স্ত্রীকে দফায় দফায় মারধর, পরে কিশোর স্বামীর ‘আত্মহত্যা’
প্রেম করে ছয় মাস হলো বিয়ে করেছিল কিশোর মো. রাব্বি (১৭) ও মিনারা বেগম (১৬)। বিয়ের পর থেকে তাদের মধ্যে ঝগড়া-বিবাদ লেগেই থাকত। সংসার খরচসহ বাজার-সদাই করা নিয়ে মিনারাকে প্রায় মারধর করত রাব্বি।
গতকাল মঙ্গলবার রাতে মিনারা বেগম তার স্বামী রাব্বির কাছে বাসা ভাড়ার টাকা চাইলে ঝগড়া শুরু হয়। একপর্যায়ে রাব্বি তার স্ত্রীকে মারধর করে। কিছুক্ষণ পর রাব্বি মিনারাকে দুইটা সিগারেট কিনে আনতে বলে। কিন্তু মিনারা যেতে না চাওয়ায় পুনরায় মারধর করে।
রাত আনুমানিক ১১টা বাজে মিনারাকে আবার সিগারেট আনতে বলে রাব্বি। সে সময় তিনি রাজধানীর মোহাম্মদপুরের বেড়িবাঁধ এলাকার বাসার পাশের একটি দোকান থেকে দুইটি সিগারেট আনে।
কিন্তু মিনারা সে সময় ঘরের দরজা বন্ধ দেখতে পায়। পরে জানালার ফাঁক দিয়ে উঁকি দিয়ে মিনারা দেখে, রাব্বি টিনের ঘরের বাঁশের সঙ্গে ওড়না পেঁচিয়ে ঝুলে আছে। পরে মিনারার চিৎকারে স্থানীয় লোকজন এগিয়ে আসেন। তারপর অচেতন রাব্বিকে রাত ৩টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আজ বুধবার দুপুরে এনটিভি অনলাইনকে পুরো ঘটনা জানিয়েছেন রাব্বির মা বুবলি আক্তার।
ঢামেক পুলিশ ফাঁড়ির দায়িত্বরত পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া বলেন, ‘রাব্বিকে ঢামেক আনা হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের ধারণা, আগেই রাব্বি মারা গেছে। বিষয়টি আমরা মোহাম্মদপুর থানাকে জানিয়েছি। তারা তদন্ত করে দেখছে।’
বুবলি আক্তার বলেন, ‘আমার ছেলে নেশা করত। ২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসের ছয়দিন বাকি থাকতে প্রেম করে বিয়ে করে। আমরাও বেড়িবাঁধ এলাকায় থাকি, তবে রাব্বি আর ওর বউ আলাদা থাকত। বাজার-সদাই করা থেকে শুরু করে বাসার ভাড়া দেওয়া নিয়েও তাদের মধ্যে এর আগে অনেকবার ঝামেলা হয়েছে।’
‘গতকালও বাসাভাড়া দেওয়ার কথা বলাতে ঝামেলা শুরু হয়। এরপর আমার বউমাকে মারধর করে ছেলে। তারপর সিগারেট আনতে বলে দোকান থেকে। প্রথমে সিগারেট আনতে চায়নি মিনারা। পরে মারধর করে আবার সিগারেট আনতে পাঠায় রাব্বি। বউ এসে দেখে, রাব্বি ঝুলে আছে।’
‘আমার ছেলের বউ পাঁচ মাস হলো প্রেগন্যান্ট (অন্তঃসত্ত্বা)। আমাদের গ্রামের বাড়ি বরিশাল আর মিনারাদের গ্রামের বাড়ি ভোলা। আমার বেয়াই ও আমরা বেড়িবাঁধ এলাকায় থাকি', যোগ করেন বুবলি আক্তার।