সীতাকুণ্ডে গভীর রাতে এক পরিবারের ওপর তিন দফা হামলা
চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে থানার নিকটবর্তী সোবহানবাগ এলাকায় গত শুক্রবার গভীর রাতে একই পরিবারের তিন ভাইয়ের ঘরে তিন দফা হামলা চালিয়েছে সন্ত্রাসীরা। এতে চারজন আহত হয়েছে।
এ ঘটনায় মোস্তফা, নূর ছাবা, রিফাত উল্লাহ, কাউছার ও জামাল উল্লাহকে আসামি করে শনিবার সীতাকুণ্ড থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন এক ভাইয়ের স্ত্রী।
লিখিত অভিযোগ এবং বাদী ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা যায়, সোবহানবাগ এলাকায় দীর্ঘদিন ধরে পরিবার নিয়ে বসবাস করছেন তিন ভাই সাহাব উদ্দিন, মহিউদ্দিন ও জামাল উদ্দিন। বসতবাড়ির জায়গা নিয়ে তাঁদের সঙ্গে প্রতিবেশীদের বিরোধ রয়েছে। এ নিয়ে আদালতে একাধিক ফৌজদারী ও সিভিল মামলা বিচারাধীন। গত ২২ অক্টোবর শুক্রবার দিবাগত রাত ১টার দিকে তিন ভাইয়ের বসতঘরে পাথর নিক্ষেপ করে সন্ত্রাসীরা। এ সময় ঘুম থেকে উঠে কে বা কারা পাথর নিক্ষেপ করছে দেখার জন্য ঘর থেকে বের হলে সন্ত্রাসীরা তাদের ওপর হামলা চালায়। তারা ঘর ভাঙচুর করে দরজা-জানালা কুপিয়ে দখলের চেষ্টা করে। এ সময় সাহাব উদ্দিন, তাঁর স্ত্রী শাহিন সুলতানা, ভাই মহিউদ্দিনের স্ত্রী শামীমা আক্তার ও মেয়ের জামাই জাকির হোসেনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে হামলাকারীরা।
এ ঘটনার পর পুলিশকে খবর দিলে তারা ঘটনাস্থলে ছুটে যায়। পুলিশ দেখে হামলাকারীরা চলে যায়। পুলিশ চলে যাওয়ার পর দ্বিতীয় দফা হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এরপর শামীমা আক্তার সরকারের জরুরি সেবা ৯৯৯-এ ফোন করলে সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) হাবিব ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাঁকে দেখে আবার চলে যায় সন্ত্রাসীরা। এসআই হাবিব চলে যাওয়ার পর তৃতীয় দফায় হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। এরপর আবার ৯৯৯-এ ফোন দেন শামীমা। এসআই হাবিব ৯৯৯ থেকে ফোন পেয়ে সীতাকুণ্ড পৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর শামছুল আলম আজাদকে নিয়ে ঘটনাস্থলে যান। তাদের দেখে হামলাকারীরা আবার পালিয়ে যায়।
আহত শামীমা আক্তার জানান, নুরুল হুদার নেতৃত্বে মোস্তফা, নূর ছাবা, রিফাত উল্লাহ, কাউছারসহ ছয়-সাতজনের একদল সন্ত্রাসী গভীর রাতে তাঁদের ঘরে হামলা চালিয়েছে। বাধা দিলে তারা শামীমা আক্তার, সাহাব উদ্দিন, জাকির হোসেন ও শাহিন সুলতানাসহ চারজনকে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে। পরে স্থানীয়রা তাঁদের উদ্ধার করে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন।
শামীমা আক্তার আরও জানান, ২০১৬ সালেও একই সন্ত্রাসীরা তাঁদের ওপর এই ধরনের হামলা চালায় এবং ওই বিষয়ে আদালতে একটি ফৌজদারী মামলা বিচারাধীন। পুলিশ সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় বারবার একই ধরনের ঘটনা ঘটছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।
হামলা চালানোর ব্যাপারে জানতে চাইলে নূর ছাবা বলেন, ‘শামীমা আক্তারের পরিবারের লোকজনের সঙ্গে বসতভিটা নিয়ে দীর্ঘদিন আমাদের সিভিল মামলা চলছে। আমাদের ফাঁসানোর জন্য ষড়যন্ত্রমূলকভাবে থানায় অভিযোগ দিয়েছে। আমরাও থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছি।’
এই বিষয়ে সীতাকুণ্ড থানার উপপরিদর্শক (এসআই) টিবলু কুমার মজুমদার বলেন, উভয় পক্ষ থানায় অভিযোগ করেছেন। তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।