সিডিএর অনুমতি ছাড়া সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের অভিযোগ নাগরিক সমাজের
চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) বিনা অনুমতিতে সিআরবিতে বেসরকারি হাসপাতাল নির্মাণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছে চট্টগ্রামের নাগরিক সমাজ। আর সিডিএর অনুমতি ছাড়া হাসপাতাল নির্মাণ করা হলে ব্যবস্থা নেওয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে সংস্থাটি।
আজ সোমবার দুপুরে সিডিএ ভবনে আয়োজিত এক মতবিনিময় সভায় এ হুঁশিয়ারি জানান সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষ।
এর আগে সিআরবি রক্ষা আন্দোলনকারী সংগঠন নাগরিক সমাজের আহ্বায়ক ড. অনুপম সেন ও সদস্য সচিব অ্যাডভোকেট ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী বাবুল সিডিএ চেয়ারম্যান জহিরুল আলম দোভাষের কাছে একটি স্মারকলিপি দেন।
সংগঠনটি জানায়, রেলওয়ের সঙ্গে সম্পাদিত চুক্তি বলে সিডিএ থেকে কোনো ধরনের অনুমতি ছাড়া সিআরবিতে হাসপাতাল নির্মাণের কাজ শুরু করা হয়েছে।
এ সময় সিডিএ ভবনে সিআরবি রক্ষা আন্দোলনের কো-চেয়ারম্যন মফিজুর রহমান, সিডিএ বোর্ড সদস্য জসিম উদ্দীন শাহ, এম আর আজিম, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী ফরিদ, মো. রাশেদ হাসান উপস্থিত ছিলেন।
নাগরিক সমাজের অভিযোগ, চট্টগ্রামের ঐতিহ্য সিআরবি এলাকাটি সিডিএ ডিটেইল প্ল্যানে সংরক্ষণ করার কথা। কিন্তু রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ বাণিজ্যিকভাবে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করে দীর্ঘমেয়াদি হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু করেছে। তবে হাসপাতাল নির্মাণকাজ শুরু করলেও তারা সিডিএ থেকে কোনো অনুমতি নেয়নি।
উল্লেখ্য, গত বছর সিআরবি এলাকায় বর্তমান রেলওয়ে হাসপাতাল, তৎসংলগ্ন খালি জায়গা ও রেলওয়ে হাসপাতাল কলোনি স্টাফ কোয়ার্টারের ছয় একর জমিতে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বে (পিপিপি) প্রকল্পের চুক্তি সই ও অনুমোদন হয়। বেসরকারি ইউনাইটেড এন্টারপ্রাইজ কোম্পানি লিমিটেড নামের একটি প্রতিষ্ঠান এই ছয় একর জমিতে ৫০০ শয্যার হাসপাতাল, ১০০ আসনের মেডিকেল কলেজ ও ৫০ আসনের নার্সিং ইনস্টিটিউট করবে বলে চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের সময় ১২ বছর। ইতিমধ্যে রেলওয়েকে আট কোটি টাকা পরিশোধ করেছে ওই বেসরকারি প্রতিষ্ঠানটি। ৫০ বছর পর হাসপাতালটি রেলওয়েকে হস্তান্তর করা হবে বলেও চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়।
যদিও সিআরবিতে রেলওয়ের ৫০ শয্যার বক্ষব্যাধি ও ৫০ শয্যার সাধারণ হাসপাতাল রয়েছে। এই হাসপাতালকে বিশেষায়িত হাসপাতাল হিসেবে গড়ে না তুলে একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে চুক্তি করেছে পূর্বাঞ্চল রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
অথচ চট্টগ্রাম নগর মহাপরিকল্পনায় বলা হয়েছে সিআরবির ভূপ্রাকৃতিক উন্মুক্ত স্থানকে কোনোভাবেই পরিবর্তন ও পরিবর্ধন করা যাবে না। এ ঐতিহাসিক স্থানের আশপাশে যেসব নতুন স্থাপনা করা হয়েছে, তা অপসারণ করে পর্যটনবান্ধব করতে হবে। আশপাশের বস্তি ও কাঁচা ঘরকে স্থানান্তর করতে হবে। বিদ্যমান হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা উন্নত করতে হবে। কিন্তু কোনোভাবেই সম্প্রসারণ করা যাবে না। আর কোনো বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনা করা যাবে না।