সিত্রাংয়ে মোংলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি
সিত্রাংয়ের তাণ্ডবে মোংলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ঝড়ে গত রাতে পশুর নদীর লাউডোব এলাকায় সিমেন্টের কাঁচামাল (জিপসাম) এমভি পৌষ-ফাল্গুনের পালা কার্গো জাহাজ ও বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক চ্যানেলে ডুবে গেছে বিআইডব্লিটিসির স্টিমার ঘাটের পল্টুন। ডুবন্ত দুইটি নৌযান মার্কিং করে সতর্ক লাল নিশানা টানিয়ে দিয়েছেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এদিকে, ঝড়ে দুদিনেরও বেশি সময় ধরে বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে রয়েছে মোংলা বন্দর, পৌর শহরসহ গ্রামাঞ্চলে। এতে চরম ভোগান্তিতে লাখো মানুষ।
বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং শাখার সহকারী প্রকৌশলী মো. আনিসুজ্জামান রকি বলেন, ‘যে পল্টুনটি ডুবেছে, তাতে ওই চ্যানেল দিয়ে অন্যান্য নৌযান চলাচলে আপাতত কোন সমস্যা হবে না। তারপরও দ্রুত পল্টুনটি উদ্ধারে মঙ্গলবার সকালে ঢাকা থেকে উদ্ধারকারী যানসহ লোকজন রওনা হয়েছে।’
ডুবে যাওয়া কার্গো জাহাজের মালিক মো. হাফিজুর রহমান তুহিন বলেন, ‘গত রাতে ঝড়ের কবলে পড়ে পশুর নদীর লাউডোব এলাকায় ৪০০ মেট্টিক টন জিপসাম নিয়ে কার্গো জাহাজটি ডুবে যায়।’
মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সচিব (বোর্ড ও জনসংযোগ বিভাগ) কালাচাঁদ সিংহ বলেন, ‘কার্গোটি মূল চ্যানেলের বাইরে ডুবেছে। এতে ওই চ্যানেল দিয়ে নৌযান চলাচলে কোন সমস্যা নেই। তারপরও মালিক পক্ষকে দ্রুত কার্গোটি উদ্ধারের জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আবহাওয়া স্বাভাবিক হওয়ায় মোংলা বন্দরে মঙ্গলবার দুপুরের পালা থেকে সকল বিদেশি জাহাজের পণ্য বোঝাই-খালাস ও পরিবহণ পুরোদমে শুরু হবে।’
এদিকে, ঝড়-বৃষ্টিতে উপজেলার বিভিন্ন এলাকার প্রায় দুই হাজার চিংড়ি ঘের মালিক কম বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছেন। আর ২০০ ঘের পুরোপুরি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘চিংড়ি ঘেরের বেশি ক্ষতি হয়েছে চিলা ও চাঁদপাই ইউনিয়নে।’
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. জাফর রানা বলেন, ‘ঝড়ে মোংলার বিভিন্ন এলাকায় প্রায় সাড়ে ৩০০ কাঁচা ঘরবাড়ির পুরোপুরি ও আংশিক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এ ছাড়া বিভিন্ন এলাকায় গাছপালা উপড়ে পড়েছে। তবে, হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।’
ঝড়ের রাতে ও পরদিন আজ মঙ্গলবার সকালে জোয়ারের পানি অস্বাভাবিক বেড়েছে। এতে তলিয়েছে পশুর নদীর পাড়ের জয়মনি, চিলা, কাইনমারী, কানাইনগর, শেলাবুনিয়া ও বঙ্গবন্ধু মোংলা-ঘাষিয়াখালী আন্তর্জাতিক নৌ চ্যানেলের পাড়ের বাসিন্দাদের বাড়িঘর।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কমলেশ মজুমদার বলেন, ‘ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষগুলো যাতে সব ধরনের সাহায্য-সহযোগিতা পান, সেজন্য তালিকা তৈরি করে জেলা প্রশাসক মহোদয়ের কাছে পাঠানো হচ্ছে। এরপর বরাদ্দ পেলেই ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে তা বণ্টন করা হবে।’