‘সিন্ডিকেট সব করছে যারা বলে, তারা সরকারকে আড়াল করতে চায়’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেছেন, ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির জন্য যারা বলে, সিন্ডিকেট সব করছে, তারা সরকারকে আড়াল করতে চায়। সবচেয়ে বড় সিন্ডিকেট এই সরকার।’
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের তফাজ্জল হোসেন মানিক মিয়া হলে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ঢাকা মহানগর কমিটির ‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি : জনদুর্ভোগ ও করণীয়’ শীর্ষক এক গোলটেবিল বৈঠকে আজ মঙ্গলবার তিনি এ মন্তব্য করেন।
টিসিবির পণ্য বিক্রি প্রসঙ্গে মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘খোদ বাণিজ্যমন্ত্রী বলেছেন, টিসিবির লাইনে প্যান্টশার্ট পরে মধ্যবিত্ত, স্বচ্ছল মানুষ পণ্য নিচ্ছে। উনার এ বক্তব্যের কিছুদিন পর দেখলাম, চট্টগ্রামে টিসিবির পণ্যের ট্রাকের পেছনে দুইশর মতো মানুষ দৌঁড়াচ্ছে। এগুলো দুর্ভিক্ষের সিনেমায় দৃশ্য হিসেবে দেখানো যায়। এ রকম করুণ দৃশ্য সবখানে। পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা লাইনে দাঁড়িয়ে থেকেও মানুষ পণ্য পাচ্ছে না।’
মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, ‘সরকারের মন্ত্রীরা বলছেন, জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে, অসুবিধা কী, জনগণের ক্রয়ক্ষমতাও নাকি তিনগুণ বেড়েছে। আমি বলি, তিনগুণ ক্রয়ক্ষমতা বাড়লে কি মানুষ টিসিবির ট্রাকের পেছনে লাইন দেয়? তখন তো মানুষ কেনাকাটা করতে ডিপার্টমেন্টাল স্টোর বা দেশের বাইরে যেতো।’
নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক বলেন, ‘বছরে দুই লাখ কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। আর বাংলাদেশ ব্যাংক বলছে, আমরা সম্প্রসারণমূলক মুদ্রানীতি করছি।’
‘গত ১৩ বছর ধরে দেশে কোনো ভোট হয়নি’ মন্তব্য করে মান্না বলেন, ‘এ সরকার ভোটই ডাকাতি করে নিয়ে যায়, টাকা তো ডাকাতি করবেই। যতো ডাকাত সব এক জায়গায়। এ ডাকাতেরা মিলে ক্ষমতায় থাকার জন্য যা যা করা দরকার করছে।’
সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, ‘দেশে রকেটের গতিতে উন্নয়ন হচ্ছে বলা হয়। এ রকেট গতির উন্নয়নের ফলে মানুষ নিষ্পেষিত হচ্ছে, বঞ্চিত হচ্ছে, ন্যায্য অধিকারও পাচ্ছে না। কথিত এ দ্রুতগতির উন্নয়নের ফলে দেশে কোটিপতি বাড়ার হার পৃথিবীর সব দেশকে ছাড়িয়ে গেছে। অথচ দেশে একটা বিরাট জনগোষ্ঠী এখনো দারিদ্র্যসীমার নিচে। অত্যন্ত কষ্টের মধ্যে জীবনযাপন করছে তারা।’
বৈঠকে লিখিত বক্তব্যে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ বিষয়ক সংগঠন কনজ্যুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহ-সভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, ভোক্তা ও বাজার বিশ্লেষকদের মতে, সরকার ও বাণিজ্য মন্ত্রণালয় নিত্যপণ্যের বাজারের দায়িত্ব পুরোটাই ব্যবসায়ীদের হাতে ছেড়ে দিয়েছে। সরকারের এ ব্যবসায়ী তোষণনীতির কারণে ব্যবসায়ীরা সন্তুষ্ট হলেও সাধারণ মানুষের মুখে হাসি নেই। দেশে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতা যে কমেছে, তা অস্বীকার করার অবকাশ নেই।’