সারা দেশে বিএনপির প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ
সারা দেশে লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার বিরুদ্ধে আজ রোববার দেশব্যাপী জেলায় জেলায় বিএনপি ঘোষিত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। সারা দেশে থেকে এনটিভির প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর
ময়মনসিংহ থেকে আইয়ুব আলী : কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে ময়মনসিংহ দক্ষিণ ও উত্তর জেলা বিএনপির প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন সংরক্ষিত নারী আসনের সংসদ সদস্য ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, ইভিএম এ কোনো নির্বাচন নয়, নির্বাচন হবে ব্যালটে। এই সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। আমাদের দাবি একটাই এই সরকারের পতন। দলীয় সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন নয়। বিএনপি একটা সাহসের নাম। বিএনপি করতে কলিজা লাগে।
সমাবেশে দক্ষিণ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক ডা. মাহবুবুর রহমান লিটনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সহপ্রশিক্ষণ বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার বদরুদ্দোজা বাদল, দক্ষিণ জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক ডা. মোফাখখারুল ইসলাম রানা, আলমগীর মাহমুদ আলম, আক্তারুজ্জামান বাচ্চু; উত্তর জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মোতাহার হোসেন তালুকদার, জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. নুরুল হক প্রমুখ।
গাজীপুর থেকে নাসির আহমেদ : কেন্দ্রীয় বিএনপির কর্মসূচির অংশ হিসেবে গাজীপুরে বিএনপির প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বিকেলে গাজীপুর জেলা বিএনপি কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
ভোলায় স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতাকে হত্যার ঘটনায় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জড়িত মন্তব্য করে প্রধান অতিথি যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী প্রতিবাদ সভায় বলেন, বিএনপির শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ সমাবেশে পুলিশ গুলি চালিয়ে ভোলার স্বেচ্ছাসেবক দলের নেতা আব্দুর রহিমকে হত্যা করেছে। এ হত্যাকাণ্ড স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্দেশেই হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী পূর্ব পরিকল্পনা করেই এ ঘটনাটি ঘটিয়েছেন।
রিজভী বলেন, ঘটনার পর পরই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সচিবালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী প্রতিহত করবে। তার এ বক্তবেই প্রমাণিত হয় যে, প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী পূর্বপরিকল্পনা করেই বিএনপির আন্দোলন ও প্রতিবাদের ভয়ে স্বেচ্ছাসেবক দলের এ নেতাকে হত্যা করিয়েছেন।
গাজীপুর জেলা বিএনপির সভাপতি ফজলুল হক মিলনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহ রিয়াজুল হান্নান, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম বাবুলসহ বিএনপির কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা।
রংপুর থেকে এম এ সালাম বিশ্বাস : রংপুরে প্রতিবাদ সমাবেশে বক্তারা বলেছেন, ভোট চোর আওয়ামী লীগ সরকারের আর ক্ষমতায় থাকার নৈতিক অধিকার নেই। বিএনপির পক্ষে গণজোয়ার সৃষ্টি হয়েছে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের মাধ্যমে এই জুলুমবাজ জনবিরোধী সরকারকে উৎখাত করার গণআন্দোলনে অংশ নেওয়ার জন্য সবাইকে প্রস্তুত থাকতে হবে।
