সুনামগঞ্জে পৃথক মামলায় ৭ আসামির সাজা
সুনামগঞ্জে পৃথক ঘটনায় করা মামলায় সাতজনকে সাজা দিয়েছেন আদালত। দিরাইয়ে চলন্তবাসে তরুণী নির্যাতনের ঘটনায় চালকের পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ৫০ হাজার টাকা জরিমানা, একটি সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় চারজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা করে জরিমানা, আরেকটি ধর্ষণের ঘটনায় একজনের যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং আরেক আসামির ১৪ বছর সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১টার দিকে জেলার নারী ও শিশু দমন ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. জাকির হোসেন এই পৃথক তিনটি মামলার রায় দেন।
আদালতের সূত্রে জানা যায় , জেলার বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থীকে ২০১২ সালের ৩১ আগস্ট দুপুরে আসামিরা হাত-পা বেধে ধর্ষণ করে ভিডিও ধারণ করে ইন্টারনেটের মাধ্যমে ছড়িয়ে দেয়। পরে থানায় মামলা দায়ের হয়। আসামিদের গ্রেপ্তার করা হলে তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। মামলা চলাকালে রাষ্ট্রপক্ষ আট সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করেন। সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে আদালত আসামি আনোয়ার হোসেন খোকন, শয়ফুল্লাহ, ছাইদুর রহমান ও শফিকুলকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং এক লাখ জরিমানার সাজা দেন। জরিমানার টাকা ভিকটিম ক্ষতিপূরণ হিসেবে পাবে। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
অন্যদিকে, দুই বছর আগে দিরাইয়ে চলন্ত বাসে কলেজ শিক্ষার্থী তরুণিকে নির্যাতনের আলোচিত ঘটনার আসামিকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে। ২০২০ সালের ২৬ ডিসেম্বর চলন্ত বাসে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ধর্ষণের চেষ্টা করে চালক। পরে ভুক্তভোগী চলন্ত বাস থেকে লাফ দিয়ে প্রাণ বাঁচায়। এ ঘটনায় মামলা দায়ের হলে, আসামি ১৬৪ ধারায় দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পুলিশ চার্জশিট দাখিল করে। শেষে রাষ্ট্রপক্ষ নয়জন সাক্ষীকে আদালতে উপস্থাপন করে। সাক্ষ্যপ্রমাণ পর্যালোচনা করে আদালত শহিদ মিয়াকে পাঁচ বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করেন। এই জরিমানার টাকা ভিকটিম পাবেন। রায় ঘোষণার সময় আসামিরা উপস্থিত ছিল।
সুনামগঞ্জের ছাতকের আরেকটি ধর্ষণের ঘটনায় আসামি ইকবাল হোসেনকে সশ্রম যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানা এবং আসামি জয়নাল আবেদীনকে ১৪ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানার রায় দিয়েছেন একই আদালত। অনাদায়ে আরও তিন মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
রায়ের বিষয়টি নিশ্চিত করে নারী ও শিশু আদালতের পিপি নান্টু রায় বলেন, ‘তিনটি রায়েই রাষ্ট্রপক্ষ সন্তোষ্ট, নির্যাতিতা বাদীরা ন্যায় বিচার পেয়েছেন।’