সিনহা হত্যা মামলা : সাক্ষ্য দিলেন প্রত্যক্ষদর্শী অটোচালক
সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলায় দ্বিতীয় দফায় সাক্ষ্যগ্রহণের দ্বিতীয় দিনে আজ সোমবার চতুর্থ সাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও জেরা শেষ হয়েছে। আজ সাক্ষ্য দিয়েছেন ঘটনার আরেক প্রত্যক্ষদর্শী সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক কামাল হোসেন। পরে তাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
পুলিশের গুলিতে সিনহা নিহতের সময় তিনি ঘটনাস্থলের কাছেই ছিলেন।
কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোহাম্মদ ইসমাইলের আদালতে আজ সকাল ১০টা থেকে বিকেল সাড়ে ৫টা পর্যন্ত এ সাক্ষ্যগ্রহণ চলে।
এর আগে সকাল পৌনে ১০টার দিকে কঠোর নিরাপত্তা বলয়ের মধ্য দিয়ে পুলিশের প্রিজনভ্যানে করে মামলার ১৫ আসামিকে আদালতের কাঠগড়ায় তোলা হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ফরিদুল আলম জানিয়েছেন, গতকাল ছয়জন সাক্ষীকে নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। তাদের মধ্যে যারা আজ হাজির হয়েছে তাদের পর্যায়ক্রমে আদালতে উপস্থাপন করা হবে। ইতোমধ্যে চতুর্থ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষ হয়েছে। আগামীকাল পঞ্চম সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করা হবে।
এদিকে, আসামিপক্ষের আইনজীবী রানা দাশ গুপ্ত বলেছেন, ‘আজ যে সাক্ষী দিয়েছেন তিনি যে অটোরিকশার চালক তার কোনো প্রমাণ নেই। আদালতকে তিনি যা বলছেন তা ইতোপূর্বে তদন্ত কর্মকর্তাকে বলেননি।’
এর আগে গত ২৩ আগস্ট থেকে ২৫ আগস্ট পর্যন্ত টানা তিনদিনে মামলার বাদী, মেজর সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস ও ঘটনার সময় সিনহার সঙ্গে থাকা সাবেক সহকর্মী সাহেদুল ইসলাম সিফাতের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছিল। গতকাল রোববার আদালতে স্বাক্ষ্য দিয়েছেন এই হত্যা মামলার ৩ নম্বর সাক্ষী মোহাম্মদ আলী।
গত বছর ৩১ জুলাই রাতে কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের টেকনাফ উপজেলার বাহারছড়া ইউনিয়নের শামলাপুর চেকপোস্টে পুলিশের গুলিতে নিহত হন সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত মেজর সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান।
এ ঘটনায় গত বছর ৫ আগস্ট সিনহার বোন শারমিন শাহরিয়ার ফেরদৌস বাদী হয়ে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও বাহারছড়া তদন্ত সাবেক ইনচার্জ পরিদর্শক লিয়াকত আলীসহ ৯ পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলায় প্রধান আসামি করা হয় লিয়াকত আলীকে। আদালত মামলার তদন্তভার দেওয়া হয় র্যাবকে। ঘটনার ছয় দিন পর ওসি প্রদীপ ও পরিদর্শক লিয়াকতসহ সাত পুলিশ সদস্য আত্মসমপর্ণ করেন। ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে টেকনাফ থানায় একটি এবং রামু থানায় আরেকটি মামলা করেন। পরে র্যাব পুলিশের মামলার তিন সাক্ষী এবং শামলাপুর চেকপোস্টে দায়িত্বরত আমর্ড পুলিশ ব্যাটালিয়ানের (এপিবিএন) তিন সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এরপর গ্রেপ্তার করা হয় টেকনাফ থানা পুলিশের সাবেক কনস্টেবল রুবেল শর্মাকে। সর্বশেষ গত ২৪ জুন আদালতে আত্মসমর্পণ করেন টেকনাফ থানার সাবেক এএসআই সাগর দেব।
গত বছর ১৩ ডিসেম্বর র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়ানের তৎকালীন দায়িত্বরত সহকারী পুলিশ সুপার খাইরুল ইসলাম ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন।
গত ২৭ জুন আদালত ১৫ জন আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন। এতে সাক্ষী করা হয় ৮৩ জনকে।