হাকিমপুরে ভিজিএফের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ
দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান কাওসার রহমানের বিরুদ্ধে ঈদে দুস্থদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর উপহারের চাল বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। ১০ কেজি করে চাল বিতরণের কথা থাকলেও দেওয়া হচ্ছে ৮ কেজি থেকে ৯ কেজি করে। চাল কম দেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন গরিব ও দুস্থ উপকারভোগীরা। এবিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)।
আজ শুক্রবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে খট্টামাধবপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে গরিব ও দুস্থদের মাঝে ভিজিএফের চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ইউএনওর প্রতিনিধি হিসেবে একজন ট্যাগ অফিসারের উপস্থিতিতে চাল বিতরণের কথা থাকলেও সেখানে তাঁর দেখা মেলেনি। দাঁড়িপাল্লা বা ডিজিটাল ওজনে চাল দেওয়ার পরিবর্তে প্লাস্টিকের বালতিতে করে অনুমান করে চাল দেওয়া হচ্ছে। যা চাল পাওয়া উপকারভোগী কয়েকজনের চাল পুনরায় ডিজিটাল ওজনে মাপা হলে কেউ ৮ কেজি আবার কেউ ৯ কেজি করে চাল পেয়েছেন। পরে সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে কয়েকজনের বালতির চাল ওজন করে ৯ কেজি ৬০০ গ্রাম করে পাওয়া যায়।
চাল পাওয়া সিরাজুল ইসলাম বলেন, শুক্রবার সকালে আমি ও আমার ভায়রার পাওয়া দুটি কার্ডের চাল ইউনিয়ন পরিষদে তুলতে আসি। পরে চাল তুলে বাইরে ওজন করে দেখি ৯ কেজি। আমরা দুজন ১৮ কেজি পেয়েছি, যা ২ কেজি কম। তারা ডিজিটালে ওজন না করে বালতিতে করে দেওয়ায় ১ কেজি করে কম দিয়েছে।
আরেকজন উপকারভোগী ফরহাদুল ইসলাম বলেন, চাল নিয়ে পাশের দোকানে মেপে দেখি ৮ কেজি। ১০ কেজি দেওয়ার কথা। তারা তাদের ইচ্ছামতো চাল দিচ্ছে। জনগণের কোনো দাম নেই। এখানে তাঁরা যা বলছে, তাই করছে।
আরেক উপকারভোগী সুমন বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমাদের জন্য ১০ কেজি করে চাল বরাদ্দ দিয়েছেন। কিন্তু তাঁরা ৮ কেজি করে চাল দিচ্ছে। আমরা ২ কেজি করে চাল কেন কম নিব। আমাদের ১০ কেজি করে চাল বুঝিয়ে দিক। চেয়ারম্যান কাউকে ৮ কেজি, আবার কাউকে সাড়ে ৮ কেজি, ৯ কেজি করে চাল দিচ্ছে।
চাল পাওয়া আরজেনা বেগম বলেন, ঈদ উপলক্ষে চেয়ারম্যান চাল দিলো। সেই চাল নিয়ে গিয়ে মেপে দেখি সাড়ে ৮ কেজি হয়েছে। চাল নিয়ে আসতে আসতে ওখানেই দেড় কেজি চাল নেই। চাল কম হলে আমরা গরিব মানুষ খাব কীভাবে, চলব কীভাবে।
এবিষয়ে জানতে চাইলে খট্টামাধবপাড়া ইউপি চেয়ারম্যান কাওসার রহমান বলেন, পবিত্র ঈদুল ফিতর উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে আমার ইউনিয়নে ৪ হাজার মানুষের মাঝে বিতরণের জন্য ৪০ মেট্রিকটন চাল বরাদ্দ পেয়েছি। সেই অনুযায়ী চাল বিতরণ করা হচ্ছে। তবে আমার এখানে চাল কম দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। আর ৮ কেজি সাড়ে ৮ কেজি হওয়ার সুযোগ নেই। যেহেতু ৪ হাজার মানুষকে চাল বিতরণ করা হচ্ছে। ঈদ চলে আসছে। যার কারণে আমাদের হাতে সময় কম। সেই কারণে শুক্রবার ছুটির দিনেও চাল বিতরণ কার্যক্রম চালাচ্ছি। হয়তোবা দু-একশো গ্রাম চাল কমবেশি থাকতে পারে।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মোহাম্মদ নূর-এ আলম বলেন, ঈদ উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর উপহার হিসেবে প্রত্যেককে ১০ কেজি করে চাল দিবে এটাই নিয়ম। কিন্তু কেন চাল কম দেওয়া হচ্ছে, বিষয়টি তদন্ত করে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।