স্ত্রী হত্যাকাণ্ডে র্যাবের হাতে স্বামীসহ গ্রেপ্তার ২
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলায় গৃহবধূকে শ্বাসরোধ করে হত্যার অভিযোগে করা মামলার মূল আসামি স্বামীসহ দুজনকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-১৪। আজ রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) ভোরে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখান উপজেলার তালতলা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে তাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়।
র্যাব ১৪-এর মিডিয়া কর্মকর্তা মো. আনোয়ার হোসেন সাংবাদিকদের জানান, উপজেলার বলাইশিমুল ইউনিয়নের সরাপাড়া গ্রামে যৌতুকের দাবিতে গৃহবধূ পপিকে হত্যা করা হয়। এর ছায়া তদন্ত নেমে আধুনিক তথ্যপ্রযুক্তি ব্যবহার করে মুন্সীগঞ্জ জেলার সিরাজদিখানের তালতলা লঞ্চঘাট এলাকা থেকে মামলার প্রধান আসামি স্বামী মো. সাদ্দাম হোসেন এবং তাঁর সহযোগী ভাই মো. শাহ আলমকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার করা দুই আসামিকে দুপুরে কেন্দুয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
মিডিয়া কর্মকর্তা আরও জানান, নিহত পপি আক্তারের সঙ্গে সাদ্দাম হোসেনের বিয়ে হয় দুই বছর আগে। বিয়েতে যৌতুক হিসেবে নগদ এক লাখ টাকা ও সংসার সাজানো বাবদ আরও এক লাখ টাকার ফার্নিচার দেওয়া হয়। বিয়ের কয়েক মাস পার হওয়ার পর যৌতুকলোভী স্বামী সাদ্দাম ও তার পরিবারের লোকজন পপিকে বাবার বাড়ি থেকে আরও দুই লাখ টাকা যৌতক এনে দেওয়ার জন্য বলেন। পপি বাবার বাড়ি থেকে টাকা এনে দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে স্বামী ও তাঁর পরিবারের অন্য সদস্যরা তাঁকে মারধরসহ শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করতে থাকে।
র্যাব কর্মকর্তা আরও জানান, স্বামীর বাড়ির অত্যাচার-নির্যাতন সইতে না পেরে একপর্যায়ে পপি তাঁর বাবার বাড়িতে চলে আসেন। এর দেড় মাস পর সাদ্দাম হোসেন অন্য লোকজনের সহায়তায় শ্বশুড়বাড়িতে গিয়ে পপিকে আর নির্যাতন করবেন না এবং যৌতুক দাবি করবেন না মর্মে অঙ্গীকার করে নিজবাড়িতে নিয়ে আসেন। গত ৭ ফেব্রুয়ারি গভীর রাতে সাদ্দাম হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যরা মিলে পপিকে মারধরের একপর্যায়ে বিদ্যুতের তার গলায় পেঁচিয়ে বালিশ চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। রাতেই সাদ্দামসহ লোকজন পালিয়ে যায়। পরের দিন সকালে লোক মারফত খবর পেয়ে পপির মা পারভীন আক্তার পরিবার ও এলাকার লোকজন নিয়ে সাদ্দামের বাড়িতে গিয়ে পপির মৃতদেহ দেখতে পান। এ ঘটনায় মা পারভীন আক্তার বাদী হয়ে সাদ্দামসহ পরিবারের ছয়জনকে আসামি করে কেন্দুয়া থানায় একটি হত্যা মামলা করেন।