সুন্দরবনে অপরাধমূলক কর্মকাণ্ড না করার অঙ্গীকার
সুন্দরবনে হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরাসহ নানা ধরনের অপরাধের সঙ্গে জড়িত মোংলার বনসংলগ্ন লোকালয়ের ১০ দুর্বৃত্ত স্বাভাবিক পেশায় জীবনযাপনের অঙ্গীকার করেছেন। মোংলার চিলা ইউনিয়নের জয়মনির পূর্ব সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জ কার্যালয়ে গতকাল শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে স্বেচ্ছায় তাঁরা আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় তাঁরা ৩০০ টাকার স্ট্যাম্পে অঙ্গীকার করে স্বাক্ষর দেন।
অঙ্গীকার করে তাঁরা লেখেন, তাঁরা বনের হরিণ শিকার, নদী-খালে বিষ দিয়ে মাছ ধরার মতো জঘন্য ও ঘৃণিত কাজের সঙ্গে জড়িত ছিলেন। তাঁরা তাঁদের অপকর্মের ভুল বুঝতে পেরে এবং এ পেশার প্রতি ঘৃণা জন্মানোয় স্বেচ্ছায় সরে আসছেন। ভবিষ্যতে তাঁরা এ ধরনের অপকর্ম থেকে বিরত থাকবেন এবং বিকল্প পেশায় জীবিকা নির্বাহ করবেন বলে জানান। এ ছাড়া তাঁরা উপস্থিত বনবিভাগের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সামনে কোরআন ধরেও শপথ করেন।
এ সময় চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. এনামুল হক, স্টেশন অফিসার মো. ওবায়দুর রহমান ও স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য মো. ওলিয়ার রহমান উপস্থিত ছিলেন।
আত্মসমর্পণকারীরা হলেন, চিলা ইউনিয়নের বৈদ্যমারী গ্রামের ফরিদ হাওলাদার, সোহাগ জোমাদ্দার, ফরিদ ব্যাপারী, মনির জোমাদ্দার, ডিয়ার ফকির, শুকুর শেখ, এমাদুল ফকির, মাহবুব ফকির, রাসেল শেখ ও কামরুল ফকির।
চাঁদপাই রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. এনামুল হক বলেন, ‘নানা ধরনের বন অপরাধের সঙ্গে জড়িত এমন ১০ জন হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরাসহ বনের ক্ষতিসাধন থেকে বিরত থাকার অঙ্গীকার করে স্বেচ্ছায় আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করেছেন এবং শপথ নিয়েছেন। তাঁরা এখন থেকে বিকল্প পেশায় নিয়োজিত হবেন। তাঁদের প্রত্যেকের বিরুদ্ধে একাধিক বন অপরাধের মামলা রয়েছে। অধিকাংশের নামে রয়েছে হরিণ শিকারের মামলা। কারো কারো রয়েছে বিষ দিয়ে মাছ ধরার মামলাও। স্বাভাবিক জীবনে ফেরায় তাঁদের বিকল্প পেশায় সহায়তার জন্য বনবিভাগের পক্ষ থেকে আশ্বস্ত করা হয়েছে। বনবিভাগের ‘সুরক্ষা’ নামক একটি প্রজেক্ট এরই মধ্যে পাস হয়েছে। মাসখানেকের মধ্যে ওই প্রজেক্টের টাকা ছাড় হবে। ওই প্রজেক্টের আওতায় তাদের বিকল্প কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া হবে।