সেই অসুস্থ বাবাকে ‘স্বপ্ন মহলে’ তুললেন ছেলেরা
লক্ষ্মীপুরে শয্যাশায়ী শফিকুল ইসলামকে (৯৫) মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে এনে নিজেদের বাড়ি স্বপ্ন মহলে তুলেছেন সেই ছেলেরা। আজ শনিবার বেলা ১১টার দিকে সফিকুল ইসলামকে দুই ছেলে শাহ আলম, আলমগীর হোসেন ও নাতি সিয়াম আহমেদ নিয়ে আসেন।
বৃদ্ধের ছেলে শাহ আলম ও আলমগীর হোসেন বলেন, ‘অসুস্থ বাবাকে ঘর থেকে বের করে দিয়ে ভুল করেছি। এখন থেকে বাবা আমাদের কাছেই থাকবেন। তাঁর সেবাযত্ন আমরাই করব। নিজেদের মধ্যে ভুল বুঝাবুঝি হয়েছে।’
এ ব্যাপারে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা পাটওয়ারী বলেন, ‘বৃদ্ধ সফিকুলের ছেলেরা গিয়ে মেয়ের শ্বশুরবাড়ি থেকে তাঁকে নিয়ে এসেছে। এখন তিনি বড় ছেলে জাহাঙ্গীর আলমের ঘরেই আছেন। ভবিষ্যতে ফের এমন কোনো কাজ করবেন না বলে সফিকুলের ছেলেরা লিখিত মুচলেকা দিয়েও জানিয়েছেন।’
জানা গেছে, শয্যাশায়ী শফিকুলকে লক্ষ্মীপুর পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের মেঘনা রোড এলাকার বাসিন্দা। তিনি এক সময় ছাপাখানায় কাজ করতেন। তাঁর ছেলেরা গতকাল শুক্রবার বের করে দিয়ে বাসার সামনে উঠানে শীতলপাটির মধ্যে বাসার (স্বপ্ন মহল) সামনে ফেলে রাখে। কয়েক ঘণ্টা ছেলের বাসার সামনে খোলা আকাশের নিচে পড়ে থাকতে দেখা যায় বৃদ্ধ শফিকুলকে। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক কার্যালয়ের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট রাসেল ইকবাল ও রাজিব হোসেন ঘটনাস্থল এসে সফিকুলের ছেলেদের সঙ্গে কথা বলেন। কিন্তু ছেলেরা অসুস্থ বাবার দায়িত্ব নিতে রাজি হননি। পরে বড় মেয়ে সুরাইয়া বেগম তাঁর বাবাকে মজুপুর এলাকায় নিজের শ্বশুরবাড়িতে নিয়ে যান।
এদিকে, বিকেলে সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মামুনুর রশিদ ঘটনাস্থল এসে সফিকুলের ছেলে ও প্রতিবেশীদের নিয়ে বৈঠক করেন। এ সময় বাড়িতে থাকা দুই ছেলে লিখিতভাবে মুচলেকা দিয়ে বাবাকে সঙ্গে রেখে সেবা-যত্ন করার অঙ্গীকার করেন। এর পরিপ্রেক্ষিতেই আজ মজুপুর এলাকার বোনের বাড়ি থেকে বৃদ্ধ বাবাকে নিয়ে আসেন দুই ছেলে ও নাতি।
এ ঘটনায় লক্ষ্মীপুর জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহজাহান বলেন, ‘বৃদ্ধ শফিকুলের ঘটনাটি মর্মান্তিক। এটি আমাদের মনে দাগ কেটেছে। তার চিকিৎসা ও পুষ্টিকর খাবার সরবরাহসহ স্বাভাবিক জীবন যাপনে আমরা পাশে আছি।’