আজ বিকেলে রংপুর মহানগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে বক্তারা এসব কথা বলেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলামের সভাপতিত্বে এ সময় প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় শিশুবিষয়ক সম্পাদক সাবেক সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ। সদস্য সচিব আনিছুল ইসলাম লাকু, সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক ভরসাসহ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় নেতারা।
বিকেল থেকে নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে গ্রান্ড হোটেল মোড়ে রাস্তার এক লেন বন্ধ করে দিয়ে প্রতিবাদ সমাবেশে জড়ো হয়। পুলিশ মঞ্চ করতে না দেওয়ায় ট্রাকে মঞ্চ করে সমাবেশ করে তারা। এ সময় বিপুল জ্বালানো হারিকেন প্রদর্শন করা হয়। প্রায় হাজারখানেক নেতাকর্মীর সরকারবিরোধী মুহুর্মুহু স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে পুরো এলাকা।
ঠাকুরগাঁও থেকে লুৎফর রহমান : দেশ আজ দেউলিয়ার পথে। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমগুলো গত মাসে বলেছে বাংলাদেশের ঋণের পরিমাণ ছিল নয় লাখ কোটি টাকা। বর্তমানে ডলারের মূল্য বৃদ্ধি পেয়ে ৯৫ টাকায় দাঁড়িয়ে সে ঋণ এখন প্রায় ১০ লাখ কোটি টাকা। এত ঋণ শোধ করবেন কীভাবে? দেশের মানুষের কাছ থেকে কেড়ে নেওয়ার আর কী রয়েছে এমন প্রশ্ন রেখেছেন বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
আজ রোববার বিকেলে ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি আয়োজিত সারা দেশে বিদ্যুতের লোড শেডিং, বিদ্যুৎ, গ্যাস ও নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং জ্বালানি খাতে ব্যাপক অরাজকতার প্রতিবাদে বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ প্রশ্ন রাখেন সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ।
হারুনুর রশীদ বলেন, আপনারা অনেক উন্নয়নের কথা বলে বলে দেশের প্রতিটা মানুষের ঘাড়ে ঋণের বোঝা চাপিয়ে দিচ্ছেন। দেশের ৫০ বছর বয়সেও আপনারা দেশের মানুষকে বিদ্যুৎ থেকে বঞ্চিত করছেন। ভোটের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছেন। আর কত বঞ্চিত করবেন। সে দিন বেশি দূরে নেই যেদিন দেশের সাধারণ মানুষ গণভবন ঘেরাও করে তাদের অধিকার আদায় করবেন।
ডিসি এসপিদের উল্লেখ করে সংসদ সদস্য হারুনুর রশীদ বলেন, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ করা প্রতিটি নাগরিকের অধিকার রয়েছে। স্বাধীনতার ৫০ বছর পরও আমরা আর কীভাবে প্রতিবাদ করলে আপনাদের খারাপ লাগবে না? আমরা সরকারের অন্যায় অবিচারের প্রতিবাদ করলে, দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির প্রতিবাদ করলে আপনাদের গায়ে জ্বালা আসে কেন? এটা একটা স্বাধীন রাষ্ট্রের জন্য অশনিসংকেত।
সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই উল্লেখ করে হারুনুর রশীদ বলেন, সরকার বলেছে তারা নানা উন্নয়ন করছে। দেশে এত উন্নয়ন করছে যে তারা দেশের মানুষকে একটি শান্তিপূর্ণ নির্বাচন উপহার দিতে পারছে না। ছোট্ট ছোট্ট এলাকার নির্বাচনেও তারা মায়ের কোলের শিশুর মর্মান্তিক মৃত্যু উপহার দিচ্ছে। ঠাকুরগাঁওয়েও যা করেছে তারা। তারা বুঝে ফেলেছে তাদের পায়ের নিচের মাটি সরে যাচ্ছে।
রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিষয়ে সংসদ সদস্য বলেন, এ বিদ্যুৎ প্রকল্পে ১৩ বিলিয়ন টাকা খরচ করে রাশিয়ার একটি কোম্পানির মাধ্যমে তৈরি করছে। একই প্রকল্প ভারতে তৈরি হচ্ছে ৩.৫ বিলিয়ন টাকায় আবার তুরস্কেও একই প্রকল্প তৈরি হচ্ছে ৩.৮ বিলিয়ন টাকায়। তাহলে বাংলাদেশে তা ১৩ বিলিয়নে কেন তৈরি হচ্ছে? এর জবাবদিহিতা কোথায়?
