‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করল বাংলাদেশ’
জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদে সর্বসম্মতিক্রমে স্বল্পোন্নত দেশের (এলডিসি) ক্যাটাগরি থেকে চূড়ান্তভাবে বাংলাদেশের উত্তরণের রেজল্যুশন গৃহীত হয়েছে। রেজল্যুশনটি গ্রহণের মাধ্যমে বাংলাদেশ এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে পরবর্তী ধাপে উত্তরণের সব প্রক্রিয়া সম্পন্ন করেছে।
জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশন এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ খবর জানিয়েছে।
সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ‘এটি বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় একটি যুগান্তকারী অর্জন, যা এমন এক সময়ে অর্জিত হলো, যখন আমরা বাংলাদেশের মহান স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী এবং জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্মশতবার্ষিকী উদ্যাপন করছি।’
রেজল্যুশনটি গৃহীত হওয়ার পর বাংলাদেশের পক্ষে বক্তব্য দেন জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। প্রদত্ত বক্তব্যে তিনি রেজল্যুশনটি গ্রহণের ক্ষেত্রে ঐক্যমতে পৌঁছাতে সহায়তার জন্য সব সদস্য দেশ, বিশেষ করে বাংলাদেশের উন্নয়ন অংশীদারদের ধন্যবাদ জানান।
রাবাব ফাতিমা বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে একটি মধ্যম আয়ের দেশে এবং এবং ২০৪১ সালের মধ্যে একটি উন্নত সমৃদ্ধ দেশে রূপান্তরের স্বপ্ন দেখেছেন। কোভিড-১৯ অতিমারির ভয়াবহতম সময়েও সব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে তিনি বাংলাদেশের এ অদম্য অগ্রযাত্রায় সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন। যার ফলে আজ রূপকল্প-২০২১ পূর্ণতা পেল।’
স্বল্পোন্নত দেশের ক্যাটাগরি থেকে উত্তরিত (স্নাতক) হওয়া কেবল সুনির্দিষ্ট একটি দেশেরই সাফল্য নয়, এটি জাতিসংঘের নেতৃত্বে বহুপাক্ষীয় অংশীদারত্বের শক্তির প্রমাণও বটে উল্লেখ করে রাষ্ট্রদূত ফাতিমা বলেন, ‘উত্তরণ কোনোভাবেই শাস্তি হতে পারে না। এটি হতে পারে পুরস্কার।’
এ প্রসঙ্গে রাবাব ফাতিমা এলডিসি ক্যাটাগরি থেকে উত্তরিত ও উত্তরণের পথে থাকা দেশগুলোর জন্য প্রণোদনাভিত্তিক আন্তর্জাতিক সহায়তা কাঠামো নিশ্চিত করার গুরুত্ব তুলে ধরেন।
এ ছাড়া উত্তরণ চ্যালেঞ্জের প্রতিটি দিক বিশেষ করে উত্তরণ পরবর্তী আন্তর্জাতিক সহায়তা ব্যবস্থা, বাধাহীন উত্তরণ এবং এসডিজি বাস্তবায়নের জন্য অর্থায়ন ইত্যাদি চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার উপযোগী এবং লক্ষ্যে পৌঁছানোর জন্য স্পষ্ট রোডম্যাপ তৈরিরও আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত ফাতিমা।
কাতারের দোহায় অনুষ্ঠেয় আসন্ন পঞ্চম জাতিসংঘ স্বল্পোন্নত দেশগুলোর সম্মেলন (এলডিসি-৫) প্রসঙ্গ উল্লেখ করে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, পরবর্তী দশকে এলডিসি’র দেশগুলোর জন্য একটি রূপান্তরধর্মী কর্মসূচি নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সম্মেলনটি উন্নয়ন সহযোগীদের চমৎকার একটি সুযোগ এনে দিবে।
দোহা প্রোগ্রাম অব অ্যাকশন স্বল্পোন্নত দেশগুলোর উত্তরণের বিষয়টিকে এর অগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলোর একটি হিসেবে চিহ্নিত করেছে। ২০৩১ সালের মধ্যে যাতে আরও ১৫টি এলডিসিভুক্ত দেশকে উত্তরণের মানদণ্ড পূরণে সক্ষম করে তোলা যায়, খসড়া দোহা প্রোগ্রাম অব অ্যাকশনে সে লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। এ উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যের সাফল্য নির্ভর করছে মূলত উন্নয়ন অংশীদারদের সংহতি এবং বাড়তি সহায়তা প্রদানের প্রতিশ্রুতির ওপর।
জাতিসংঘে নিযুক্ত বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা ও কানাডার স্থায়ী প্রতিনিধি রর্বাট রে এলডিসি-৫ সম্মেলনের প্রস্তুতিমূলক কমিটিতে যৌথভাবে সভাপতিত্ব করছেন।