স্যানিটারি পণ্য কিনতে গিয়ে লাশ হয়ে ফিরল দম্পতি
নোয়াখালীর সোনাইমুড়ির মমিনুল ইসলাম (৩৮)। তাঁর স্ত্রী নদী আক্তারকে নিয়ে স্যানিটারি পণ্য কিনতে গিয়েছিলেন রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে। ওই এলাকায় বিস্ফোরণে মৃত্যু হয়েছে এই দম্পতির।
গতকাল মঙ্গলবার (৮ মার্চ) রাত ৮টার দিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে মমিনুল ইসলামের মামাতো ভাই আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘বাসার বেসিন ফেটে গেছিল। বেসিনসহ আরও কিছু স্যানিটারি পণ্য কেনার জন্য ভাই ও ভাবি বেরিয়েছিলেন। সেখানে গিয়ে তারা মারা গেলেন। এখনও মৃত্যুর খবর ভাই ও ভাবির মা–বাবাকে জানানো হয়নি। তারা হাসপাতালে এলে আরও কষ্ট বাড়বে। হাসপাতাল থেকে লাশ বের করে তারপর তাদের জানাব।’
মমিনুল ইসলামের গ্রামের বাড়ি নোয়াখালীর সোনাইমুড়ি উপজেলায়। নদী ইসলামের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জে। ঢাকার চকবাজারের ইসলামবাগ এলাকায় থাকতেন তাঁরা। মমিনুল ইসলাম সিসিটিভি ক্যামেরা মেরামতের কাজ করতেন। তাঁর স্ত্রী নদী আক্তার গৃহিণী ছিলেন। তাঁদের ৯ বছর বয়সী এক ছেলে ও ১১ বছর বয়সী এক মেয়ে রয়েছে।
বিস্ফোরণে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের খোঁজে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনে কয়েকশ মানুষ ভিড় করেছেন। কেউ স্বজনের খোঁজ পেলেও দেখতে পারেননি। তাঁদের কান্না আর আহাজারিতে ভারী হয়ে উঠেছে হাসপাতাল প্রাঙ্গণ।
সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে নিহতের সংখ্যা বেড়ে ১৮
রাজধানীর সিদ্দিকবাজারে বিস্ফোরণে নিহত মানুষের সংখ্যা ১৮ জনে দাঁড়িয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে বিকেল পৌনে পাঁচটার দিকে গুলিস্তানে বিআরটিসির বাস কাউন্টারের কাছে সিদ্দিকবাজারে ভয়াবহ বিস্ফোরণ ঘটে। এতে পাশাপাশি দুটি বহুতল ভবন ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এর মধ্যে একটি ভবন সাততলা, আরেকটি ভবন পাঁচতলা। এর মধ্যে সাততলা ভবনের বেজমেন্ট, প্রথম ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। আর পাঁচতলা ভবনের নিচতলা ও দ্বিতীয় তলা বিধ্বস্ত হয়েছে। এই ভবনের দ্বিতীয় থেকে পঞ্চম তলা পর্যন্ত ব্র্যাক ব্যাংকের কার্যালয়।
ঘটনার পর সন্ধ্যা ৬ টার দিকে ব্র্যাক ব্যাংকের ভেতরে আটকে থাকা এক ব্যক্তিকে উদ্ধারকারীরা বের করে নিয়ে আসেন। তিনি বলেন, ‘আমরা ভেতরে ছিলাম। হঠাৎ বিস্ফোরণে বিকট শব্দ। ভেতরে সবাই আমরা হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। সবাই যতটা সম্ভব ভেতরের দিকে গিয়েছি। পরে ফায়ার সার্ভিসের লোক এসে আমাদের ভেতর থেকে বের করে নিয়ে আসে।’