আমরা বাইরে থেকে জ্বালানি, গ্যাস আমদানি করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছি। অথচ পাশের জেলা দিনাজপুরে কয়লা উত্তোলনের অভাবে ৪০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্র বন্ধ থাকছে দিনের পর দিন। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দেশের মাটিতে প্রায় ৪২ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস রয়েছে। গত ১৫ বছরে দেশের মানুষের অধিকার খর্ব করতে ব্যস্ত থাকায় এসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে আপনারা নজর দেওয়ার সময় পাননি। যদি দিতেন সময় তবে দেশে আজ এ অবস্থার সৃষ্টি হতো না।
ঠাকুরগাঁও জেলা বিএনপি আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা বিএনপির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা তৈমুর রহমান, বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক মির্জা ফয়সল আমিন প্রমুখ।
নওগাঁ থেকে আসাদুর রহমান জয় : সরকার হটাতে ‘এক দফা’ আন্দোলনের প্রস্তুতি নিতে কর্মী-সমর্থকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হেলালুজ্জামান তালুকদার লালু। আজ বিকেলে নওগাঁ শহরের নওজোয়ান মাঠে জেলা বিএনপি আয়োজিত সমাবেশে এই আহ্বান জানান তিনি।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা বলেন, সরকারের সীমাহীন লুটপাটের কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতসহ দেশের সব খাত আজকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে গেছে। বিদ্যুৎ খাতে চরম সংকট, জ্বালানি মজুদ তলানিতে ঠেকেছে, ডলারের মজুদও শেষ হয়ে যাচ্ছে। তার পরও আওয়ামী লীগের নেতাদের চাপাবাজি ও ফাঁপরবাজি এখনও বন্ধ হয়নি। তারা বলছে দেশ নাকি উন্নয়নের মহাসড়কে চলছে। বাস্তবতা হলো দেশ আজকে শ্রীলঙ্কা ও পাকিস্তানের পথে হাঁটছে।
সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের জন্য দলের কর্মী-সমর্থকদের প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানিয়ে লালু বলেন, এই সরকার কারও সুবুদ্ধি শুনবে না।’ ভালো কথায় আর কাজ হবে না। আন্দোলনের মাধ্যমে শেখ হাসিনার সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করা না গেলে দেশের জনগণের অবস্থা আরও শোচনীয় হয়ে যাবে। আপনারা সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের প্রস্তুতি নিন। শিগগিরই সরকার পতনের এক দফা আন্দোলনের ডাক আসছে। বিএনপির নেতাকর্মীদের ভেদাভেদ ভুলে সেই আন্দোলনে শামিল হয়ে সরকারের পতন তরান্বিত করতে হবে।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নওগাঁ জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু বক্কর সিদ্দিক। জেলা বিএনপির সদস্য সচিব বায়েজিদ হোসেনের সঞ্চালনায় সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য আনোয়ার হোসেন বুলু, সাবেক সাংসদ ডা. ছালেক চৌধুরী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও নওগাঁ পৌরসভার মেয়র নজমুর হক সনি, জেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম, মহাদেবপুর উপজেলা বিএনপির সভাপতি রবিউল আলম বুলেট, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক শহীদুল ইসলাম, শেখ রেজাউল ইসলাম, আমিনুল হক বেলাল, মামুনুর রহমান রিপন, শফিউল আজম, জেলা মহিলা দলের সভাপতি সীমা চৌধুরী, জেলা যুবদলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি দেওয়ান মো. ফারুক, সাধারণ সম্পাদক খায়রুল আলম গোল্ডেন প্রমুখ।
সাতক্ষীরা থেকে সুভাষ চৌধুরী : সাতক্ষীরায় জেলা বিএনপির বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বিকেল সাড়ে ৪টায় শহরের তালতলা হাইস্কুল মাঠে এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। এতে যোগ দেন জেলা যুবদল, ছাত্রদল, কৃষকদল ও পৌর বিএনপিসহ অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা। নেতাকর্মীরা মিছিল করে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে সমাবেশে মিলিত হয়।
বিক্ষোভ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট সৈয়দ ইফতেখার আলী। এতে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন কেন্দ্রীয় বিএনপির তথ্য সম্পাদক আজিজুল বারী হেলাল।
