স্ত্রী হত্যার দায়ে এক ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর
স্ত্রীকে হত্যার দায়ে দিনাজপুরে আব্দুল হক (৫০) নামের এক ব্যক্তির ফাঁসি কার্যকর করা হয়েছে। আব্দুল হকের বাড়ি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভক্তিপুর চৌধুরী পাড়ায়।
দিনাজপুর জেলা কারাগারে বুধবার দিবাগত রাত ১২টা ১ মিনিটে আব্দুল হকের ফাঁসি কার্যকর হয়। এ সময় জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকি, পুলিশ সুপার আনোয়ার হোসেন, সিভিল সার্জন ড.আব্দুল কুদ্দুছ, জেল সুপার মোকাম্মেল হোসেন, রংপুর ডিআইজি (প্রিজন) আলতাফ হোসেন, কারা চিকিৎসকসহ পদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
এর আগে গতকাল বিকেলে আব্দুল হকের সঙ্গে পরিবারের ১৫ সদস্য (নিকটাত্মীয়) শেষ সাক্ষাৎ করে যায়। তারা আব্দুল হকের সঙ্গে প্রায় এক ঘণ্টা কথা বলে। এরপর আব্দুল হকের পছন্দের খাবার খাইয়ে পরিবারের সদস্যেরা চলে যায়।
এরপর সন্ধ্যায় জেলা কারাগার মসজিদের ইমাম কারা অভ্যন্তরে গিয়ে আব্দুল হককে অজু ও গোসলের পর তওবা পাঠ করান। ফাঁসি কার্যকরের পর মৃত্যু নিশ্চিত হলে প্রয়োজনীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষে রাতেই আব্দুল হকের পরিবারের সদস্যদের কাছে লাশ হস্তান্তর করা হয়।
জানা গেছে, রংপুরের মিঠাপুকুর উপজেলার ভক্তিপুর চৌধুরীপাড়া এলাকার মৃত আছির উদ্দীনের পুত্র মো. আব্দুল হক ২০০২ সালের ফেব্রæয়ারিতে তাঁর স্ত্রী বেলি বেগমকে হত্যা করেন। পরে আব্দুল হকের শাশুড়ি বাদী হয়ে ২০০২ সালের ৯ ফেব্রæয়ারি মিঠাপুকুর থানায় একটি হত্যা মামলা করেন। মামলার নম্বর ১৫, ধারা-২০০০ সালের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১(ক), নারী ও শিশু মামলা নং-৩৩৭/২০০২।
এরপর ২০০৭ সালের ৩ মে রংপুর নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ আব্দুল হককে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দেন। পরবর্তীকালে হাইকোর্ট ও সুপ্রিমকোর্টে সাজা বহাল থাকায়, সর্বশেষ রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণ ভিক্ষার আবেদন করেন আব্দুল হক। রাষ্ট্রপতি সবকিছু বিবেচনায় গত ১৮ মে প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুর করলে আব্দুল হকের ফাঁসি কার্যকরের উদ্যোগ নেয় কারা কর্তৃপক্ষ।
একটি সূত্র জানায়, দিনাজপুর জেলা কারাগারে ফাঁসি কার্যকর করতে রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে অহিদুল ইসলাম নামের যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত বন্দিকে জল্লাদ হিসেবে আনা হয়। দিনাজপুর জেল সুপার মো. মোকাম্মেল হোসেন লাল রুমাল ফেলে ফাঁসির সংকেত দেন বলে জানা যায়। ২০০২ সালের ২৮ আগস্ট থেকে আব্দুল হক কারাগারে বন্দি ছিলেন।