হারিয়ে শোকে নিমজ্জিত পুরো প্রতিষ্ঠান। তিন দিনের শোক চলাকালে নতুন করে আরও একজন কর্মকর্তার মৃত্যুতে আমরা সহ্য করার ক্ষমতা হারিয়ে ফেলেছি।’