সমাবেশে বক্তারা বলেন, দেশের বিদ্যুৎ খাত দুর্নীতির আখড়ায় পরিণত হয়েছে। ব্যাপক লুটপাট ও অব্যবস্থাপনার কারণে বিদ্যুৎ খাত ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে। দেশের রিজার্ভ শূন্য হয়ে যাওয়ার কারণে গ্যাস আমদানি করতে পারছে না সরকার। অন্যদিকে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জীবনযাপন কষ্টদায়ক হয়ে পড়েছে। এজন্য অবিলম্বে নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।
সমাবেশে সারা দেশে আটক বিএনপির নেতাকর্মীদের মুক্তি দাবি করেন বক্তারা বলেন, দেশের এই দূরবস্থা থেকে মুক্তি পেতে অনতিবিলম্বে সরকার হটাতে জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে আন্দোলনে নামতে হবে।
বিক্ষোভ সমাবেশে আরও উপস্থিত ছিলেন জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য কাজী মো. আলাউদ্দীন, ডা. শহিদুল আলম, আলহাজ আব্দুর রউফ চেয়ারম্যান, শেখ তারিকুল হাসান, জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাবিবুর রহমান হাবিব, সদস্য সচিব আব্দুল আলিম, মৃণাল কান্তি রায় প্রমুখ।
দিনাজপুর থেকে ফারুক হোসেন : দিনাজপুরে আজ বিকেলে লোকভবন মাঠে বিএনপি প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহসাংগঠনিক (রংপুর বিভাগ) ও দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম বলেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া এ দেশে আর কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না। ভোটের আগের রাতে নির্বাচিত প্রধানমন্ত্রীর অধীনে বিএনপি কোনো নির্বাচনে অংশ নেবে না এবং আগামীতে এমন কোনো নির্বাচন এ দেশে মানুষ আর হতে দেবে না।
আজ বিকেলে দিনাজপুর লোকভবন মাঠে আয়োজিত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর আলম এসব কথা বলেন।
দিনাজপুর জেলা বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো. মোফাজ্জল হোসেন দুলালের সভাপতিত্বে ও জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক বখতিয়ার আহম্মেদ কচির সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন দিনাজপুর জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক হাসনাহেনা চৌধুরী হিরা, মো. আমিনুল ইসলাম মুন্না, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আলহাজ মাহবুব আহম্মেদ, দিনাজপুর পৌর বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি মো. সামসুজ্জামান চৌধুরী খোকা, তাঁতীদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতা ও জেলা তাঁতীদলের সভাপতি রেজাউল ইসলাম, স্বেচ্ছাসেবক দল কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা ছাত্রদলের সাবেক সদস্য সচিব মাহবুবুল হক হেলাল, জেলা যুবদলের সভাপতি মো. আব্দুল মোন্নাফ মুকুল, সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর এ কে এম মাসুদুল ইসলাম মাসুদ, জেলা স্বেচ্ছাসেবক দলের সাধারণ সম্পাদক রাসেল আলী চৌধুরী লিমন, জেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাবেক ছাত্রনেতা শাহিন খান, জেলা মহিলাদলের সাধারণ সম্পাদক ও পৌরসভার কাউন্সিলর শাহিন সুলতানা বিউটি, হাকিমপুর উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র শাখাওয়াত হোসেন শিল্পী, জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. রেজাউর রহমান রেজা, সাধারণ সম্পাদক আবুজার সেতু প্রমুখ।
প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা বিএনপি, কোতোয়ালি বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, তাঁতীদলসহ ১৩টি উপজেলা বিএনপি ও বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে বেলা ৩টায় দিনাজপুর পৌর বিএনপি, কোতোয়ালি বিএনপিসহ বিভিন্ন উপজেলা হতে আগত বিএনপি ও অন্যান্য অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে সমাবেশস্থলে এসে যোগ দেয়। মুহূর্তের মধ্যেই দিনাজপুর লোকভবন মাঠ ও এর আশপাশের এলাকা লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়।
খুলনা থেকে মুহাম্মদ আবু তৈয়ব : খুলনা জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির বিশেষ সম্পাদক ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, এই অপশক্তি রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আছে বলেই এখনো চালের দাম বাড়ছে। তেলের দাম বেড়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সীমাহীন মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে।
