সুলতান মেলায় চাঁদা না পেয়ে হামলা, গ্রেপ্তার ২
নড়াইলে সুলতান মেলার স্টল থেকে চাঁদা না পেয়ে ছাত্রলীগের কয়েক কর্মী-সমর্থক হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার (১২ জানুয়ারি) সকালে পাঁচজনের নামে মামলা হয়েছে। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুলতান মেলায় এ হামলা ও ভাঙচুর করা হয়।
এরই মধ্যে দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার হওয়া দুজন হলেন দক্ষিণ নড়াইলের হাবিব বর্ষণ ও অনিক মোল্যা। গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সুলতান মেলায় রানা ভাইয়ের ফুচকার স্টলে আট থেকে ১০ জন ছাত্রলীগ কর্মী-সমর্থক হামলা চালিয়ে মালিকসহ আট কর্মচারীকে পিটিয়ে আহত করে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর মধ্যে বুকে আঘাত পেয়ে আহত ইমরানকে সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় দোকানমালিক মনসুর রানা বাদী হয়ে সদর থানায় মামলা করেছেন।
দোকানমালিক মনসুর রানা বলেন, ‘গত ৭ জানুয়ারি সুলতান মেলা শুরু হয়েছে। এর আগে স্টল তৈরির সময় জয়, মিজান, বর্ষণ, অনিকসহ অজ্ঞাত আট থেকে ১০ জন আমার কাছে ১০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। আমি তাদের বলেছি, এটা প্রশাসনের মেলা। চাঁদা দিতে পারব না। এরপর গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় ফুচকা খাওয়ার সূত্র ধরে তারা আমাদের স্টলে এসে ভাঙচুর করে অন্তত ৫০ হাজার টাকার ক্ষতি করেছে। এ ঘটনায় আমি ছাড়াও দোকানের কর্মচারী ইমরান, নাজমুল, মাহফুজার, ডিপজল, জিহাদসহ আটজন আহত হয়েছে।’
এ ব্যাপারে সদর উপজেলার ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক সিদ্ধার্থ সিংহ পল্টু বলেন, ‘যারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে, তারা কেউ ছাত্রলীগের নয়। জয় ও মিজান ঘটনার সময় উপস্থিত ছিল না।’
এ ব্যাপারে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহমুদুর রহমান বলেন, ‘চাঁদা দাবি, হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় পাঁচজনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত পরিচয় আটজনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। পুলিশ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে। অন্যদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।’
বিশ্ববরেণ্য চিত্রশিল্পী এস এম সুলতানের ৯৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ১৪ দিনব্যাপী সুলতান মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত ৭ জানুয়ারি বিকেলে নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে মেলার উদ্বোধন করেন খুলনা বিভাগের অতিরিক্ত কমিশনার আব্দুর রশিদ। মেলায় বিভিন্ন পণ্যের ৯২টি স্টল বসেছে। ২০ জানুয়ারি মেলা শেষ হবে। এস এম সুলতান ফাউন্ডেশন ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এ মেলা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।
এবারের সুলতান মেলায় নিরাপত্তা বেশ ঢিলেঢালা বলে অভিযোগ উঠেছে। মেলার প্রবেশ পথে নেই কোনো পুলিশি তল্লাশির ব্যবস্থা। দুজন আনসার সদস্য প্রবেশ পথে দায়িত্ব পালন করছেন। মেলা চত্বরে মোটরসাইকেল প্রবেশ নিষেধ থাকলেও অনেকেই তা মানছে না। আনসার সদস্যসহ অনুষ্ঠানের সঞ্চালকরা এ ব্যাপারে বারবার নিষেধ করলেও কাজ হচ্ছে না। আগের মেলাগুলোতে প্রবেশপথ ও বের হওয়ার পথ আলাদা থাকলেও এবার যে যার ইচ্ছেমতো যাওয়া-আসা করছে। এবারই প্রথম মেলায় পুলিশি তৎপরতা নেই বললেই চলে। তাই অনেকেই মেলার নিরাপত্তা নিয়ে শংকিত।