আজ বিকেলে মহানগরী কে ডি ঘোষ রোডে দলীয় কার্যালয়ের সামনে অনুষ্ঠিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ড. আসাদুজ্জামান রিপন বলেন, বিদ্যুৎবিহীন দেশে পরিণত করেছে। এখন বিদ্যুৎ বিলের এক কোনায় লেখা থাকে, ‘শেখ হাসিনার উদ্যোগ, ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ’। এই ঘরে ঘরে বিদ্যুতের নমুনা? কোথায় স্বয়ং সম্পূর্ণ বিদ্যুৎ? ওনারা বলেন, হারিকেন নাকি মিউজিয়ামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। তাহলে মিউজিয়াম থেকে আবার হারিকেন কীভাবে ফেরত এলো? আসলে জনগণের লাখ লাখ কোটি টাকা পাচার করে দিয়েছে বিদেশে।
জেলা বিএনপি সভাপতি আমীর এজাজ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন সাবেক ছাত্রনেতা আলহাজ রকিবুল ইসলাম বকুল, জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য সাবেক সংসদ সদস্য মো. মজিবুর রহমান, নগর ও জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক তরিকুল ইসলাম জহীর, শেখ আবু হোসেন বাবু প্রমুখ।
নোয়াখালী থেকে মো. মাসুদ পারভেজ : কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নোয়াখালী জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ দেশব্যাপী সীমাহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে চরম অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
নোয়াখালীতে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল মিন্টু বলেছেন, এই অনির্বাচিত দখলদার অবৈধ দুর্নীতিবাজ সরকারকে আর সময় দেওয়া উচিত নয়। কারণ যদি আমরা আর সময় দিই, তাহলে তারা পুরো বাংলাদেশকে গিলে ফেলবে এবং পঙ্গু করে দিবে অথবা বিদেশের কাছে বিক্রি করে দিবে।
আজ বিকেল ৫টার দিকে নোয়াখালী প্রেসক্লাব প্রাঙ্গণে সারা দেশে নজির বিহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আবদুল আউয়াল মিন্টু এসব কথা বলেন।
আবদুল আউয়াল মিন্টু আরও বলেন, এখন সময় এসেছে আমাদের গণতান্ত্রিক অধিকার, আমাদের স্বাধীনতা, সাংবাদিকদের বাক স্বাধীনতা, আমাদের মিছিল মিটিং করার স্বাধীনতা, সংবিধানে প্রদত্ত দাবি আদায়ের। আমরা মাঠে ঘাটে রাস্তায় যেখানেই পারি প্রতিবাদ করব। এ সরকারকে ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করব।
বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, তাঁতীদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
নারায়ণগঞ্জ থেকে নাফিজ আশরাফ : কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির উদ্যোগে বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। আজ বিকেলে চাষাঢ়া কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে দেশব্যাপী সীমাহীন লোডশেডিং ও জ্বালানি খাতে চরম অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে এ বিক্ষোভ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল বলেন, দুর্নীতিবাজ আওয়ামী লীগ সরকারের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ আন্দোলনের মাধ্যমে পতন ঘটিয়ে নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে।
সারা দেশে বিদ্যুতের লোডশেডিং ও জ্বালানি তেলের অব্যবস্থাপনার প্রতিবাদে জেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম রবির সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন যুগ্ম আহ্বায়ক নাসির উদ্দীন, জেলা বিএনপির সদস্য সচিব অধ্যাপক মামুন মাহমুদসহ অন্যরা।
হাবিব উন নবী খান সোহেল আরও বলেন, বাংলাদেশ থেকে হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করেছে দুনীর্তিবাজ এই সরকার। যে কারণে বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কার পথে হাঁটছে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট রাজাপাকসে তো কাপড়চোপড় নিয়ে পালাতে পারেনি। তাই তিনি আগে থেকে কাপড় চোপড় গুছিয়ে রাখার পরামর্শ দেন সরকারের কর্তা ব্যক্তিদের।
বিক্ষোভ সমাবেশে জেলা বিএনপি, যুবদল, স্বেচ্ছাসেবক দল, ছাত্রদল, শ্রমিকদল, কৃষকদল, তাঁতীদলসহ বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।